পাতা:বংশ-পরিচয় (একাদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

MOV ংশ-পরিচয় সুন্দরী এবং আদর্শ মহিলা ছিলেন। তিনি তাঁহার মধুর স্বভাব, শান্ত প্রকৃতি, পরহিতৈষণা, শিষ্ট ব্যবহার এবং করুণা ও সহানুভূতি দ্বারা সকলের শ্রদ্ধা ও অনুরাগ আকর্ষণ করিয়াছিলেন এবং এইসকল গুণে তিনি মহারাজেরও প্রীতির পাত্রী হইয়াছিলেন । মহারাণী লক্ষীকুমারীর মৃত্যু এই বিবাহে তরুণ মহারাজা শ্ৰীরামচন্দ্ৰ অত্যন্ত সুখী হইয়াছিলেন, কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই সুখ অতি অল্পকালমাত্ৰ স্থায়ী হইয়াছিল। মহারাণী লক্ষ্মীকুমারী দেবীর গর্ভে তিনটী সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমটী কন্যা-প্ৰস্ফুট গোলাপের মত সুন্দরী ; ইহাকে দেখিয়া সকলেই আনন্দিত হইতেন ; ১৮৯৭ খ্ৰীষ্টাব্দে এই কন্যার জন্ম হয়। দ্বিতীয় সন্তান-ই-১৮৯৯ খৃষ্টাব্দের ৭ই আগষ্ট তারিখে ভূমিষ্ঠ হয়েন ; ইহার নাম টকাইত পূৰ্ণচন্দ্ৰ ; ইনি জন্মগ্রহণ করিলে রাজ্যের ভাবী উত্তরাধিকারী বলিয়া যথেষ্ট উৎসব ও সমারোহ হইয়াছিল । তৃতীয় সন্তান-ছোটরায় প্ৰতাপচন্দ্র, ১৯০২ খৃষ্টাব্দে ইনি জন্মগ্রহণ করেন। ইহার স্বাস্থ্য ভাল ছিল না এবং শরীর অত্যন্ত দুর্বল ছিল। ভাগ্যও ইহার নিতান্ত মন্দকারণ, অতি শিশু অবস্থায় মাতৃদেবী মহারাণী লক্ষ্মীকুমারী ১৯০২ খ্ৰীষ্টাব্দের মার্চ মাসে পরলোকগমন করেন । যে দুরন্ত বসন্তরোগে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ ও তদীয় মহিষী কালকবলে পতিত হইয়াছিলেন, সেই কাল বসন্তরোগে মহারাণী লক্ষ্মীকুমারীরও মৃত্যু হয়। ইহার মৃত্যুতে মহারাজা একেবারে ভাঙ্গিয়া পড়েন। এই শোকের আঘাত সামলাইয়া উঠিতে র্তাহার বহুদিন লাগিয়াছিল। মহারাণীর মৃত্যুর পর মহারাজা সকল প্ৰকার ভোগ ও বিলাসিত বর্জন করিয়াছিলেন ; মৃগয়া ত্যাগ করিয়াছিলেন ; মাংস এবং ভোজন-বিলাস পরিহার করিয়াছিলেন। খুব সাদাসিদা আহার তিনি করিতেন এবং অধিকাংশ সময় নির্জনে থাকিতেন ।