পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম সংখ্যা । ] কোনদিকে গেল। আমরা তাকেই খুঁজছি। আমি বেশ জানি, সে এই রাস্তা ধরে” গেছে।”

  • কে জানে ?” :"কে জানে কিরে ? আমি জানি, তুই তাকে দেখেছিস ।

“ঘুমিয়ে থাকলে কি মানুষ দেখা যায় ?” “তুই কখনই ঘুমিয়ে ছিলি নে হতভাগ ! বন্দুকের আওয়াজে নিশ্চয়ই তোকে জাগিয়ে দিয়েছিল ।” “তোমার বন্দুকের এতই আওয়াজ নাকি জমাদারদাদা ? আমার বাবার বন্দুকটায় ওর চেয়ে ঢের বেশী হয়।” “মন্ত্ৰ পাজা ছোড়া ! আমি ঠিক বুঝেছি, তুই গ্যানেটোকে দেখেছিস্—হয় ত লুকিয়েও থাকৃতে পারিস। দেখ ত বাবার, বাড়ীর ভিতর গিয়ে দেখ ত, বেটা আছে কি না । তার এক প। বই চলছিল না,—সে কাচা ছেলে ত নয় যে, ঐরকম চালে মাকা পৰ্য্যস্ত ঠেলে চুলবার চেষ্টা করবে। তা ছাড়া রক্তের দাগও এখানে এসে থেমে গেছে ।” ফটু নাটাে একটু ফচুকে হাসি হtiসয়া বলিল—“বাবা কি বলবেন ? তিনি না থাকৃতে তোমরা বাড়া চড়াও হয়েছ জানলে কি বলবেন ?" গম্ব-ভূমাদার বালকের কান ধরিয়৷ কহিতে লাগিল—“আরে লক্ষ্মীছাড়া ! তুই জনিস, মামি মনে করলে তোর স্বর বদলে দিতে পারি । দশবিশ স্ব কসালে বোধ হয় তোর কথা বেরোবে ।" কিন্তু ফটু নাটোর আহলাদেপনা ঘুচিল না —সে শুনাইরা" শুনাইয়া কছিল-“আমার বাবা মাটিয়ে৷ ” “ কর্সিকাদ্বীপের একটি গল্প । Rరి: “জানিস পাজী ছোড়া, আমি তোকে গারদে পূৰ্বতে পারি, তোকে হাতে-পারে শিকল দিয়ে অন্ধকূপে ফেলে রাখতে পারি ? গ্যানেটাে কোথা আছে যদি না বলিস্ট,তোকে ফাসিকাঠে চড়াব ।” • এই ফাকা লম্বাই-চওড়াই শুনিয়া ছেলে ত হাসিয়া কুটিকুটি । সে আবার বলিল— “মাটিয়ে আমার বাবা !” এক সিপাহী কানে কানে কহিল-- “জমাদারজী, মাটিয়োকে ঘাটিয়ে কাজ নেই ।” গম্ব। মুস্কিলে পড়িল । সিপাহীদের বাড়ীর ভিতরটা দেখিয়া আসিতে বেশী সময় লাগে নাই—কর্সিকায় গৃহস্থের বাড়ী বলিতে একটিমাত্র চেীকাঘর, বসিবার, থাইবার ও শিকার করিবার যাহা-কিছু জিনিষপত্র, সব তাহারই মধ্যে । সিপাহীরা ফিরিলে গম্বা তাহাদের সঙ্গে চুপিচুপি পরামর্শ করিতে লাগিল । দুষ্ট ফটু নাটোটা তাহার দাদা ও সিপাহীর গোলে পড়িয়াছে দেখিয়া খড়ের গাদার হেলান দিয়া বিড়ালের গায়ে হাত বুলাইতে বুলাইতে মজ। দেখিতে লাগিল । এক সিপাহা খড়ের গাদার নিকট গেল, বিড়াল দেখিল ; আলগোচে একবার খড়ের গায়ে সঙীনের খোচা মারিল ; আবার— “এমন জায়গায় কি মানুষ থাকৃতে পারে, দেখতে হয়, বলে’ দেখা”—এইভাবে মাথা নাড়িয়া ফুিরিয়া আসিল । খড়ের মধ্যে কোন সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না, বালকের মুখেও কিছু চাঞ্চল্য দেখা দিল না । জমাদার ও তাহার দল কি করিবুে, কিছুইভাবিয়া পায় না । কেহ কেহ যেন ‘গেলে