মা তাত কোপং কার্ষীস্ত্বমেষ ধর্মঃ সনাতনঃ।
অনাবৃতা হি সর্বেষাং বর্ণানামঙ্গনা ভুবি। ঐ ১২২, ১৪
তখন শ্বেতকেতু বলিলেন, এই ধর্ম সনাতন হইলেও ভালো ধর্ম নহে; আজ হইতে ইহা চলিবে না; লোকে আপন আপন পত্নী ছাড়া অন্যত্র গমন করা অধর্ম হইবে (ঐ ১২২. ১৭-২০)।
এই ভাবে শ্বেতকেতু সনাতনধর্ম নিষেধ করিয়া বলপূর্বক এই মর্যাদা স্থাপন করিলেন—
মর্যাদা স্থাপিতা বলাৎ। ঐ ২০
শ্বেতকেতুর কথা পূর্বেও একটু বলা হইয়াছে।
বনপর্বেও দেখা যায়, নরনারী সকলেই অনাবৃত; ইহাই স্বাভাবিক ধর্ম; বিবাহাদি বিধি হইল এই স্বাভাবিক নিয়মের বিকারমাত্র—
অনাবৃতাঃ স্ত্রিয়ঃ সর্বা নরাশ্চ বরবর্ণিনি।
স্বভাব এষ লোকানাং বিকারোঽন্য ইতি স্মৃতঃ। বন ৩০৬. ১৫
হয়ত এই কথাতে এখনকার দিনের যৌনবিজ্ঞানের পণ্ডিতগণ খুব খুশি হইবেন।
দীর্ঘতমা ঋষি ছিলেন বৃহস্পতির পুত্র। তিনি গোরুর মত নারীদের সঙ্গে যথেচ্ছ বিহার করায় তাঁহার স্ত্রী বিরক্ত হন। দীর্ঘতমা তাহাতে ক্রুদ্ধ হইলেন। ঋষিপত্নী বলিলেন, তোমার সেবা না করিয়া পত্যন্তর গ্রহণ করিব (আদি ১০৪. ২২-৩৪)। দীর্ঘতমাও ক্রোধ করিয়া বলিলেন, আজ হইতে আমিও নিয়ম করিলাম যে নারী যাবজ্জীবন এক পতি লইয়াই থাকিবে—
অদ্য প্রভৃতি মর্যাদা ময়া লোকে প্রতিষ্ঠিতা।
এক এব পতির্নার্য্যা যাবজ্জীবং পরায়ণম্।
মৃতে জীবতি বা তস্মিন্ নাপরং প্রাপ্নুয়ান্নরম্। আদি ১০৪, ৩৪-৩৫
শ্বেতকেতুর দ্বারা মর্যাদা স্থাপিত হইল বটে কিন্তু দীর্ঘকাল পর্যন্ত সমাজে তাহা স্বীকৃত বা পালিত হয় নাই। নারীরা ঋতুস্নাতা হইয়া স্বামীর সহিত সঙ্গতা হইলেও অন্য সময়ে যে-কোনো পুরুষের সঙ্গে বিহার করিতে পারিতেন। ধর্মবিদেরাও এই কথাই বলিতেন—
ঋতাবৃতৌ রাজপুত্রি স্ত্রিয়া ভর্তা পতিব্রতে।
নাতিবর্তব্য বা ইত্যেবং ধর্মং ধর্মবিদো বিদুঃ।
শেষেষ্বন্যেষু কালেষু স্বাতন্ত্র্যং স্ত্রী কিলার্হতি। আদি ১২২, ২৫-২৬