পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»२ve ] কারণবাদ ও অদৃষ্টবাদ શ૧છે তাহাদিগের মধ্যে বাস্তবিক সঙ্গতি থাকাও অসম্ভব নহে। সামঞ্জস্ত করিতে পারিতেছি না বলিয়া যে, দুটি আপত্তির বিরুদ্ধ মতের মধ্যে একটিকে পরিত্যাগ করিতে হইবে ইহা আমরা স্বীকার করি না । কিন্তু কারণবাদীরা বলিবেন যে, বাস্তবিক এ স্থলে সে প্রকার অসামঞ্জস্তের বিষয় কিছুই নাই। কারণবাদ হইতে মানবচরিত্র সম্বন্ধে কোন অশুভ ফল উৎপন্ন হয় না। আমরা বলি হয়। একটি দৃষ্টান্ত গ্রহণ কর । একজন কারণবাদী দেখিলেন যে, তাহার তরুণবয়স্ক পুত্র বিদ্যাশিক্ষায় অনাবিষ্ট হইয়া দিন দিন অধঃপাতে যাইতেছে । তিনি অত্যন্ত দুঃখিত ও বিরক্ত হইয়া পুত্রকে তিরস্কার ও উপদেশ করিতে প্রবৃত্ত হইলেন । পুত্র পিতাকে বলিল আপনি কেন আমাকে তিরস্কার করিতেছেন ? আপনি ত জানেন যে সকলই কাৰ্য্যকারণ শৃঙ্খলে বদ্ধ। আমি নিজে স্বাধীনভাবে কিছুই করিতে পারি না। আমার প্রত্যেক চিন্তা, ইচ্ছা, ও কাৰ্য্য এই প্রকাও ব্রহ্মাও যন্ত্রের অংশ মাত্র। জগতের সকল ঘটনাই অখণ্ডনীয়। উপযুক্ত ভাবী দৃষ্টি থাকিলে, আমি যে মন্দ হইয়া যাইব ইহা সহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে কেহ বলিযা দিতে পারিত। পিতা বলিলেন, কারণবাদ সত্য বলিয়াই আমি তোমাকে উপদেশ দিতেছি যে, উপদেশে তোমার মন পরিবর্তিত হইবে । পুত্র বলিল, আপনি উপদেশ দিন, কিন্তু হয়ত ইহাই অনাদিকাল হইতে স্থির হইয়া রহিয়াছে যে, আপনি কলের ন্যায় আমাকে তিরস্কার করিবেন, এবং আমিও আপনার তিরস্কার কলের স্তায় অগ্রাহ করিয়া মন্দ হইয়া যাইব । কাৰ্য্যকারণ শৃঙ্খলে যখন ভূত ভবিষ্যৎ বদ্ধ, তখন ভাল হইবার হয় ত ভাল হইব, মন্দ হইবার হয় ত মন্দ হইব । আর একটা দৃষ্টান্ত । ঐ যে সম্মুখে ঘড়িটা টিক টিক করিতেছে মনে কর উহার জ্ঞান আছে। ঘড়িতে তিনটায় একটা বাজিল। তুমি বিরক্ত হইয়া ঘড়িকে বলিলে, “ঘড়ি, তোমার ইহা বড় অন্যায়, মিথ্যা কথা বল কেন ?” ঘড়ি বলিল, “আমার দোষ কি ? আমি কল মাত্র। আমার স্বাধীনতা নাই ; সুতরাং অপরাধ নাই, অনুতাপও নাই ।” বাস্তবিক ঘড়ি তিনটার সময় একটা বাজার জন্য আপনাকে অপরাধী মনে করিতে পারে না ; এবং অনুতপ্ত হইয়া আক্ষেপ করিতেও পারে না “হায় ! হায়! আমি কি করিলাম ! আমি মহা পাপী ।” * মমুস্থ্যেরও যদি দৃঢ় বিশ্বাস হয় যে সে জ্ঞানবিশিষ্ট কল মাত্র তবে সে কখনই অনুতাপ করিতে পারে না। করা অসম্ভব। কেহ বলিতে পারেন যে, অনেক লোক ত কারণবাদী আছেন কিন্তু তথাচ তাহারা অস্কার কৰ্ম্ম করিয়া 3Քան,