পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• বিষবক্ষ ‘কি ? দই এক দিনের মধ্যে বিবাহ হইবে। তুমি আসিয়া জটিতে পরিবে ন-নচেৎ তোমাকে নিমন্ত্ৰণ করিতাম। পার যদি, তবে ফলশয্যার সময়ে আসিও। কেন না, তোমাকে দেখিতে বড় সাধ হইয়াছে।” কমলমণি পত্রের কিছই অৰ্থ বঝিতে পারিলেন না। ভাবিয়া চিন্তিয়া সতীশ বাবকে পরামর্শ জিজ্ঞাসা করিলেন। সতীশ ততক্ষণে সম্মখে একখানা বাঙ্গালা কেতাব পাইয়া তাহার কোণ খাইতেছিল, কমলমণি তাহাকে পত্ৰখানি পড়িয়া শনাইলেন—জিজ্ঞাসা করিলেন, “এর মানে কি, বল দেখি, সত্যু বাবা ?” সন্তু বাবা রস বঝিলেন, মাতার হাতের উপর ভর দিয়া দাঁড়াইয়া উঠিয়া কমলমণির নাসিকা-ভোজনে প্রবত্ত হইলেন। সতরাং কমলমণি সােয্যমখীকে ভুলিয়া গেলেন। সন্তু বাবার নাসিকা-ভোজন সমাপত হইলে, কমলমণি আবার সােয্যমখীর পত্র পড়িতে লাগিলেন। মনে মনে বলিলেন, “এ সত্যু বাবার কম নয়, এ আমার সেই মন্ত্রীটি নুফুল হইবে না। মন্ত্রীর আপিস কি ফরায় না ? সত্যু বােব আজ এস আমরা রাগ করিয়া יין b>ן חQ: যথাসময়ে মন্ত্রিবর শ্ৰীশচন্দ্র আপিস হইতে আসিয়া ধরাচড়া ছাড়িলেন। কমলমণি তাঁহাকে জল খাওয়াইয়া, শেষুে সতীশকে লইয়া রাগ করিয়া গিয়া খাটের উপর শাইলেন। শ্ৰীশচন্দ্র রাগ দেখিয়া হাসিতে হাসিতে হাক্কা লইয়া দরে কোঁচের উপর গিয়া বসিলেন। হাক্কাকে সাক্ষী করিয়া বলিলেন, “হে হ'ক্কো! তুমি পেটে ধর গঙ্গাজল, মাথায় ধর আগমন! তুমি সাক্ষী, যারা আমার উপর রাগ করেছে, তারা এখনি আমার সঙেগ কথা কবে-কবে-কবে । নহিলে আমি তোমার মাথায় আগােন দিয়া এইখানে বসিয়া দশ ছিলিম তামাক পোড়াব!” শনিয়া, কমলমণি উঠিয়া বসিয়া, মধর কোপে, নীলোৎপলতুল্য চক্ষ ঘরাইয়া বলিলেন, “আর দশ ছিলিম তামাক মানে না! এক ছিলিমের টানের জবালায় আমি একটি কথা কইতে পাই না—আবার দশ ছিলিম তামাক খায়—আমি আর কি ভেসে এয়েছি!” এই বলিয়া শয্যাত্যাগ করিয়া উঠিলেন, এবং হাক্কা হইতে ছিলিম তুলিয়া লইয়া সাগিনক তামাক-ঠাকুরকে বিসৰ্জন দিলেন। এই রাপে কমলমণির দািজজয় মান ভঞ্জন হইলে, তিনি মানের কারণের পরিচয় দিয়া সােয্যমখীর পত্ৰ পড়িতে দিলেন এবং বলিলেন, “ইহার অর্থ করিয়া দাও, তা নাহিলে আজ মন্ত্রিবারের মাহিয়ানা কাটিব ।” শ্ৰীশ । বরং আগাম মাহিয়ানা দাও—অৰ্থ করিব। কমলমণি শ্ৰীশচন্দ্রের মাখের কাছে মািখ আনিলেন, শ্ৰীশচন্দ্ৰ মাহিয়ানা আদায় করিলেন। তখন পত্ৰ পড়িয়া বলিলেন, “এটা তামাসা !” কম। কোনটা তামাসা ? তোমার কথাটা, না পত্ৰখানা ? শ্ৰীশ। পত্ৰখানা। কম। আজি মন্ত্রিমশাইকে ডিশচার্জ করিব। ঘটে এ বন্ধিটকুও নাই ? মেয়েমানষে কি এমন তামাসা মাখে আনিতে পারে ? শ্ৰীশ। তবে যা তামাসা কোরে পারে না, তা সত্য সত্য পারে ? কম। প্ৰাণের দায়ে পারে। আমার বোধ হয়, এ সত্য। শ্ৰীশ । সে কি ? সত্য, সত্য ? কম। মিথ্যা বলি তা কমলমণির মাথা খাই। শ্ৰীশচন্দ্র কমলের গাল টিপিয়া দিলেন। কমল বলিলেন, “আচ্ছা, মিথ্যা বলি ত কমলমণির সতীনের মাথা খাই ।” শ্ৰীশ। তা হলে কেবল উপবাস করিতে হইবে। কম। ভাল, কার মাথা নাই খেলেম—এখন বিধাতা বঝি সােয্যমখীর মাথা খায়। দাদা বঝি জোর করে বিয়ে করতেছে ? শ্ৰীশচন্দ্র বিমনা হইলেন। বলিলেন, “আমি কিছর বাঝিতে পারিতেছি না। নগেন্দ্রকে পত্ৰ লিখিব ? কি বল ?” কমলমণি তাহাতে সক্ষমত হইলেন। শ্ৰীশচন্দ্র ব্যঙ্গ করিয়া পত্র লিখিলেন। নগেন্দ্র প্রত্যুত্তরে যাহা লিখিলেন, তাহা এই:- “ভাই! আমাকে ঘণা করিও না—অথবা সে ভিক্ষাতেই বা কাজ কি ? ঘণাস্যপদকে অবশ্য ) OC RO