পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ সংখ্যা । ] গৌতমমুনি ও খায়দর্শন। ఎనసి তৃতীয় বিভাগের নাম উদাহরণ, চতুর্থ বিভাগের নাম উপনয় ও পঞ্চম বিভাগের নাম নিগমন । এই সকল বিভাগের অপর নাম অবয়ব । অবয়বপঞ্চকের ক্রমিক উল্লেখ এইরূপ - ১ । নিশ্চয়ই পৰ্ব্বতোপরি বহি আছে। ২ । কেন না, ধূম দেখা যাইতেছে। ৩। ধূম থাকিলে তন্মলে বহি থাকে, ইহা পাকশাল প্রভৃতি স্থলে দেখিয়াছ । ৪ । পৰ্ব্বতেও ধূম দেখা যাইতেছে। ৫ । যেহেতু ধূম দেখা যাইতেছে, সেইহেতু ঐ স্থানে বহিও অাছে। ইহারই নাম পরার্থামুমানপ্রণালী । ইহারই মাম পঞ্চাবয়ব দ্যায়, এবং ইহারই প্রপঞ্চ গৌতমের দর্শন । পঞ্চাবয়ব ন্যায়, এই কথায় আর একটি ভাষ্যকারীয় কথা মনে পড়িল । ভাষ্যকার বলিয়াছেন, গৌতমের পূৰ্ব্বে দ্যায়ের দশ অবয়ব প্রচলিত ছিল । প্রাচীন নৈয়াল্লিকেরা প্রতিজ্ঞ, হেতু, উদাহরণ, উপনয় ও নিগমন, এই ‘is অবয়বের অতিরিক্ত জিজ্ঞাসা, সংশয়, শক্যপ্রাপ্তি, প্রয়োজন ও সংশয়নিরাপ, এই পাচ নামের আর পাচটি অবয়ব ব্যযহার করিতেন । এই সংবাদ র্যাহার জানেন, তাহার। ইহাও জানেন যে, গৌতমের পূৰ্ব্বেও ভায়শাস্ত্র ছিল। কাজেই বলিতে হয়, ন্যায়ুশাস্ত্রের ইতিহাসে গৌতমকে আদিসীমান্ন স্থাপন করিলে অবশুই তাহা তুমকলুষিত হইবে। অপর কথা এই যে, গৌতম যেমন দশাবয়বৰাদীর মত মনোনীত করেন নাই, সেইরূপ বেদন্তিগণওঁ, পঞ্চীখয়ববাদী গোতমের মতওঁ মনোনীত করেন নাই । জন্যই শাস্ত্র, বেদান্তীরা বলেন, তিন অবয়বেই অল্পমানপ্রক্রিয়া পরিসমাপ্ত হয়, মুতরাং আর দুই অবয়বের অঙ্গীকার বৃথা । যদি প্রতিজ্ঞ, হেতু, উদাহরণ, এই তিন, অথবা উদাহরণ, উপনয়, নিগমন, এই তিন অবয়বদ্বারা অমুমিতিকাৰ্য্য নিৰ্ব্বাহিত হর, তাহা হইলে অধিক অবয়বের কল্পনা অবশুই বৃথা হইবে। যাহাই হউক, কেহ যেন এমন মনে না করেন যে, আমরা গৌতমের শাস্ত্র পড়ি নাই বলিয়া, দ্যায়বিজ্ঞানে বঞ্চিত আছি । গৌতমের শাস্ত্র না পড়ায় আমরা তৎপ্রকাশক বাক্কৌশলে মাত্র বঞ্চিত আছি, ফলাংশে বঞ্চিত নহি । আমরা আবালবৃদ্ধযুব সকলেই, অধিক কি, পশুপক্ষীরাও স্বতঃসিদ্ধ নৈয়ায়িক । প্রতিদিনই আমরা নানাপ্রকার ন্যায়ের অবতারণা করিয়া থাকি, অথচ জিজ্ঞাসিত হইলে বলি, “আমরা ন্যায় পড়ি নাই, ন্যায় কি, তাহ আমরা জানি না।” এইমাত্র আমি এখানে আসিবার সময় পথিমধ্যে ক্রীড়মান বালকদিগের মুখ হইতে—“ঝড় উঠিবে ; কেন না, ঝোড়োকোণে মেঘ হইয়াছে ; ঝোড়োকোণে মেঘ হইলেই ঝড় হয় ;”—এইরূপ এইরূপ ন্যারবাক্য কহিতে শুনিয়া আসিয়াছি । সুতরাং বলিতে হয়, মমুষ্য ন্যায় না পড়িলেও লৈয়ায়িক—স্বতঃসিদ্ধ নৈয়ায়িক । বলিতে পারেন যে, তবে তাহার শাস্ত্র কেন ? সে কথার প্রত্যুত্তর এই যে, বুদ্ধিপরিমার্জন, উহশক্তির উদ্দীপন, ন্যায়াঙ্গের বিস্তৃতি,তাহার ব্যবহার অর্থাৎ শিখিবার ও শিখাইবার পদ্ধতিপ্রচার, এইরূপ এইরূপ প্রয়োজনসাধনের ন্যায়ুশক্তি স্বজন করিবার