পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১২ বঙ্কিম-প্রসঙ্গ করিতেছেন। আমাদিগকে পাইয়া তাহার আনন্দের সীমা রহিল না । হাসিতে হাসিতে বলিলেন,—“আপনার, যে সত্য সত্যই আসিয়াছেন । আমি মনে করিয়াছিলাম, আসিবেন না। রবিবার উকিলদের বাড়ীতে মক্কেলের ভিড় লাগে। মক্কেল পাইলে আপনাদের ত আর কিছুই মনে থাকে না।” কাটালপাড়ার বাটীতে অনেকবার গিয়াছিলাম, একবারের কথা বলি । নবমী পূজার দিন প্রাতে গেলাম। সঞ্জাববাবু, বঙ্কিমবাবু প্রভৃতি পূজার দালানে বসিয়া আছেন। দেবীকে প্রণাম করিয়া বসিতে যাইতেছি, বঙ্কিমবাবু বলিলেন, —তা, হবে না, রাধানাথকে প্ৰণাম করিয়া আসিয়া বস। দেবীর প্রতিমার দক্ষিণ পাশ্বের্ণ সুন্দর বিগ্রহ দেখিলাম। বঙ্কিমচন্দ্র এই বিগ্রহের কথা কহিতে বড় ভালবাসিতেন, বলিতেন,—উনি আমাদের বংশের সৰ্ব্বপ্রকার মঙ্গল বিধান করেন, সমস্ত দুৰ্গতি নাশ করেন। আমাদের সকল কথা শুনেন, সব আবদার রক্ষা করেন, রোগে শোকে, বিপদে আমরা উহারই মুখ চাছিয়া থাকি, উহাকেই ধরি, উনি আমাদিগকে বড় ভালবাসেন।” এমন সরলভাবে এমন । ভক্তিভরে রাধানাথের কথা কহিতেন যে শুনিতে শুনিতে । আমার চক্ষে জল আতি। একবার বঙ্কিমবাবুর স্ত্রীর একখানি অলঙ্কার চাহিয়া পাঠাই । বঙ্কিমবাবু লিখিয়াছিলেন —“অলঙ্কারখানি এখন পাইবে না। আমার আরোগ্য কামনা করিয়া আমার স্ত্রী উহ। রাধানাথের নিকট বন্ধক রাখিয়াছিলেন, এখনও উদ্ধার হয় নাই ।”