পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Xbre যক্ষদর্শন । অন্নদ৮। না না, তপস্তার কথা হইতেছে না ; কাল রাত্রে আমার ভাল ঘুম হয় নাই, ভাই ভাবিতেছিলাম আজ চা ন খাইয়া দেখা যাক কেমন থাকি !". বস্তুত হেমনলিনীর সঙ্গে" কথা কহিবার সময় পরিপূর্ণ চায়ের পেয়া র ধ্যানমুক্তি অনেকবার অন্নদাবাবুকে প্রলুব্ধ করিয়া গেছে, কিন্তু আজ উঠিতে পারেন নাই। অনেকদিন পরে আজ হেম তাহার সঙ্গে সুস্থভাবে কথা কহিতেছে, এই নিভৃত ছাদে দুটিতে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ আলাপ জমিয়া উঠিয়াছে, এমন গভীর নিবিড়-ভাবে আলাপ পূৰ্ব্বে ত তাহার কখনো মনে পড়ে না। এ আলাপ এক জায়গা হইতে অর এক জায়গায় তুলিয়া-লইয়া যাওয়া সহিৰে না—নড়িবার চেষ্টা করিলেই ভীরু হয়িণের মত সমস্ত জিনিষ ছটিয়া পালাইবে । সেইজন্যই অন্নদাবাবু আজ চা-পাত্রের মুহুমুহ আহবান উপেক্ষা করিয়াছিলেন। অন্নদাবাবু যে চা-পান রহিত করিয়া অনিদ্রার চিকিৎসায় প্রবৃত্ত হইয়াছেন, এ কথা হেমনলিনী বিশ্বযু করিল না—সে কহিল, “চল বাবা, চা খাইবে চল!”- অন্নদাবাবু সেই মুহূৰ্ত্তেই অনিদ্রার আশঙ্কাটা বিস্তৃত হইয়া ৰ্যগ্রপদেই টেবিলের অভিমুখে ধাবিত হইলেন । , - চা খাইবার ঘরে প্রবেশ করিয়াই অল্পদবাবু দেখিলেন, অক্ষয় সেখানে বসিয়া আছে। র্তাহার মনটা উৎকণ্ঠিত হইয়া উঠিল। তিনি ভাবিলেন, হেমেৱ মন আজ একটুখানি মুস্থ হইয়াছে, অক্ষয়কে দেখিলেই আবার বিকল হইয়া উঠিৰে,-কিন্তু এখন আর কোনো { ৪র্থ বর্ষ, শ্রাবণ । উপায় নাই। মুহূর্তপরেই হেমনলিনী ঘরে প্রবেশ করিল। অক্ষয় তাহাকে দেখিয়াই উঠিয়া পড়িল, কহিল, “যোগেন্‌, আমি আজ তবে আসি !” - হেমনলিনী কহিল, “কেন অক্ষয়বাবু, আপনার কি কোনো কাজ আছে ? একপেয়াল চা থাইয়া ধান ।” হেমনলিনীর এই অভ্যর্থনায় ঘরের সকলেই আশ্চৰ্য্য হইয়া গেল। অক্ষয় পুনৰ্ব্বার আসনগ্রহণ করিয়া কহিল, “আপনাদের অবর্তমানেই আমি জ্ব েfয়ালা চা খাইয়াছি— পীড়াপীড়ি করিলে আরো দুপেয়ালা যে চলে না, তাহা বলিতে পারি না !” হেমনলিনী হাসিয়া কহিল, "চায়ের পেয়ালা লইয়া আপনাকে কোনোদিন ত পীড়াপীড়ি করিতে হয় নাই।” অক্ষয় কহিল—“ন, ভtল জিনিষকে আমি কখনো প্রয়োজন নাই বলিয়। ফিরিতে দিই না, বিধাতা আমাকে ঐটুকু বুদ্ধি, निम्नांtछ्न ।* যোগেন্দ্ৰ কহিল—“সেই কথা স্মরণ করিয়া ভাল জিনিষও যেন তোমাকে কোনোদিন প্রয়োজন নাই বলিয়া ফিরাইয়া না দেয়, আমি তোমাকে এই আশীৰ্ব্বাদ করি ?” অনেকদিন পরে অন্নদার চায়ের টেবিলে কথাবার্তা বেশ সহজভাবে জমিয়া উঠিল । সচরাচর হেমনলিনী শাস্তভাবে হাসিয়া থাকে, আজ তাহtয় হাসির ধ্বনি মাঝেমাঝে কথোপকথনের উপরে ফুটিয়া উঠিতে লাগিল। অন্নদাবাবুকে সে ঠাট্টা করিয়া কছিল, “বাবা, স্মক্ষয়ৰাবুর অন্যায় দেখ—কল্পদিন তোমার পিল না থাইয়াও উলি দিব্যি ভাল