পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৮e ] काव्रणंबांश७ श्रह्टेवांश ২৭১ নিন্দ করিয়া বেড়াও ? তাহা যদি না কর, তবে তোমার যে প্রতিবাসী চৌর্য্যবৃত্তিপ্রবৃত্ত হইয়াছে, তাহার কেন নিন্দ করিতেছ ? চৌর্যবৃত্তি দ্বারা সমাজের যত অনিষ্ট সংঘটিত হয়, সংক্রামক বসন্তরোগে কি তদপেক্ষা কিছু অল্প অনিষ্ট হয় ? আর বসন্ত ও কুষ্ঠরোগ যেমন নিয়মের ফল, চৌর্য্যবৃত্তিও কি সেইরূপ নহে ? সেই জন্যই বলিতেছিলাম যে অদৃষ্টবাদে বা কারণবাদে দৃঢ়বিশ্বাস হইলে যে ভাবে এখন জনসমাজে নিন্দ প্রশংসা চলিতেছে সে ভাবে কখনই চলিতে পারে না। চৌর, প্রতারক, নরহস্ত প্রভৃতি লোকের কথা দূরে থাকুক, এখন জনসমাজের যে প্রকার অবস্থা তাহাতে যে অশেষ যন্ত্রণাপ্রপীড়িত জীর্ণদেহ অক্ষম দরিদ্র উদরের জালায় অপরের অন্নমুষ্টি অপহরণ করে, তাহাকেও অন্নপানে পরিপুষ্ট পিতৃপুরুষার্জিত ধনলাভে নিশ্চিন্ত, নীতিজ্ঞেরাও আন্তরিক ঘৃণা প্রকাশ করিতে ত্রুটি করেন না। যে যুবতী বিধবা, প্রকৃতির দুনিবার উত্তেজনা অতিক্রম করিতে অক্ষম হইয়া বিপথে পদার্পণ করে, তাহাকেও যে অশীতিপর বৃদ্ধ চতুর্থ পক্ষে বিবাহ কবিয়াছেন, তিনিও অসতী বলিয়া , বৃণা করিতে সঙ্কুচিত হন না । - কারণবাদে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মিলে সহানুভূতি ও ক্ষমা যে এখনকার অপেক্ষা সহস্র গুণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইবে তদ্বিষয়ে লেশমাত্র সংশয নাই । লোকে যদি দেখে যে মানুষ অবস্থার দাসমাত্র, ব্রহ্মাণ্ড যন্ত্রের একটি অংশ মাত্র, সে নিজে স্বাধীনভাবে, কার্য্যকারণ সূত্র অতিক্রম করিয়া একটি ক্ষুদ্র কেশকেও বিচলিত করিতে পারে না, তাহা হইলে কেন আর কর্কশভাবে তাহাকে তিরস্কাৰ করিতে প্রবৃত্ত হইবে ? যে বংশখণ্ডেব আঘাতে তুমি মস্তকে বেদন পাও তাহাকে কি তুমি তিরস্কার করিতে চাও? বালক ভূমিতলে পতিত হইলে রাগ করিয়া ভূমিকে আঘাত করে, কেন না সে মনে করে যে ভূমি চৈতন্যবিশিষ্ট পদার্থ ও সে তাহাকে স্বাধীনভাবে আঘাত করিল। কিন্তু যখনই বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বুঝিতে পারে যে ভূমি চৈতন্যবিশিষ্ট ও স্বাধীন নহে, তখন আর পতিত হইলে সে ভূমির উপর রাগ করিবে না। মনুষ্য সম্বন্ধেও সেইরূপ । যখন লোকে বুঝিতে পারিল যে প্রত্যেক মামুষের সহিত মন কাৰ্য্যকারণ সূত্রে বন্ধ, তখন আর কাহারও দোষের জন্য তাহাকে কেহ ঘৃণা বা তিরস্কার করিতে যাইবে না। * এস্থলে কেহ জিজ্ঞাসা করিতে পারেন যে তবে রাজনৈতিক ও সামাজিক শাসন একেবারে উঠিয়া যাইবে স্বাধীনতা নাই বলিয়া কি চৌর ও নরহস্তাকে রাজা শাস্তি দিবেন না ? কেহ কোন তুষ্কাৰ্য্য করিলে কি সমাজ তাহার শাসন করিবে না ? এবং তাহা হইলে সংসার হইতে শান্তি ও শৃঙ্খলা এককালীন কি তিরোহিত হইয়া যাইবে না ?