পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৩২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\eyట वजमर्थ्ञ [ कॉर्डिंक এক্ষণে আমাদের দেশের ঐ প্রকার অবস্থা ; অতিশয় গুরুতর সামাজিক পরিবর্তনের সময় আসিয়াছে। মুখ উন্মুক্ত করিয়া দিলে বহুকালের বন্ধ নদী যেমন স্রোতস্বতী হয়, সেইরূপ পাশ্চাত্য সভ্যতার সংস্পর্শে এই প্রাচীন স্থিরভাবাপন্ন রক্ষণশীল হিন্দুসমাজ বিচলিত হইয়াছে। লোকের চিন্তার গতি ভিন্ন দিকে চলিয়াছে ; সুতরাং কি সামাজিক, কি ধৰ্ম্মবিষয়ক, সকল বিষয়েই পরিবর্তন সংঘটিত হইতেছে। এই গুরুতর সময়ে চিন্তাশীল শিক্ষিত সম্প্রদায়ের কৰ্ত্তব্য কি ? “যাহা হয় হউক, দেশের কি হইবে না হইবে ভাবিয়া আমাদের মাথা ধরাইবার প্রয়োজন নাই” এ কথায় আমরা সায় দিতে পারি না। পরিবর্তন মাত্রেই যদি fইতকর হইত, তাহা হইলে ত কোন কথাই ছিল না । কিন্তু পরিবর্তনে ভাল হয়, মন্দও হয় । পরিবর্তনেই রোমসাম্রাজ্যের পতন, পরিবর্তনেই ভারতবর্ষে বৌদ্ধ ধর্মের বিলোপ, পরিবর্তনেই এখন মিতাচারী হিন্দুজাতির মধ্যে সুরাপানের স্রোত দিন দিন প্রবলতর হইয়া উঠিতেছে। পরিবর্তনমাত্রেই যে ভাল হয় এরূপ নহে । * যে পরিবর্তন এখন সংঘটিত হইতেছে কাহারও সাধা নাই যে, তাহার গতিরোধ করে ; এবং গতিরোধ করা প্রার্থনীয়ও নহে । কে না স্বীকার করিবে যে, সামাজিক কদাচার সকল বিদূরিত হইয় তাহার স্থানে সদাচার সকল প্রতিষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক । পরিবর্তন হইবেই, তবে যাহাতে সেই পরিবর্তন মঙ্গলের দিকে যায়, প্রত্যেক সুশিক্ষিত চিস্তাশীল ব্যক্তির এ প্রকার যত্ন করা কৰ্ত্তব্য । মঙ্গলের দিকে লইয়া যাইবার উপায় কি ? যাহা সত্য বলিয়া, ভাল বলিয়া বুঝিয়াছি, যাহাতে তাহা অন্ত লোকেও বুঝিতে পারে, এমন চেষ্টা করা । পুস্তক ও পত্রিক প্রকাশ, প্রকাশ্ব বক্তৃত, পরস্পর কথাবার্তা ও তর্ক বিতর্ক প্রভৃতি উপায় দ্বারা সাধারণতঃ সত্য প্রচার হইয়া থাকে । কিন্তু ঐ সকল করিলেই কি যথেষ্ট হইল ? কখনই না। আমি লোককে যে সত্য শিখাইতে যাইব আমাকে তাঙ্গা কার্য্যে পরিণত করিতে হইবে । মুখে বলিব, কাজে করিব না, লোকে তাঙ্কা শুনিবে কেন ? র্যাহারা মানবপ্রকৃতি ভাল করিয়া বুঝেন তাহারা সকলেই স্বীকার করিবেন যে, দৃষ্টান্ত না দেখিলে কেবল উপদেশে লোকে তাদৃশ আকৃষ্ট হয় না। অনেক সময়েই সে প্রকার উপদেশের প্রতি অবজ্ঞা ও ঘৃণা প্রকাশ করিয়া থাকে। একজন পরস্বাপহারী ব্যভিচারী পাষণ্ড ধৰ্ম্মোপদেশ দিবার জন্ত দণ্ডায়মান হইলে কে তাঙ্গর কথা শ্রদ্ধার সহিত শ্রবণ করে ?