পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१७ विधक्षंबि t च्यांचिभ নিৰ্ম্মিত বিস্তৃত পথ বৃক্ষশ্রেণীর মধ্য দিয়া চলিয়া গিয়াছে ও বহুদূরে একটি স্বরম্য ঝিলের উপর কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত সেতুর সঙ্গে মিলিত হইয়াছে। সূৰ্য্যদেব আজ প্রাতেই কোমল রশ্মিতে নিৰ্ম্মল আকাশ, উচ্চ বৃক্ষের পল্লবদল, অট্টালিকার কাচদ্বার, শ্বেত শতদল, রাঙ্গা পদ্ম, রাঙ্গা জবা, শেফালিকা, কৃষ্ণচূড়া, হাস্যমুখী স্বামিসোহাগিনী সূৰ্য্যমণি, নানাজাতীয় গোলাব, নবহূৰ্ব্বাদল, জলজপুষ্প উজ্জল করিয়াছেন। বর্ষ। শেষ হইল, এমনি বোধ হইতেছে, কারণ, বায়ুতে হীমামুভব হইতেছে ও দুৰ্ব্বাদলে শিশিরবিন্দু দেখা যাইতেছে। প্রিয় ভূত্য ভৈরব আশুতোষবাবুর মাথার উপর রাঙ্গা সাটিনের ছাতাটি হেলাইয়া ধরিয়াছে, ঝালর ঝলমল করিতেছে, আশুতোষ বাৰু একটি ক্ষুদ্র কাচি হস্তে ইতস্তত: বৃক্ষপরিদর্শনে যথার্থ প্রভু শ্ৰী ধারণ করিয়া পাদচালনা করিতেছেন ও কর্তব্যবিমূঢ় মালিগণ আসিলে যে কয়েকটি কথা কহিবেন তাহা ভাবিতেছেন। ইত্যবসরে খঞ্জভীমকে বাগানের লম্বমান পথে আসিতে দেখা গেল। আমি বৈঠকখানার একটা গবাক্ষপাশ্বে দাড়াইয়া আছি । শনৈ: শনৈঃ তালে ভালে খঞ্জপদ চালাইয়া বাবুমহাশয়ের সম্মুখে আসিলেন ও নমস্কার করিলেন । “কি হে ভীমচন্দ্র” বলিয়া আশুতোষবাবু সম্ভাষণ করিয়া তাহার দিকে দৃষ্টি পাত করিয়া আবার কহিলেন “এভ চঞ্চলচিত্ত, মলিন মুখ কেন ?” খঞ্জভৗম কহিলেন, মনের কথা কখন আপনাকে কহিতে ভীত নহি । আমার ধৰ্ম্মনীতি সমুদয় মহাশয় পরিজ্ঞাত । “ব্রাহ্মধৰ্ম্ম” অবলম্বন করিয়া আমার জাতিভেদের প্রতি যে বড় ভক্তি নাই, তাহাও মহাশয় জানেন, আমি যে সুন্দরী গোপিনীতে অমুরক্ত তাহা ও মহাশয় শুনিয়া থাকিবেন । তাহার সুনীতি ও সতীত্ব রক্ষা হেতু আমি তাহাকে বিবাহ করিতে প্রস্তুত । তাহার জন্মদাতা কনৌজিয়া শুদ্ধ ব্রাহ্মণ । তাহার নিজের প্রকৃতি বিশুদ্ধ। এখন কিশোরী সুন্দরী গোপিনী সদ্যোজাত বনকুসুমের স্বরূপ পবিত্ৰ নিৰ্ম্মল । কি কহিব ! দেওয়ানজী মহাশয়ের ষড়যন্ত্রে সেই সুন্দরী গৃহত্যাগিনী হইয়া যবনপৰ্ম্মানুসারী নাজির সাহেবের হস্তে অপিত হইয়াছে । অবশেষে লোভপরায়ণ হইয়া ভ্ৰষ্ট হইবার সম্ভাবনা, অতএব আমার পরিণয়ের সম্পূর্ণ ব্যাঘাত দেখিতেছি । শেষোক্ত কথাগুলি কছিতে কছিতে খsভীমের চক্ষে জল আসিল । আশুতোষবাবু ভাবিলেন এ একপ্রকার বায়ুগ্ৰস্ত লোক । এবং ৰিয়ে পাগল শীতু ক্ষেপাকে স্মরণ করিয়া কছিলেন এ বিবাহের ফল কি ? খণ্ড ভীমৰ্চাদ উত্তর দিলেন, আমার অতি আনন্দের শুভদিন যে, মহাশয়ের মত মহুদভিপ্রায় মহাজন এ কথার জিজ্ঞাগু হইলেন ? কিন্তু এই আক্ষেপই ত নিতান্ত শোচনীয় যে, আপনার একবার দেখেন না যে, জাতিভেদে কি অনিষ্টপাত