পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

કરીન્દ્ર ] r. রাজসিংহ । - Հ«* কাহাকে না দেখিয়া রাণা অবশিষ্ট সৈন্য সহিত অবশ্ব উদয়পুর যাত্রা করিয়াছেন বিবেচনা করিয়া তাহারাও র্তাহার অনুসন্ধানে সেই পথে চলিল। পথিমধ্যে রাজসিংহের সহিত সাক্ষাৎ হইল। মাণিকলালও আসিয়া জুটিল । সকলে একত্রে উদয়পুরে চলিলেন । এ দিকে মোগলসেনাপতি বিষম বিভ্রাটে পড়িলেন। রণে তিনি পরাজিত হইয়াছেন—বাদশাহের ভাবী মহিষী ৰ্তাহার হস্ত হইতে রাজপুতে কাড়িয়া লইয়াছে ! কি বলিয়া তিনি দিল্লীতে মুখ দেখাইবেন ? বাদশাহকে কি উত্তর দিবেন ? বাদশাহের নিকট লঘুদণ্ডের সম্ভাবনাই বা কি ? সৈন্যের অধিকাংশই হত হইয়াছে—যাহা জীবিত আছে তাহারা কে কোথায় পলাইয়া গিয়াছে তাহার কোন ঠিকানাই নাই । তিনি মবারককে ডাকিয়া পরামর্শ জিজ্ঞাসা করিলেন । মবারকের পরামর্শে এক প্রান্তরমধ্যে নিশান পুতিয়া ভেরী বাজাইতে আজ্ঞা করিলেন । দুইজনে সন্ধ্যা পর্যান্ত তথায় অবস্থিতি করিতে লাগিলেন । মোগল সেনাগণ এ দিক ওদিক পলাইয়াছিল – যুদ্ধ ক্ষাস্ত হইয়াছে বুঝিয় তাহারা ক্রমে ক্রমে আসিয়া নিশানের কাছে জুটিল। তখন সেই ভগ্নসেনা লইয়া সেই প্রান্তরে শিবির সংস্থাপন করিয়া হাসানআলি রাত্রিযাপন করিতে লাগিলেন । সন্ধার পর একাকী তাম্বুমধ্যে বসিয়া হাসানআলিখা গভীর চিন্তা করিতে লাগিলেন—কি উপায়ে বাদশাহের কাছে মান ও প্রাণ রক্ষা হইবে ? শেষ তাহার উপায় স্থির করিয়া আপনার প্রিয়পাত্র হামিদখাকে ডাকিবা স্বীয় অভিপ্রায় বুঝাইয়া দিলেন । হামিদ সেলাম করিয়া বিদায় হইল । উনবিংশ পরিচ্ছেদ এখন আবদুলহামিদও ভাবিতে জানে। তাহারও একটা ছোট তাম্বু ছিল— সেখানে সে আসিয়া কুরশীর উপর বসিয়া হুঙ্কায় অম্বুরী তামাকু চড়াইল । চারি পাচ জন পারিষদ জুটিয়া গেল। সকলে মিলিয়া রাজপুতগণের ধূৰ্ত্ততা ও ভীরুতার বিশেষ নিন্দা, এবং আপনাদিগের আসাধারণ বীৰত্বের বিশেষ প্রশংসা করিতে লাগিলেন। তাহারা দাড়ি চুমরাইয়া, ছেপ ফেলিতে ফেলিতে স্থির করিলেন যে, র্তাহার একটা ভারি রণজয় করিয়াছেন, এবং রাজপুতেরা মূষিক তুলা পলায়ন করিয়াছে—কোনক্রমে রাজকুমারীকে চুরি করিয়া লইয়া গিয়াছে মাত্র। বিশেষ শিবির মধ্যে গোটাকত বড় বড় বকরি ও আরও বড় বড় চতুষ্পদ ও পক্ষবিশিষ্ট দ্বিপদের শুভাগমন হইয়াছে ও শুভ জবাইয়ের উদ্যোগ হইতেছে, ইতি সম্বাদ আসিয়া অন্ত রাত্রে সমাংস খিচুড়া ভোজনের বিশেষ প্রত্যাশা সকলেরই চিত্তমধ্যে