পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৬ কথিত হইয়াছে। ইহার কারণ এই যে, জীবাত্মা ও পরমাত্মার অভেদভাষই গীতার সারতত্ত্ব। অন্তত্ব অর্জুনকে ভগবান বলিতেছেন--“আমি আত্মারূপে সকলের হৃদয়ে অধিষ্ঠিত । সমস্ত ক্ষেত্রেই আমাকে ক্ষেত্ৰজ্ঞ বলিয়া জানিবে।” এই পরমাত্ম। যদিও জীবাত্মা হইতে পৃথকৃরূপে কোথাও নিদিষ্ট হন নাই, তথাপি “উপদ্রষ্ট, অনুমন্ত, ভৰ্ত্তা, ভোক্তা, মহেশ্বর” এই শব্দগুলি, কোনটি পরমাত্মায়, কোন শব্দ বা জীবাত্মায় প্রযোজ্য, যেন জীবাত্মা-পরমাত্মা দুটি পুরুষ দেহমধ্যে একত্রে বাস করিতেছেন। উপনিষদে এই ভাব সুস্পষ্ট রূপে ব্যক্ত হইয়াছে— স্ব সুপর্ণ সয়ুজ সর্থায়ী সমানং বুক্ষং পরিমস্বজতে । তয়োরনা: পিপ্পলং স্বীস্বত্ত্যনপ্পন্নস্কোইভিচাকগীতি ॥ মুণ্ডক ৩১/১ ; শ্বেতাশ্বতর ৪৬ দুই মুন্দর পক্ষী এক বৃক্ষ অবলম্বন করিয়া রহিয়াছে—উভয়ে পরস্পরের সখা । ইহাদের একজন ফলভোক্তা, অন্তজন অনাহারী থাকিয়া সাক্ষিরূপে বিদ্যমান ( গীতায় যিনি অন্তর্যামী এবং ফলদাতা ) । পুরুষ এক কি অনেক ? এই প্রশ্নের উত্তর বেদাস্তে একপ্রকার, সাংখ্যে অন্তপ্রকার। সাংখ্যমতে প্রকৃতি এক, কিন্তু পুরুষ বহু ৷ জন্মমৃত্যুর কালভেদ, প্রকৃতি ও গুণভেদ, বর্ণাশ্রমভেদ ইত্যাদি কারণে পুরুষের বহুত্ব প্রতিপন্ন হইতেছে । পুরুষ যদি বহু হয়, তবে পুরুষ অর্থে পরিমিত জীবাত্মা ভিন্ন আর কি হইতে পারে ? অথচ সাংখ্যের ইহাও বলেন যে, পুরুষ সৰ্ব্বব্যাপী, জন্মমৃতু্য প্রভৃতি ষড় বিকারবর্জিত। পুরুষের বঙ্গদর্শন । [ ৪র্থ বর্ষ, ভাদ্র ৷ ” বহুত্ব এবং তাহার সৰ্ব্বব্যাপী অনাদি নিৰ্ব্বিকার স্বরূপ যে পরস্পর বিরোধী, তাহা তাহারা বিবেচনা করেন না । সে যাহা হউক, গীতা এ বিষয়ে বেদান্তের পথবর্তী হইয়া বহু হইতে একে পৌছিয়াছেন। গীতোপদেশে অদ্বৈততত্ত্বের কিরূপ প্রাধান্ত, তাহা জ্ঞানযোগব্যাখ্যানে যথেষ্ট সমালোচিত হইয়াছে, এখানে আর অধিক বলিবার প্রয়োজন নাই । গীতায় প্রকৃতি-পুরুষের অন্ত নাম ক্ষেত্রক্ষেত্ৰজ্ঞ । প্রকৃতি ক্ষেত্র, পুরুষ ক্ষেত্ৰজ্ঞ । ভগবান ক্ষেত্রজ্ঞরূপে সমস্ত ক্ষেত্রে বিরাজমান । “যেমন এক স্থৰ্য্য সমস্ত বিশ্বকে প্রকাশিত করে, সেইরূপ একই পুরুষ সমস্ত ক্ষেত্রকে প্রকাশিত করেন ।” *যেমন ూరి ? সৰ্ব্বত্রগামা মহাবায়ু আকাশে অবস্থান করে, তদ্রুপ সকল ভূতই আমাতে ( পরমায়াতে । অবস্থিত।” : আম হ’তে পরতর কোন ঠাই নাহি কিছু আর সবে অাম ওতপ্রোত, গাথা যথা স্বত্রে মণিহার । : গীতোক্ত পুরুষ সেই সৰ্ব্বভূতান্তরাত্মা, সৰ্ব্বব্যাপী পরমপুরুষ,—অনন্তভক্তি দ্বারা ऍाश८क शांड कब्र। गांब्र । ३६ পঞ্চদশ অধ্যায়ে পুরুষের যে ব্যাখ্যা আছে, তাহ ইতিপূৰ্ব্বে প্রদর্শিত হইয়াছে, এই প্রসঙ্গে তুস্থিার পুনরুল্লেখ করা যাইতে পারে। পুরুষ তিনপ্রকার—ক্ষর অর্থাৎ জড়জগৎ ; অক্ষর কিনা জীবাত্মা ; এবং ক্ষরাক্ষরের অতীত বিশ্বভুবনভর্তা পরমাত্মা যিনি, তিনি পুরুষোত্তম। এইস্থলে সাংখ্যপুরুষের উদ্ধে সেই সৰ্ব্বব্যাপী সৰ্ব্বাশ্রয় পরমপুরুষ

  • প্রতিষ্ঠিত হইয়াছেন।