পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬৪ बझाब्ंत्रि । [ ৪র্থ বর্ষ, শ্রাবণ । গুচি সংঘত শ্রদ্ধাবান হইয়া মনুষ্যত্বলাভ করিবে, এই আমার সঙ্কল্প ছিল। বলা বাহুল্য, এখনকার দিনে এ কল্পনা সম্পূর্ণভাবে কাজে খাটানো সহজ নহে। এমন অধ্যাপক পাওয়াই কঠিন, র্যাহারা অধ্যাপনকাৰ্য্যকে যথার্থ ধৰ্ম্মব্রতস্বরূপে গ্ৰহণ করিতে পারেন। অথচ বিদ্যাকে পণ্যদ্রব্য করিলেই গুরুশিষ্যের সহজ সম্বন্ধ নষ্ট হইয়া যায়—ও তাহাতে এরূপ বিদ্যালয়ের আদর্শ ভিত্তিহীন ह्हेब्रां श्रृं८फ़ । এই কথা লইয়া একদিন খেদ করিতেছিলাম –তখন সতীশ আমার ঘরের এক কোণে চুপ করিয়া বসিয়াছিল। সে হঠাৎ লজ্জায় কুষ্ঠিত হইয়া বিনীতস্বরে কহিল-- “আমি বোলপুর ব্রহ্মবিদ্যালয়ে শিক্ষাদানকে জীবনের ব্ৰত বলিয়া গ্রহণ করিতে প্রস্তুত আছি, কিন্তু আমি কি এ কাজের যোগ্য ?” তখনো সতীশের কলেজের পড়া সাঙ্গ হয় নাই । সে আর কিছুর জন্তই অপেক্ষা করিল না, বিদ্যালয়ের কাজে আত্মসমর্পণ করিল। তাবী সাংসারিক উন্নতির সমস্ত আশা ও উপায় এইরূপে বিসর্জন করাতে সতীশ তাহার আত্মীয়বন্ধুদের কাছ হইতে কিরূপ ৰাধা পাইয়াছিল, তাহ পাঠকগণ কল্পনা করিতে পাম্বিবেন । এই সংগ্রামে সতীশের হৃদয় অনেকদিন অনেক গুরুত্বর আঘাত সহিয়াছিল, কিন্তু পরাস্ত হয় নাই। , কল্পনাক্ষেত্র হইতে কৰ্ম্মক্ষেত্রে নামিয়া আসিলেই অনেকের কাছে সঙ্কল্পের গৌরব চলিয়া যায়। প্রতিদিনের খণ্ডতা ও অসপূর্ণতার মধ্যে তাহার বৃহৎকে, দুরকে, সমগ্রকে দেখিতে পায় না—প্রাত্যহিক চেষ্টার মধ্যে যে সমস্ত ভাঙাচোরা, জোড়াতাড়া, বিরোধ, বিকার, অসামঞ্জস্ত অনিবাৰ্য্য, তাহাতে পরিপূর্ণ পরিণামের মহত্বচ্ছবি আচ্ছন্ন হইয়। যায় । যে সকল কাজের শেষ ফলটিকে লাভ করা দূরে থাকু, চক্ষেও দেখিবার আশা করা যায় না, যাহার মানসী মূৰ্ত্তির সহিত কৰ্ম্মরূপের প্রভেদ অত্যন্ত অধিক, তাহার জন্ত জীবন উৎসর্গ করা, তাহার প্রতিদিনের স্ত,পাকার বোঝা কাধে লইয়া পথ খুঁজিতে খুজিতে চলা সহজ নহে—যাহারা উৎসাহের জন্ত বাহিরের দিকে তাকায়, এ কাজ তাহাদের নহে—কাজও করিতে হইবে নিজের শক্তিতে, তাহার বেতনও জোগাইতে হইবে নিজের মনের ভিতর হইতে—নিজের মধ্যে এরূপ সহজ সম্পদের ভাণ্ডার সকলের নাই । বিধাতার বরে সতীশ আকৃত্রিম কল্পনাসম্পদ লাভ করিয়াছিল তাহার প্রমাণ এই যে, সে ক্ষুদ্রের ভিতরে বৃহৎকে, প্রতিদিনের মধ্যে চিরন্তনকে সহজে দেখিতে পাইত। ষে ব্যক্তি ভিখারী শিবের কেবল বাঘছাল এবং ভস্মলেপটুকুই দেখিতে পায়, সে তাহাকে দীন বলিয়া অবজ্ঞা করিয়া ফিরিয়া যায়— ংসারে শিব তাহার ভক্তদিগকে ঐশ্বৰ্য্যের ছটা বিস্তার করিয়া আহবান করেন ন!— বাহদৈন্তকে ভেদ করিয়া ষে লোক এই ভিক্ষুকের রজতগিরিসল্লিভ নিৰ্ম্মল ঈশ্বরমূৰ্ত্তি দেগ্নিতে পান, তিনিই শিবকে লাভ করেন— ভূজঙ্গবেষ্টনকে তিনি বিভীষিক বলিয়া গণ্য করেন না এবং এই পরর্ম কাeালের রিক্ত ভিক্ষাপত্রে আপনার সর্বস্ব সমর্পণ করাকেই চরমলাভ বলিয়া জ্ঞান করেন।