পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গঙ্গাধরশয়া ধরয়ে সপ্তদশ পরিচ্ছেদ প্রেম-বিকার নগর ও শান্তিপুরের প্রান্তরের মধ্যে বেগবতী ক্ষুদ্র নদীর কূলদ্বয় শরদাগমে আজকাল বৰ্মণীয় শ্ৰীধাবণ করিয়াছে। উভয়পার্শ্বে বিস্তৃত হরিতময় শস্তক্ষেত্রে শিখা পরিপূর্ণ শস্যদল নিরস্তব উৰ্ম্মিবৎ হেলিতেছে তুলিতেছে, চকিত মাত্র আলোকচ্ছায় শন শন করিয়া হরিতপল্লবের শষ্যোপরি বেগবান হইতেছে । মধ্যে মধ্যে প্রগাঢ়পীতবর্ণ শণকুসুম শস্তক্ষেত্রের উপর শিবোত্তোলন করিয়া শরৎবায়ুতে আন্দোলিত হইতেছে, আবার কোথাও দুই একটা ক্ষেত্রে উচ্চ উচ্চ পাটবৃক্ষশিরে তীক্ষ শণপত্র সমূহ বায়ুশ্বাসে উপ্টাইয়া পড়িতেছে। এই ক্ষেত্রের প্রাস্তরে বহুদূরবিস্তৃত নীল জলাশয়, শ্বেত রক্ত শতদলে পরিপূর্ণ, নীলবসনা মহীর স্বচ্ছ উরসে আঙ্গিয় সদৃশ দৃশ্যমান। . এই সরসীর পার্শ্বে আশুতোষ বাবুর বিস্তৃত “রমণা” কাননের পাঙ্কা প্রাচীরপরিধি দেখা যাইতেছে। রমণার কোন অংশে ফলের উদ্যান কোন অংশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বদেশী বা বিদেশজাত বহুল পুষ্পতরুতে শোভমান। আবার কোন স্থল শত শত ক্ষুদ্র ফুলের বীজভূমি ; শরৎজলে ধৌত হইয়া সকল বৃক্ষের সকল পত্রের সকল পুষ্পেরই রং নবভাব প্রাপ্ত, শরদালোকে সকলই কমনীয়। উষ্ঠানের নৈঋত কোণে একটা পুষ্করিণীর তটে একটা শ্বেত অট্টালিকা শোভমান। তাহার ছায়া স্বচ্ছ, সরোবরবক্ষে নতশিরে কঁাপিতেছে, আজ বর্ষাজলসিক্ত শারদ মেঘদল আকাশের মধ্যভাগ ত্যাগ করিয়া বহুদূরে, প্রান্তরে, বৃক্ষশিরে শয়ন করিয়া যেন সূৰ্য্যকিরণে অঙ্গ বিশুদ্ধ করিতেছে। আকাশের মধ্যদেশ নিৰ্ম্মল নীলিম স্বচ্ছ স্ফাটিকের কটাহের মত উষ্ঠানের উপরিভাগে চাপিয়া বসিয়াছে। অট্টালিকার যেদিকে পুষ্করিণী তাহার অপরদিকে সোপানশ্রেণীর পাদদেশ হইতে একটি করে