পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8b. কি ? আমাদের কানে এ কথাটা অত্যন্ত বিদেশী, অত্যন্ত নিষ্ঠুর বলিয়া ঠেকে। কিন্তু সমস্ত সহিতে হইবে । তাই বলিয়া বসিয়া-বসিয়া অক্ষেপ কৰূিলে চলিবে না। আমরা নিজের যাহা • করিতে পারি, তাহারই জন্য আমাদিগকে কোমর বাধিতে হইবে। বিদ্যাশিক্ষার ব্যবস্থা আমাদের দেশে সমাজের ব্যবস্থা ছিল --রাজার উপরে, বাহিরের সাহায্যের উপরে ইহার নির্ভর ছিল না সমাজ ইহাকে রক্ষা করিয়াছে এবং সমাজকে ইহা রক্ষা করিয়াছে । এখন বিদ্যাশিক্ষ। রাজার কাজ পাইবার সহায়ুস্বরূপ হইয়াছে, তখন বিদ্যাশিক্ষা সমাজের হিতসাধনের উপযোগী ছিল। এখন সমাজের সহিত বিদ্যার পরস্পর সহায়তার যোগ নাই । ইহাতে এতকাল পরে শিক্ষাসাধনব্যাপার ভারতবর্ষে রাজার প্রসাদঅপেক্ষী হইয়াছে । এ অবস্থায় রাজা যদি মনে করেন, র্তাহীদের রাজপলিসির অমুকুল করিয়াই শিক্ষার ব্যবস্থা করিতে হইবে, রাজভক্তির ছাচে ঢালিয়া ইতিহাস রচিতে হইবে, বিজ্ঞানশিক্ষাটাকে পাকে প্রকারে খৰ্ব্ব করিতে হইবে, ভারতবর্ষীয় ছাত্রের সর্বপ্রকার আত্মগৌরববোধকে সঙ্কচিত করিতে হইবে, তবে তাহাদিগকুে দোষ দেওয়া যায় না— কর্তার ইচ্ছা কৰ্ম্ম—আমরা সে কৰ্ম্মের ফলভোগ করিব, কিন্তু সে কৰ্ম্মের উপরে কর্তৃত্ব করিবার আশা করিব কিসের জোরে? তা ছাড়া, বিদ্যtজিনিষটা কলকারখানার সামগ্ৰী নহে। তাহা মনের ভিতর হইতে ন৷ দিলে দিবীর জো নাই। লাটুসাহেব তাহার दछेभव्यिॉन ! [ ৪র্থ বর্ষ, আষাঢ় । অক্সফোর্ড কেন্থিজের আদর্শ লইয়া কেবলি আস্ফালন করিয়াছেন ; এ কথা ভুলিয়াছেন যে, সেখানে ছাত্র ও অধ্যাপকের মধ্যে ব্যবধান নাই- সুতরাং সেখানে বিদ্যার আদানপ্রদান স্বাভাবিক। শিক্ষক সেখানে বিদ্যা দানের জন্ত উন্মুখ এবং ছাত্রেরাও বিদ্যা লাভের জন্ত প্রস্বত—পরস্পরের মাঝখানে অপরিচয়ের দুরত্ব নাই, অশ্রদ্ধার কণ্টকপ্রাচীর নাই, কাজেই সেখানে মনের জিনিষ মনে গিয়া পৌছায়। পেড়লারের মত লোক আমাদের দেশের অধ্যাপক,-শিক্ষণবিভাগের অধ্যক্ষ, তিনি আমাদিগকে কি দিতে পারেন, আমবাই বা র্তাহার কাছ হইতে কি লইতে পারি হৃদয়ে হৃদয়ে যেখানে স্পর্শ নাই, সেখানে সুস্পষ্ট বিরোধ ও বিদ্বেষ আছে ; সেখানে দৈববিড়ম্বনায় যদি দানপ্রতিদানের সম্বন্ধ স্থাপিত হয়, তবে সে সম্বন্ধ হইতে শুধু নিস্ফলতা নহে, কুফলত প্রত্যাশ করা যায়। g সৰ্ব্বাপেক্ষ এইজন্তই বিশেষ প্রয়োজন হইয়াছে—নিজেদেখ বিদ্যাদানের ব্যবস্থাভার নিজেরা গ্রহণ করা । তাহাতে আমাদের বিদ্যামন্দিরে কেন্থি,জ-অক্সফোর্ডের প্রকাও পাষাণ প্রতিরূপ প্রতিষ্ঠিত হইবে না জানি, তাহার সাজসরঞ্জাম দরিদ্রের উপযুক্ত হইবে, ধনীর চক্ষে তাহার অসম্পূর্ণতাও অনেক লক্ষিত হইবে, কিন্তু জাগ্রত সরস্বতী শ্রদ্ধাশতদলে আসীন হইবেন, তিনি জননীর মত করিয়া সন্তানদিগকে অমৃত পরিবেষণ করিবেন, ধনমদগৰ্ব্বিত ৰণিকৃগৃহিণীর মত উচ্চ বাতায়নে দাড়াইয়া"দূর হইতে ভিক্ষুকৰিদায় করিবেন না । ஆ.