পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ઝરના ] জটাধারীর রোজনামচ ՖՆ-Գ জানানার বেগম সাহেব সে কাপড় বড় ভালবাসিবেন। এই যে বাবুদের ঘরে আপনি আসিয়াছেন, লক্ষ্মেী, সাসিরাম, বাণারসের মহাজনদের সঙ্গে এদের কারবার বরাবর প্রচলিত রহিয়াছে—এর লক্ষেীয়ের টুপি ও বেনারসী মুবেটার ব্যবসা করেন, পছন্দ হয় তো খরিদ করুন।” আবার নিম্নস্বরে কহিলেন “বন্দাও আপনার ঘরের লোক, মর্জি হয় তো দুই চারিট দ্রব্যের নজর দিবার অধিকার ” পরক্ষণেই প্রাঙ্গণের পূর্বদিকের কামরাতে নাজির সাহেব গজাননের সহিত একটি গালিচার উপর তাকিয়া ঠেশ দিয়া, সযত্বে হাটুদ্বয় অগ্রসর করিয়া ও তাহার তলে পদযুগল গজকাটির হ্যায় মুড়িয়া, আবার ছুটি হাত উপ্টাইয়া ফরাসের উপর ভর দিয়া, একটা সম্পূর্ণ বিপরীত প্রকৃতির লোকের ন্যায় বসিলেন—একজন ভৃত্য একটি বড় তালবৃন্ত লইয়া হেলাইতে লাগিল, বায়ু সঞ্চালন হইলে নাজির সাহেব একবার টুপিটি উঠাইলেন, দেখিলাম তাহার মস্তকের চতুষ্পার্শ্বে যেরূপ প্রচুর কেশ, মধ্যে সেরূপ নহে—ৰ্চাদিটিতে তীক্ষ ক্ষুর পরিভ্রমণে গোল শাদী জমি বাহির করিয়া দিয়াছে, বোধ হয় সেইটী দেখাইতে লজ্জিত হইয়া পাগড়ি ঈষৎ উদ্ধ করিয়াই আবার তৎক্ষণাৎ পরিলেন, কিন্তু জটাধারী তাহার ফাকা মাথা দেখিয়া লইলেন । আবার দেখি, আমাদেব চাপকাণের যে দিকে বোতাম তার বিপরীত ভাগে নাজির সাহেবের চাপকাণ আবদ্ধ। কেবল নাজির সাহেবের ও দেওয়ানজীর সহিত একটা বিষয়ে সাদৃশ্ব –চসমার ডাটি উল্ট পরান নহে। নাজির সাহেবের খানসামা র্তাহার একখানি ধুতী আনিল। দেখিলাম তাহাও কাছ বিহীন। মনে করিলাম উভয়েরই কাছা নাই বলিয়া অল্প কালের মধ্যে এত সম্প্রীতির উদয় হইল, যাহা হউক এখন উভয়ে বসিয়া কাজের কথায় প্রবৃত্ত। একট পরওয়ানা পাঠের উপক্রম করিতেছেন এমন সময় রাজকাৰ্য্যনিম্পাদক আর এক অবতারের আবির্ভাব হইল-ইনি বড় লোক, রাণীর বাজারের ডাকমুন্সি পূর্ণচন্দ্র গাঙ্গুলী। ইনি বাঙ্গাল গবর্ণমেণ্টকে মানেন না, তদধীনের কৰ্ম্মচারীদের ক্রক্ষেপ করেন না। বলেন আমরা ওদের গ্রাও ফাদার, ইণ্ডিয়া গবর্ণমেণ্ট গবর্ণব জেনারেলের কার্য্যকারক। ইনিই সেই গাঙ্গলী মহাশয় যিনি বাতার বাখারীর কলমের একপাশে ইংরেজি লিখিতেন ও অন্যদিকে ডাকঘরের থামের চূণ খসাইয়া বদনে অর্পণ করিয়া পানের ঝাল নিবারণ করিতেন। . ইনিই আবার সেই প্রবৃত্তি নিবৃত্তি জন্য ডাক্তার ইটওয়াল সাহেবের নিকট চূর্ণ খরিদের নিমিত্ত মাসিক এক মুদ্রা বেতন বৃদ্ধি পাইয়াছিলেন। ইহার প্রভুত্ব প্রতিপত্তি এক্ষণেও এ অঞ্চলে বিখ্যাত। আজ অনেকে হাকিমের কথা শুনিতেছিলেন কিন্তু নাজির সাহেবের উপরেও হাকিম আছে এই কথাটি জারি করিবার জন্য ইহার আগমন। গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয়ের পরিধানে একটি সামান্য ধুতী, তাহাতেই উদয়ের তৃতীয় অংশ বক্ষঃস্থলের কিঞ্চিৎ }