পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दक ज्ञष्बाबव्ी যে মনসবদার পথ দেখিয়া আসিয়াছিল—বখ্যাত খাঁ—সে বলিল যে, “যে মোগল আমাকে প্রথমেই এই পথের সন্ধান দেয়, তাহাকে আমি পৰ্ব্ববতের উপরে পাঠাইয়া দিয়াছি। সে যদি রাজপত সেনা দেখিতে পায়, তবে আমাকে সঙ্কেত করিবে।” ঔরঙ্গজেব জিজ্ঞাসা করিলেন, “সে কি আমার সিপাহী ?” বখতি খাঁ। না, সে একজন সওদাগর। উদয়পরে শাল বেচিতে গিয়াছিল। এখন শিবিরে বেচিতে আসিয়াছিল। ঔরঙগ। ভাল, সেই পথেই তবে ফৌজ লইয়া যাও। তখন বাদশাহী হকুমে ফৌজ ফিরিল। ফিরিল--কেন না, কিছর পথ ফিরিয়া আসিয়া তবে রন্ধ্রুপথে প্রবেশ করিতে হয়। ইহাতেও বিশেষ বিপদ-তবে জাল নিবন্ধ বহৎ রোহিত আর কোন দিকে যায় ? ফেরােপ পারমপয্যের সহিত মোগলসেনা আসিয়াছিল—তাহা আর রক্ষিত হইতে পারিল না। যে ভাগ আগে ছিল, তাহা পিছে পড়িল ; যাহা পিছনে ছিল, তাহা আগে চলিল। সেনার তৃতীয় ভাগ আগে আগে চলিল। বাদশাহ হকুম দিলেন যে, তাম্ব ও মোেট-ঘাট ও বাজে লোক সকল এক্ষণে উদয়সাগরের পথে যাক। —পরে সেনার পশ্চাতে তাহারা আসিবে। তাহাই হইল। ঔরঙগজেব নিজে, পদাতি ও ছোট কামান ও গোলন্দাজ সেনা লইয়া রন্ধ্রুপথে চলিলেন। আগে আগে বখত খাঁ । দেখিয়া রাজসিংহ, সিংহের মত লাফ দিয়া, পববত হইতে অবতরণ করিয়া মোগল সেনার মধ্যে পড়িলেন। আমনই মোগল সেনা দিবখণড হইয়া গোল—ছরিকাঘাতে যেন ফলের মালা কাটিয়া গেল। এক ভাগ ঔরঙ্গজেবের সঙ্গে রন্ধ্রুমধ্যে প্রবিভ্ৰাট ; আর এক ভাগ, এখন পািকব পথে, কিন্তু রাজসিংহের সম্পম খে। মোগলের বিপদের উপর বিপদ এই যে, যেখানে হাতী, ঘোড়া, দোলার উপর বাদশাহের পৌরাঙ্গানাগণ, ঠিক সেইখানে, পৌরাঙ্গনাদিগের সম্পমখে, রাজসিংহ সসৈন্যে অবতীর্ণ হইলেন। দেখিয়া, যেমন চিল পড়িলে চড়াইয়ের দল কিল-কিল করিয়া উঠে, এই সসৈন্য গরীড়কে দেখিয়া রাজাবরোধের কালভূজঙগীর দল তেমনই আত্তনাদ করিয়া উঠিল। এখানে যন্ধের নামমাত্র হইল না। যে সকল আহাদীয়ান তাঁহাদের প্রহরায় নিযক্ত ছিল—তাহারা কেহই অস্ত্রসঞ্চালন করিতে পারিল না—পাছে বেগমেরা আহত হয়েনি। রাজপতেরা বিনা যাদ্ধে আহন্দী দিগকে বন্দী করিল। সমস্ত মহিষীগণ এবং তাঁহাদিগের অসংখ্য অৰ্শবারোহিণী অনাচারীবাগ, বিনা যদুদ্ধে রাজসিংহের বন্দিনী হইলেন। মাণিকলাল রাজসিংহের নিকটে নিকটে থাকেন—তিনি রাজসিংহের অতিশয় প্রিয়। মাণিকলাল আসিয়া যন্ত করে নিবেদন করিলেন, “মহারাজাধিরাজ ! এখন এই মাজারী সম্প্রদায় লইয়া কি কবা যায় ? আজ্ঞা হয় ত উদর পরিয়া দধিদগধ ভোজনের জন্য ইহাদের উদয়পরে উঠাইযা দিই।” রাজসিংহ হাসিয়া বলিলেন, “এত দই-দধ উদয়পরে নাই। শনিয়াছি, দিল্লীর মান্তর্জারীদের পেট মোটা। কেবল উদিপরীকে মহিষী চ৭9লকুমারীর কাছে পাঠাইয়া দাও। তিনি ইহার জন্য আমাকে বিশেষ করিয়া বলিয়াছেন। আর সব ঔরঙ্গজেবের ধন ঔরঙ্গজেবকে ফিরাইয়া দাও।” মাণিকলাল জোড়হাতে বলিল, “লাঠের সামগ্রী সৈনিকেরা কিছ কিছ পাইয়া থাকে।” রাজসিংহ হাঁসিতে হাসিতে বলিলেন, “তোমার কাহাকেও প্রয়োজন থাকে, গ্রহণ করিতে পাের। কিন্তু মসলমানী, হিন্দরে অসপশীয়া।” মাণিক । উহারা নাচিতে গায়িতে জানে। রাজ। নাচ-গানে মন দিলে, রাজপতি কি আর তোমাদিগের মত বীরপনা দেখাইতে পরিবে ? সব ছাড়িয়া দাও। উদিপরীকে কেবল উদয়পরে পাঠাইয়া দাও । মাণিক। এ সমদ্রমধ্যে সে রত্ন কোথায় খাজিয়া পাইব ? আমার ত চেনা নাই, যদি আজ্ঞা হয়, তবে হন মানের মত, এ গন্ধমাদন লইয়া গিয়া মহিষীর কাছে উপস্থিত করি। তিনি বাছিয়া লইবেন। যাহাকে রাখিতে হয়, রাখিবেন, বাকিগলা ছাড়িয়া দিবেন। তাহারা উদয়পরের বাজারে সরমা মিশি বেচিয়া দিনপাত করিবে। এমন সময়ে মহাগজপত্ঠ হইতে নিৰ্ম্মমলকুমারী রাজসিংহ ও মাণিকলাল উভয়কে দেখিতে পাইল। করম্যােগ উত্তোলন করিয়া সে উভয়কে প্ৰণাম করিল। দেখিয়া রাজসিংহ মাণিকলালকে Wり げbs