পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਬੋਲ সংখ্যা । ] গৌরবরুবি মহাত্মা গ্লড্‌ষ্টোন আসিয়া আমাদের দেশে উপস্থিত হন, তবে হিন্দুজাতি র্তাহাদিগকে চিনিবে না। হিন্দুজাতির নেতা ছিলেন তপস্বিরাজ ত্রীরামচন্দ্র, ধৰ্ম্মরাজ্যসংস্থাপক শ্ৰীকৃষ্ণ, সৰ্ব্বত্যাগী বিশ্বপ্রেমিক গুদ্ধোদন, পরমযোগী জ্ঞানীৰতার শঙ্করাচার্য্য । এরূপ কোন তপঃপরায়ণ মহাপুরুষ ভিন্ন কেহ কখনও হিন্দুজাতির নেতা হইতে পারেন নাই, এবং বিধাতার মঙ্গল ইচ্ছায় যদি কখনও আবার হিন্দুজাতির অভু্যখান ঘটে, তবে সে এইরূপ কোন তপস্বী মহাপুরুষের শুভাবির্ভাবেই ঘটিবে। আজ হিন্দুজাতি * একজন প্রকৃত নেতার অভাব মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে অনুভব করিয়া হাহাকার. করিতেছে । সে শুভদিন কবে আসিবে,—যেদিন সেই মহাপুরুষের শুভাবির্ভাবে বহুযুগব্যাপী জীর্ণংস্কারা ভাবে হিন্দুসমাজের স্তরে স্তরে যে আবর্জনারাশি সঞ্চিত হইয়াছে, তাহা তাহার অগ্নিময় করসংস্পর্শে ভস্মীভূত হইয়া যাইবে ? কবে, এই বিশাল ধৰ্ম্মবিটপীর গাত্রে কালাত্যয়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন-সাম্প্রদায়িকমতভেদ-বশত যে সকল স্বল্প-আলোকিত ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র কোটর নিৰ্ম্মিত হইয়াছে, সে গুলি তাহার অঙ্গবিচ্ছুরিত-দিব্যজ্যোতিঃ-সঞ্চারে পূর্ণমধ্যাহূদীপ্তিতে সমুজ্জ্বল হইবে, এবং এই জীর্ণণীর্ণ ধৰ্ম্মতর নবজীবন লাভ করিয়া * জাতীয়তার সজীবস্নিগ্ধ পুষ্পপল্লবে মুশোভিত হইবে ? 尊 কিন্তু এইরূপ কোন ধৰ্ম্মবীরকে আবাহন ও আকর্ষণ করিয়া আনিতে হইলে, আমা দেরও সাধন চাই, তপস্ত চাই। বহু তপস্তার ফলে মর্ত্যধামে তাহাদের শুভাগমন, তপস্তা।

  • રક્ત(t

হয় । আমাদের এই দুৰ্গতির দিলে আমরা যেমন ওয়াশিংটন, ম্যাটুসিনি, গাড়ক্টোর্কে চিনিৰ ন', সেইরূপু রামচন্দ্র, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, শঙ্করকেও চিনিব না। বহু সাধনাৰায়৷ আমাদিগকে র্তাহীদের নিকটবর্তী স্তরে উন্নীত করিতে পারিলে, তবে আমরা তাহীদের মহিমা সম্যগন্ধপে বুঝিতে পারিব । কঠোর তপস্তাদ্বারা ধৰ্ম্মজীবন গঠন করিতে পারিলে, আমরা তাহাদিগকে আকর্ষণ করিয়া আনিতে পারিৰ। মেঘমালায় সঞ্চরণশীল বিদ্যুৎশিখা কেবল তখনই সনিনাদে ভূতলে অবতীর্ণ হইয়া থাকে, যখন ভূপৃষ্ঠস্থ তড়িৎশক্তি সমানতেজে উদ্দীপ্ত হইয়া তাহাকে আকর্ষণ করে । সুতরাং মন্থষ্যত্বলাভ করিতে হইলে,—জাতীয়জীবন গঠন করিতে হইলে,—হিন্দুজাতির নেতাকে অভিনন্দন করিতে হইলে, আমাদের হৃদয়নিহিত ধৰ্ম্মবীজকে তপস্তাদ্বারা, সংযমদ্বারা, আচারঅনুষ্ঠানের দ্বারা বদ্ধিত করিতে হইবে। কঠোর তপস্ত ভিন্ন এ জাতির পুনরুখানের সম্ভাবনা নাই । তপস্তাদ্বারা পূৰ্ব্বকালে কাৰ্য্যসিদ্ধি হইত, এখন কি হয় না ? ভারতবর্ষের ঐতিহাসিক যুগের ইতিবৃত্ত আলোচনা করিলে আমরা কি দেখিতে পাই ? আমরা দেখি, আমাদের এই ঘোর দুর্দিনেও যেখানে যেখানে তপঃপ্রভাব কিছুমাত্র ফুটিয়া উঠিয়াছে, সেখানেই একএকটি জাতীয় অভু্যত্থানের উত্তৰ হইয়াছে। যেমন কোন স্থানে বিন্দুমাত্র মিষ্টরস পাইলে পিপীলিকাশ্রেণী তাহার অন্বেষণে ধাবিত হইয়া সেই মিষ্টরসের আশ্বাদে মজিয়া যায়, এমন কি, সেই মিষ্টরসে পুঞ্জীকৃত হইয়া