পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

更 তৃতীয় সংখ্যা । ] "ड्ड" আমাদের দেশে বিদ্যাকে অত্যন্ত ব্যয়"সাধ্য করা কোনমতেই সঙ্গত নহে । অামাদের সমাজ শিক্ষাকে সুলভ করিয়া রাখিয়াছিল –দেশের উচ্চনীচ সকল স্তরেই শিক্ষা ৰানী সহজ প্রণালীতে প্রবাহিত হইতেছিল। * সেই সমস্ত স্বাভাবিক প্রণালী ইংরাজিশিক্ষার ফলেই ক্রমে ক্রমে বন্ধ হইয়া আসিতেছিল— এমন কি, দেশে রামায়ণ-মহাভারত-পাঠ, কথকত-যাত্রাগান প্রতিদিন বিদায়োম্মুখ হইয়া আসিতেছে । এমন সময়ে ইংরাজিশিক্ষাকেও যদি দুলভ করিয়া তোলা হয়, তবে গাছে তুলিয়া-দিরা মই কাড়িয়া লওয়া ट्ध्र ।* বিলাতী সভ্যতার সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গই অনেক টাকার ধন। আমোদ হইতে লড়াই পর্য্যস্ত সমস্তই টাকার ব্যাপার। ইহাতে টাকা একটা প্রকাও শক্তি হহয়৷ উঠিয়াছে এবং টাকার পুজা মার-সমস্ত পূজাকে ছাড়াইয়া চলিয়াছে । এই দুঃসাধ্যতা, দুর্লভতা, জটিলতা যুরোপীর সভ্যতার সর্বপ্রধান দুৰ্ব্বলতা । সাতার দিতে গিয়া অত্যন্ত বেশি হাত-পা-ছোড়া অপটুতাবুই প্রমাণ দেয়, কোনো সভ্যতার মধ্যে • যখন সৰ্ব্ববিষয়েই প্রস্থাসের একান্ত আতিশয্য দেখা যায়, তখন ইহা বুঝিতে হইবে, তাহার যতটা শক্তি বাহিরে দেখা যাইতেছে, তাহার অনেকটারই প্রতিমুহূর্তে অপব্যয় হইতেছে। বিপুল-মালমস্লা-কাঠখড়ের হিসাব যদি ঠিকমত রাখা যায়, তবে দেখা যাইবে,"মজুরি পোষাইতেছে না। প্রকৃতির খাতায় স্বদেআসলে হিসাব বাড়িতেছে, মূৰে মাঝে তাগিদের পেয়াঁদাও যে আসিতেছে না, সাময়িক প্রসঙ্গ । Ꮌ8Ꮔ তাহাও নহে –কিন্তু সে লইয়া আমাদের চিন্তা করিবার দরকার নাই। আমাদের ভাবনার বিষয় এই যে, দেশে বিচার দুমুল্য, অন্ন দুমূল্য, শিক্ষাও যদি ত্বমূল্য হয়, তবে ধনি-দরিদ্রের মধ্যে নিদারুণ বিচ্ছেদ: আমাদের দেশেও 'অত্যন্ত বৃহৎ হইয়া উঠিবে। বিলাতে দারিদ্র্য কেবল ধনের অভাব নহে, তাহা মনুষ্যত্বেরও অভাব—কারণ, সেখানে মনুষ্যত্বের সমস্ত উপকরণই চড়াদরৈ বিক্রয় হয় । আমাদের দেশে দরিদ্রের মধ্যে মনুষ্যত্ব ছিল, কারণ আমাদের সমাজে সুখ-স্বাস্থ্য-শিক্ষঃআমোদ মোটের উপরে সকলে ভাগাভাগি করিয়া লইরাছে । ধনীর চণ্ডীমণ্ডপে যে পাঠশালা বসিয়াছে, গরিবের ছেলেরা বিনা বেতনে তাহীতে শিক্ষা পাইয়াছে—রাজারসভায় যে উৎসব হইয়াছে, দরিদ্র প্রজা বিনা আহবানে তাহাতে প্রবেশলাভ করিয়াছে । ধনার বাগানে দরিদ্র প্রত্যহ পুজার ফুল তুলিয়াছে,- কেহ তাঁহাকে পুলিসে দেয় নাই, সম্পন্নব্যক্তি দাঘি-ঝিল কাটাইয়ু তাহার চারদিকে পাহারা বসাইয়: রাখে নাই। ইহাতে দরিদ্রের আত্মসন্ত্রম ছিল—ধনীর ঐশ্বর্য্যে তাহার স্বাভাবিক দাবী ছিল,এইজন্ত, তাহার অবস্থা যেমনই হোক, সে পাশবতা প্রাপ্ত হয় নাই--র্যাহারা জাতিভেদ ও মন্ত্রব্যত্বের উচ্চ অধিকার লইয়ামুখস্থ বুলি আওড়ান, তাহার এসব কথা ভাল করিয়া চিন্তা করিয়া দেখেন না । বিলাতী লাটু আজকাল বলিতেছেন, যাহার টাকা নাই, ক্ষমতা নাই, তাহার বিদ্যাশিক্ষার প্রতি অত্যন্ত লোভ করিবার দরকার '