পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

કરન્ટ ! জটাধারীর রোজমামচ ९.११ হইতেছে, পরিশুদ্ধ প্রীতির পথে কি কণ্টক রোপিত হইয়াছে—আমাদের ইংরেজি পুস্তকে একটি কথা রহিয়াছে “সুশিক্ষা হইতে সুদৃষ্টান্ত ভাল।” আমি বলি কুলীন কন্যাপেক্ষা বিধবা কন্যাবিবাহ করা ভাল, তাহা করিলে কত উন্নতি লাভ হইতে পারে —আমায় বাঙ্গাল বলুন আর যাহাই বলুন তবু আমারা সভ্য—ব্রাহ্মসমাজ করেছি, বিধবা ভাদ্রবধুর বিবাহ দিয়াছি, আমরা দেশের ভদ্র স্ত্রী পুরুষে মিলিয়া সাহেবদের সঙ্গে খানা খাইয়াছি, কতবার সভ্যতার পরিচয় দিয়াছি, এখন আবার আর একটি শ্রেয়স্কর দৃষ্টান্ত সকলকে দেখাইব । জাতিভেদ যে মন্দ তাহ কেবল মুখে না কহিয়া এক্ষণে কাৰ্য্যে তাহার অসারত দেখাইব এবং আশা করি আমার দৃষ্টান্ত দেখিয়া অপরে উৎসাহিত হইবে । কেবল রিফরমার কথায় হয় না ! আশুতোষবাবু কহিলেন, শাস্ত্রবিরুদ্ধ ও দেশাচারবিরুদ্ধ কাৰ্য্য হঠাৎ করা কি ভাল ? চরম ফল কি হইবে ? “মহাশয় এ কার্য্য প্রকৃতিবিরুদ্ধ নয়, তাহা হইলে শাস্ত্রবিরুদ্ধও নয়। শাস্ত্র, শাস্ত্র কি ? আপনি যা চালাইবেন তাই চলিবে, আপনার বাক্যই শাস্ত্র—আপনি কি বৈষ্ণবীর সহিত গরিব ব্রাহ্মণের বিবাহ দেন নাই ? আবার তাহাকে জাতিতে তুলেন নাই ? আপনি চালাইলে সকলই চলিতে পারে, মহাশয় পতিভপাবন ।” আশুতোষবাবু কহিলেন, এ কথা বিবেচনাধীন, সুন্দরীর কি বিপদ ? খঞ্চভীম নিম্নস্বরে আশুতোষবাবুকে কি কথা কহিলেন, শুনিতে পাইলাম না । কিন্তু বাক্য সমাপ্ত হইবামাত্র মুনসির নিকট কি এক আদেশ লইয়া এক হরকরা দ্রুতপদে চলিল। এদিকে তর্কালঙ্কার মহাশয় ও রঘুবীর আসিয়া উপস্থিত হইল। তর্কালঙ্কার মহাশয় কাশীর নস্ত প্রচুর রূপে প্রশস্ত নাসারন্ধে যেন জোড়া নলী বন্দুকে বারুদ ঠাশিতেছেন, মধ্যতর্জলীর অর্ধেক প্রবেশ করিতেছে অথচ নস্ত তেজোহীন হইয়াছে, বর্ষায় জলসিক্ত হইয়াছে কহিতেছেন । রঘুবীর একটি শুভ্র রেকাবিতে শুভ্র রূমাল ঝাপিয়া কি জব্য হস্তে বাবুজি মহাশয়ের পশ্চাদ্ধাগে আসিয়া সসম্মান মূৰ্ত্তি স্থিরভাবে দাড়াইল । দ্রব্যগুলি কি আমি জানিতাম, আমি স্বস্থান হইতে আরও অন্ধকার স্থানে লুকায়িত হইলাম । আশুতোষবাবু প্রথমত: তর্কালঙ্কার মহাশয়ের প্রতি দৃষ্টি করিয়া বর্ণশঙ্করের বিবাহ কতদূর শুদ্ধ বা অশুদ্ধ তাহারই বিধান জিজ্ঞাসা করিলেন । তর্কালঙ্কার তত্ত্বরে বিশুদ্ধ জাতির সহিত বিশুদ্ধ জাতির বিবাহ ভিন্ন অপর সমস্ত বিবাহ পশুবৎ বা পৈশাচিক বলিয়া ব্যাখ্যা করিতে আরম্ভ করিলেন । আশুতোৰ বাৰু ক্রুদ্ধ হইয়া কছিলেন শাস্ত্র সকল অনুসন্ধান করিলে কোন বিষয়ের বিধান প্রাপ্তি না হয় ? রঘুবীর কহিয়া উঠিল হজুর, বড় দেওয়ানি আদালতের সেরেস্তা