পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२०९ सल्ललेञि [ चांदर्भ ভ্রমর বাবাজি নিশ্চিত মনে করেন তিনি বড় সুরসিক—বড় সম্বক্তা— তাহার ঘ্যান ঘ্যানানিতে আমার সৰ্ব্বাঙ্গ জুড়াইয়া যাইবে। আমারই ফুল গাছের ফুলের পাপড়ি ছিড়িয়া আসিয়া আমারই কাণের কাছে ঘ্যান ঘ্যান ? আমার রাগ অসহ্য হইয়া উঠিল ; আমি তালবৃন্ত হস্তে ভ্রমরের সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলাম। তখন আমি ঘুর্ণন, বিঘুর্ণন, সংঘুর্ণন প্রভৃতি বহুবিধ বক্রগতিতে তালবৃস্তাস্ত্র সঞ্চালন করিতে লাগিলাম ; ভ্রমরও ডীন, উড্ডীন, প্রডীন, সমাডীন প্রভৃতি বহুবিধ কৌশল দেখাইতে লাগিল। আমি কমলাকান্ত চক্রবর্তী —দপ্তর মুক্তাবলীর প্রণেতা, আমি কখনই ক্ষুদ্রবীর্য নহি । কিন্তু হায় মনুষ্যবীৰ্য্য ! তুমি অতি অসার! তুমি চিবদিন মনুষ্যকে প্রতারিত করিয়া শেষ আপন অসারতা প্রমাণীকৃত কর । তুমি জামার ক্ষেত্রে হানিবলকে, পলটােবার ক্ষেত্রে চার্লসকে, ওয়াটলুর ক্ষেত্রে নেপোলিয়ানকে, এবং আজি এই ভ্রমর-সমরে কমলাকান্তকে বঞ্চিত করিলে। আমি যত পাখা ঘুৰাইয়া বায়ু স্মৃষ্টি করিয়া ভ্রমরকে উড়াইতে লাগিলাম ততই সে হ্রাত্মা ঘুবিয়া ঘুরিয়া আমার মাথামুও বেড়িয়া বেড়িয়া চো বেঁা করিতে লাগিল । কখনও সে আমার বস্ত্রমধ্যে লুক্কায়িত হইয়া, মেঘের আড়াল হইতে ইন্দ্ৰজিতের ন্যায় রণ করিতে লাগিল, কখনও কুম্ভকৰ্ণ নিপাতী রামসৈন্তের ন্যায় আমার বগলের নীচে দিয়া ছুটিয়া বাহির হইতে লাগিল ; কখনও স্যাম্পসনের ন্যায় শিরোরূহমধ্যে আমার বীৰ্য্য সংন্যস্ত মনে করিয়া, অামাব নারদ-নিন্দিত কুঞ্চিতকেশদাম মধ্যে প্রবেশ করিয়া ভেরা বাজাইতে লাগিল । তখন দংশনভয়ে অস্থিৰ হইয়া আমি রণে ভঙ্গ দিলাম। ভ্রমর সঙ্গে সঙ্গে ছুটিল । আমি সেই সময়ে চৌকাট পায়ে বাধিয়া—পপাত ধরণীতলে ! এই সংসারসমরে মহারথা ঐকমলাকান্ত চক্ৰবৰ্ত্তী—যিনি দারিদ্র্য, চিরকৌমার এবং অহিফেণ প্রভৃতির দ্বারাও কখন পরাজিত হয়েন নাই—তায় ! তিনি এই ক্ষুদ্র পতঙ্গ কর্তৃক পরাজিত হইলেন। তখন ধূল্যবলুষ্ঠিত শরীরে দ্বিরেফরাজের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতে লাগিলাম। যুক্ত করে বলিলাম “হে দ্বিরেফসত্তম ! কোন অপরাধে দুঃখী ব্রাহ্মণ তোমার নিকট অপরাধী যে তুমি তাঙ্গার লেখা পড়ার ব্যাঘাত করিতে আসিয়াছ ? দেখ, আমি এই বঙ্গদর্শনে পত্র লিখিতে বসিয়াঠি ---পত্র লিখিলে আফিঙ্গ আসিবে—তুমি কেন ঘ্যান ঘ্যান করিয়া তাঙ্গার বিশ্ন কর " আমি প্রাতে একখানি বাঙ্গালা নাটক পড়িতেছিলাম—তখন অকস্মাৎ সেই নাটকীয় রাগগ্রস্ত হইয়া বলিতে লাগিলাম—“হে ভৃঙ্গ ! হে অনঙ্গরঙ্গ তরঙ্গবিক্ষেপকারিন হে হর্দান্ত পাষণ্ডভণ্ডচিত্তলগুভকারিন হে উষ্ঠান বিহারিন—কেন তুমি ঘ্যান