পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. চতুর্থসংখ্যা। } حتی میم - ---------------------- মুক্ৰুিতেই মুক্তিলাভ করিবে —কয়েকটি তপোবন সমস্ত দেশের অস্তরের দাসত্বরজ্জ্ব মোচন করিয়া দিবে। . যাহাই হেীকৃ, আমার সঙ্কল্পটিকে এতক্ষণ কেবলমাত্র কল্পনার দিক্ হইতে দেখা গেল। বলা বাহুল্য, কাজের দিক্ হইতে যাহা প্রকাশ পাইতেছে, তাহা এরূপ মনোরম এবং সুষমাবিশিষ্ট নহে । কোথায় তপস্বী, কোথায় তপস্বীর শিষ্যদল,—কোথায় সার্থক ব্ৰহ্মজ্ঞানের অপরিমেয় শান্তি, কোথায় একনিষ্ঠ ব্রহ্মচর্য্যের সৌম্যনিৰ্ম্মল জ্যোতিঃপ্রভা ? তবু ভারতবর্ষের আহবানকে কেবল বাণীরূপে নহে, কৰ্ম্ম-আকারে কোথাও বদ্ধ করিতেই হইবে । বোলপুরের প্রাস্তরের প্রান্তে সেই চেষ্টাকে আমি স্থান দিয়াছি। এখনো ইহা রূপান্তরিত বাক্যমাত্র, ইহা আহবান। সতীশ, অনাস্ত্ৰাত পুষ্পরাশির দ্যায়, তাহার তরুণ হৃদয়ের সমস্ত শ্রদ্ধা বহন করিয়া এই নিভৃত শাস্তিনিকেতনের আশ্রমে আসিয়া আমার সহিত মিলিত হইল। কলেজ হইতে বাহির হইয়া জীবনধাত্রার আরম্ভকালেই সে যে ত্যাগস্বীকার করিয়াছিল, তাহা লইয়া একদিনের জন্তও সে অহঙ্কার অনুভব করে নাই—সে প্রতিদিন নম্রমধুর প্রফুল্লভাবে আপনার কাজ করিয়া যাইত, সে ৰে কি করিয়াছিল, তাহ সে জানিত না। এই শান্তিনিকেতন আশ্রমের চারিদিকে অবারিত তরঙ্গায়িত মাঠ–এ মাঠে লাঙলের আঁচড় পড়ে নাই । মাঝে মাঝে এক এক জায়গায় খৰ্ব্বায়তন বুনো খেজুর, বুনো জাম, দুইএকটা কাঁটাগুল্ম এবং উয়ের ঢিবিতে মিলিয়া একএকটা ঝোপ বাধিয়াছে। অদূরে গুরুদক্ষিশ৷ ৷ ” هنازلا ছায়াময় ভুবনডাঙা-গ্রামের প্রাস্তে একটি বৃহৎ বাধের জলরেখা দূর হইতে ইস্পাতের ছুরির মত ঝলকিয়া উঠিতেছে এবং তাহার দক্ষিণ পাড়ির উপর-প্রাচীন তালগাছের সার কোনো ভগ্ন দৈত্যপুরীর স্তম্ভশ্রেণীর মত দাড়াইয়া আছে। মাঠের মাঝে মাঝে বর্ষার জলধারায় বেলেমাটি ক্ষইয়া গিয়া মুড়িবিছানো কঙ্করস্ত,পের মধ্যে বহুতর গুহাগহবর ও বর্ষাক্সোতের বালুবকীর্ণ জলতলরেখা রচনা করিয়াছে। জনশূন্ত মাঠের ভিতর দিয়া একটি রক্তবর্ণ পথ দিগন্তবৰ্ত্তী গ্রামের দিকে চলিয়া গেছে--সেই পথ দিয়া পল্পীর লোকের বৃহস্পতিবার-রবিবারে বোলপুরসহরে হাট করিতে যায়, সাওতালনারীরা উলুখড়ের আঁটি বাধিয়া বিক্রয় করিতে চলে এবং ভারমন্থর গোরুর-গড়ি নিস্তব্ধ মধ্যান্ত্রের রৌদ্রে আৰ্ত্তশব্দে ধূলা উড়াই যাতায়াত করে। এই জনহীন তরুশূন্ত মাঠের সৰ্ব্বোচ্চ ভূখণ্ডে দূর হইতে ঋজুদীর্ঘ একসারি শালবুক্ষের পল্লবজালের অবকাশপথ দিয়া একটি লৌহমন্দিরের চুড়া ও একটি দোতলা কোঠার ছাদের অংশ চোখে পড়ে—এইখানেই আমলকী ও আম্রবনের মধ্যে মধুক ও শালতরুর তলে শাস্তিনিকেতন আশ্রম । g এই আশ্রমের এক প্রান্তে বিদ্যালয়ের মৃন্ময়কুটীরে , সতীশ আশ্রয় লইয়াছিল। সম্মুখের শালতরুশ্রেণীর তলে যে কক্ষরখচিত পথ আছে, সেই পথে কতদিন স্বৰ্য্যাস্তকালে তাহার সহিত ধৰ্ম্ম, সমাজ ও সাহিত্যসম্বন্ধে আলোচনা করিতে করিতে সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনীভূত হইরা আসিয়াছে এবং জনশূন্ত প্রাস্তরের নিবিড় নিস্তব্ধতার ' .উৰ্দ্ধদেশে