পারে (ঐ পৃ ১৫৪)। তৃতীয় অধিকরণের তৃতীয় এবং চতুর্থ অধ্যায়ে অর্থশাস্ত্র ছেলে ও মেয়ের পরস্পর সম্বন্ধের মধ্যে যতগুলি অপরাধ আইনের চক্ষে দণ্ডনীয়, তাহা দেখাইয়াছেন।
অর্থশাস্ত্র বলেন, বিবাহ অনুষ্ঠান না হইয়া থাকিলে বিবাহ সম্পর্কীয় আইন খাটিবে না। এবং মেয়ের বারো বৎসর ও ছেলের ষোলো বৎসর হইয়া থাকিলেও বিবাহ না হইয়া থাকিলে তাহারা নাবালকমাত্র। এইসব বিষয়ে তাহাদের কোনো কথা চলিবে না (ঐ ৩. ২. পৃ ১৫১)। অর্থশাস্ত্রের মতে আট প্রকার বিবাহের মধ্যে কন্যাকে অলংকৃত করিয়া দান করিলে তাহা ব্রাহ্মবিবাহ (ঐ)। সহধর্মচর্যা হইল প্রাজাপত্য বিবাহ (ঐ)। গো-মিথুন গ্রহণ করিয়া কন্যাদান হইল আর্য (ঐ)। যজ্ঞে ঋত্বিক, পুরোহিতকে কন্যাদান হইল দৈব (ঐ)। স্ত্রীপুরুষের অনুরাগবশতঃ পরস্পরের মিলন হইল গান্ধর্ব (ঐ)। পণ লইয়া কন্যাদান হইল আসুর (ঐ)। বলপূর্বক কন্যা হরণ করিয়া লইয়া যাওয়া হইল রাক্ষস (ঐ)। এবং সুপ্তা প্রমত্তা কন্যা লইয়া যাওয়া হইল পৈশাচ (ঐ)। ইহার মধ্যে প্রথম চারিপ্রকার বিবাহ হইল সর্বসম্মত ও ধর্মসংগত। ইহাতেও পিতার সম্মতি চাই—
পিতৃপ্রমাণাশ্চত্বারঃ পূর্বে ধর্মাঃ। ঐ
বাকি চাররকম বিবাহে পিতামাতা উভয়ের সম্মতি চাই—
মাতৃপিতৃপ্রমাণাঃ শেষাঃ। ঐ পৃঃ ১৫২
ইহার পরই অর্থশাস্ত্র স্ত্রীধনের কথা বলেন, তাহা পরে আলোচিত হইবে।
বিবাহবন্ধন স্বামী-স্ত্রী উভয়ের পক্ষেই মান্য, একথা সত্য। তবু যদি দেখা যায় স্বামী দুশ্চরিত্র, পতিত, স্ত্রীকে বধ করিতে উদ্যত, রাজার বিরুদ্ধে অপরাধী, ক্লীব বা বিদেশপ্রস্থিত হয় তবে কন্যাকে আবার বিবাহের অধিকার দিতে হইবে (ঐ ৫৯, পৃ ১৫৪)। এখানে রাজা মানে দেশ বা রাষ্ট্র। কারণ তখন ভালোমন্দ কল্যাণ-অকল্যাণের প্রত্যক্ষ বিগ্রহই ছিলেন রাজা।
যদি পতি হ্রস্বপ্রবাসী হয় অর্থাৎ অল্পকালের জন্য বিদেশ যাত্রা করিয়াও না ফেরেন তবে শূদ্র বৈশ্য ক্ষত্রিয় ব্রাহ্মণের ভার্যাগণ প্রজাতা অর্থাৎ সন্তানবতী না হইয়া থাকিলে বৎসরেক কাল প্রতীক্ষা করিবেন। প্রজাতা অর্থাৎ সন্তানবতীগণ সম্বৎসরের অধিককাল প্রতীক্ষা করিবেন—