পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭২ বঙ্কিম-প্রসঙ্গ বঙ্কিমবাবু সৌন্দর্ঘ্যের উপাসক ছিলেন, এখন আবার লোকশিক্ষায় প্রবৃত্ত হইলেন। তখন তাহার সৌন্দৰ্য্য-সৃষ্টি লোকশিক্ষার দাসী হইল, প্রথম পক্ষের স্ত্রী দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর দাসী হইয়া গেল, বঙ্কিমবাবুও দাস হইয়া গেলেন। তিনি বুঝিতে পারিলেন না, অথচ তাহার একটি ঘোর পরিবর্তন হইয় গেল। কিন্তু তিনি শিক্ষা দিবেন কি ? তাহার ভক্ত বলিয়াছেন— “রামানন্দ স্বামী যে ব্রতে জীবন উৎসর্গ করিয়াছেন, তাহার নাম পরহিতব্ৰত। পীড়িত যে ধৰ্ম্মাবলম্বী হউক না কেন, তিনি তাহার উপকার করিবার জন্ত সৰ্ব্বদাই উদ্যুক্ত। তিনি নিজ জীবন পরের উপকারের জন্ত তৃণবং পরিত্যাগ করিতে কাতর হন না। নৈতিক উন্নতির রামানন্দ স্বামীই বোধ হয় পরাকাষ্ঠী। এই যে পরহিতব্ৰত—প্রথম প্রথম “বঙ্গদর্শনে”র নভেলে বঙ্কিম বাবু ইহারই প্রচার করিয়াছিলেন—যথা বিষবৃক্ষে, চন্দ্রশেখরে ।” - কিন্তু ইহাতে তিনি তৃপ্ত থাকিতে পারিলেন না। তিনি দেখিলেন—পরহিত বা ভূতদয়া বড় ফিক, জমে না। বুদ্ধদেব ভূতদয়া প্রচার করিয়াছিলেন, বেশ দিন টিকে নাই। ইউরোপে অনেকে পরহিতব্ৰত প্রচার করিয়াছিলেন, ফল ভাল হয় নাই। তাই তিনি “বঙ্গদর্শন ছাড়িয়া, যথেষ্ট বহুদৰ্শিতা লাভ করিয়া, তাহার দৃষ্টি কিছু সঙ্কোচ করিয়া লইলেন—পরহিতের বদলে দেশহিত আশ্রয় করিলেন। এত দিন তিনি দেশের সৌন্দর্য্যমাত্র দেখাইতেছিলেন, এখন সেই পুঞ্জীকৃত, রাণীকৃত সৌন্দর্ঘ্যের একমাত্রের আধার বঙ্গদেশকে ভালবাসিতে শিখাইতে লাগিলেন, ভালবাসিতে