পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8२७” बजगर्भब { পৌষ ভারতবর্ষে নানাপ্রকার ধৰ্ম্মমতের পরিবর্তন ও এককালীন ভিন্নমতস্থ লোকের অবস্থান এবং রাষ্ট্র ও সমাজবিপ্লবে পুরাতন হিন্দুকীৰ্ত্তির লোপ হইয়াছে। কোন কোন স্থলে ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধদিগের মতের বৈষম্যপ্রযুক্ত মন্দির ও দেবতাদির পরিবর্তন হইয়াছে। কোথাও মহাদেব বৌদ্ধ হইয়া বসিয়া আছেন, বা কোথাও বৌদ্ধ যোগীশ্বর মহাদেবের মূৰ্ত্তি পাইয়াছেন, অথবা ভাস্করের প্রসাদে শুণ্ডবিশিষ্ট গণপতির আকার ধারণ করিয়াছেন। আবার কোথাও বৌদ্ধই হউন, আর কৈলাসপতিই হউন, গাজি সাহেবের দরগায় গড়াগড়ি যাইতেছেন, কি ছিন্নমস্তক হইয়া সোপানের প্রস্তরে গ্রথিত হইয়াছেন। আলেথ্যেরও ঐ গতি। অতএব ভারতের পূর্ববৃত্তান্ত প্রাচীন দেবালয়, বিহারস্তুপ, কি মসজিদে প্রকৃতরূপে পাওয়া দুরূহ। মন্দিরের প্রতিমূৰ্ত্তির নিয়ে দুই পংক্তি অক্ষর খোদিত আছে। লেখা বহু দিনের। বর্তমান দেবনাগর নহে। বৌদ্ধমতের প্রাচুর্ভাবের সময় কুটীল অথবা লাঠের অক্ষর হইতে প্লাবে। প্রতিমূৰ্ত্তি ও লেখা এককালীন হইয়াছিল, এমত নিশ্চয় নাই ; একারণ তাহার সময় ও উদ্দেশ্য নিরূপণ হইতে পারে না। কাবামুরাগী ভূতপূৰ্ব্ব ভারতবাসীরা আপনাদের ধৰ্ম্মতত্ব ও ঐতিহাসিক ও নৈসর্গিক সকল তত্ত্বই গুহায় নিহিত রাখিয়াছেন, এখন আমরা টেকির কচকচি বিবেচনায় এক একজন নূতন নূতন দেশী বা বিলাতী মহাজন ধরিয়া নানা পন্থা পাইতেছি। যে পথ ধরিয়া মহাত্মা অযোধ্যাপতি রামচন্দ্র ভারতোদ্ধার করিয়াছিলেন, যে পথে বাল্মীকি বিচরণ করিতে করিতে সেই অলোকসামান্ত রূপ সাক্ষাৎ করিয়াছিলেন, যে পথ অবলম্বন করিয়া পাণ্ডবগণ ভারতে অক্ষয় কীৰ্ত্তিধ্বজ উত্তোলন করিয়াছিলেন, যে পথে ভ্ৰমণ করিয়া মহর্ষি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন তাহাদিগের ছবি ও তাহাদের উপদেষ্ট অগাধবুদ্ধি বাসুদেবের চিত্ৰপট দেখিয়াছিলেন, যে পথে গৌতম, কনাদ প্রভৃতি মুনিগণ যাতায়াত করিতেন, আজি তাহা সকলেই জঙ্গলময়, গাঢ় তিমিরাচ্ছন্ন, কে আমাদিগকে তাহা দেখাইয়া দিবে ? কেনই বা পিতামহেরা আমাদের বুদ্ধির পরীক্ষাজন্ত সমস্ত তত্ত্ব গুহায় লুকাইয়াছেন ? অথবা তাহাতেও কিছু নাই। এ সকল একবার সন্ধান করা প্রয়োজন বটে।