পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৫৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NOH বজদর্শল [करून কারনিসে পদ স্থাপিত একটি মূৰ্ত্তির আভাসমাত্র দেখিলেন, কর্ণে যেন তার কি উজ্জল অলঙ্কার দোদুল্যমান রহিয়াছে। সে উচ্চ প্রাসাদ হইতে ছবিটি যেন পড়ি পড়ি করিতেছে। অমরেন্দ্র ব্যাঃ চিত্তে ভাবিলেন “কি হবে ? এ কে ? আমারই কাদম্বিনী না ?” অমরেন্দ্রনাথ মাথার উপর দিয়া তুই হস্ত হইতে দুইটি বন্দুক ছুড়িলেন, শব্দের পর চক্ষু চাহিতে কাহার অবসর না হইতেই ঘাটি পার হইয়া দেউড়ি প্রবেশ করিলেন । বাটীর মধ্যে গিয়া দেখেন সকল দ্বারই মুক্ত, কিন্তু প্রকোষ্ঠে প্রকোষ্ঠে দুই চারিজন অস্ত্রধারী পুরুষ রহিয়াছে পশ্চাতে দেখেন গোপাল চৌকিদার আসিতেছে, সেই পথ দেখাইয়া চলিল, ডাকাইতের নির্ভয় । বাহির হইতে কোন আক্রমণের আশঙ্কা নাই । র্তাহাকে দেখিয়া মনে করিল ইনি গৃহবাসী কোন লোক প্রস্থান করিতেছেন । অমরেন্দ্রনাথ সত্বর প্রাসাদের উপর যেখানে আকাশে সেই ছবি দেখিয়াছিলেন, সেইখানেই উপস্থিত হইলেন, দেখিলেন একটি সাক্ষাৎ কালমূৰ্ত্তি গদা হস্তে ছাদের উপর দণ্ডায়মান, তাহাব ভয়েই অবলা কাদম্বিনী কারনিসের উপর বসিয়া আছেন, ডাকাইত কহিতেছে, “এই দিকে আইস, না হলে তোমার নাকের ঐ বড় মুক্তাটি ছিড়িয়া লইব ।” কুমারী কহিতেছেন, “তুই জানিস আমি তোর দেবী সাক্ষাৎ কালী, আমাকে ছুইবার জন্য হাত বাড়াইবি কি এই অবলম্বন ত্যাগ করিয়া ঐ নীচে পোস্তার উপরে কাপ দিব।” ভাগ্যক্রমে অমরেন্দ্র নাথ সেই সময়ে তথায় উপস্থিত ইয়াছিলেন। এক হস্তে পিস্তলের উলটা দিক দিয়া কাল পুরুষের মস্তকে বঙ্গপ্রহারে তাহাকে ধরাশায়ী করিয়া অপর হস্তে সুন্দরীর হস্তম্বয় দৃঢ়রূপে ধারণ করিলেন। ডাকাতের হস্তদ্বয় হইতে গদক ও মশাল স্বলিত হইয়া পড়িল । কাদম্বিনী র্তাহার উদ্ধার কৰ্ত্তাকে—অবলাবান্ধবকে—চিনিয়াছেন, আর ভয় নাই। কারনিস হইতে প্রাসাদে নীত হইলেন–কিন্তু ক্ষণমাত্র মধ্যেই অমরেন্দ্রনাথের কোলে অজ্ঞান হুইয়া পড়িলেন । নীচ লোকের নিকট আপন শস্ত্র নিপুণতা প্রদর্শন করা অমরেন্দ্র নাথের অভিপ্রায় ছিল না, তাহার কাদম্বিনীর উদ্ধার করার একমাত্র উদ্দেশ্য, কাদম্বিনীকে ক্রোড়ে লইয়া গোপালের দশিতমত গুপ্ত পথে বাটীর বহির্দেশে জলাশয়ের পার্শ্বে উপস্থিত হইলেন। এখন ডাকাতের জানে না যে তাহাদের সর্দার ছাদে মৃতপ্রায় শয্যাশায়ী হইয়াছে। তাহারা লুণ্ঠনকার্ঘ্যে ব্যস্ত। এদিকে কাদম্বিনীর অধরে জলসেচন করায় তাহার সংজ্ঞাপ্রাপ্ত হইল। অমরেজনাথ পুনরায় তাহাকে লইয়া গ্রামের বাহিরে আসিলেন। গোপাল চৌকিদারকে কটু দিব্বি দিয়া কহিলেন, “আমি ইহাকে তর্কালঙ্কারের আশ্রমে লইয়া বাই, তুমি কোন মতে অস্ত কাহার নিকট এ ঘটনা ব্যক্ত করিও না ।” অমরেন্দ্রনাথ কিঞ্চিৎ পরে