পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা। J সময়ে অনেক উদামগতি সমাজসংস্কারক মহামহোপাধ্যায় রঘুনন্দনকে তাহাদের ংস্কারপথের ৰিষদিগ্ধ কণ্টক ৰলিয়া জ্ঞান করেন । বাজিক রগণ যেমন তাহাদের ভোজবাজি দেখাইবার পূৰ্ব্বে আত্মারাম সরকারকে একবার গালি না দিলে তাহাদেৱ ভেস্কিবিদ্যা সিদ্ধ হইল না মনে করে, আমাদের সমাজসংস্কারকগণও রঘুনন্দনকে একবার গালি না দিলে তাঁহাদের সংস্কারচেষ্টা বিফল হইল মনে করেন । কিন্তু আমার বিশ্বাস, বাঙালীসমাজ এই মহাত্মার নিকট বিশেষরূপে ঋণী। উক্ত মহাত্মা মম্বাদিস্মৃতিসমুদ্র মন্থনপূৰ্ব্বক তাহার অষ্টাবিংশতিতত্ত্বসঙ্কলনম্বারা আমাদের পূর্বপুরুষগণের ধৰ্ম্মচর্য্যার পথ সুগম করিয়া-দিয়া হিন্দুসমাজের যে মহোপকার সাধন করিয়া গিয়াছেন, তাহার তুলনা হয় না । বঙ্গীয় ব্রাহ্মণগণ গায়ত্ৰীসন্ধ্যাবর্জিত হইয়। এখনও পৰ্য্যন্ত যে দরোয়ান ও পাচকশ্রেণীতে পরিণত হন নাই,—এখনও যে উচ্চশ্রেণীর বাঙালীর মধ্যে ক্রমাগত সহস্ৰ সহস্র graduate ও under-graduate xtfx sttscsa,– তাহার একমাত্র কারণ রঘুনন্দনের স্মৃতি তপস্ত্য । રક્ત૧ শাস্ত্র । বিগত সহস্রাধিক বর্ষের পরাষ্ট্ৰীনতার প্রচও নিষ্পেষণে বাঙালীজাতির মানসিক বৃত্তিনিচয় যে একেবারে.ভগ্ন ও দলিত হইয়া যায় নাই, তাহার কারণ রঘুনন্দনের সংগৃহীত বিশুদ্ধ আচার-অনুষ্ঠাননিয়ম-সংযমের পালন দ্বারা উচ্চশ্রেণীর বাঙালীর মনে পুণ্য ও পবিত্রতার বল সঞ্চিত হইয়া তাহাকে elastic ( স্থিতিস্থাপকগুণবিশিষ্ট ) করিয়া রাখিয়াছে । সেই সকল কঠোর তপোনিরম এতদিন এ জাতিকে জীবিত রাখিয়াছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পাশ্চাত্য সভ্যতা ও শিক্ষার স্রোতে এখন সেই সকল সামাজিক স্বাস্থ্যপ্রদ আচার-অনুষ্ঠান ভাসিয়া যাইতেছে। এখন বাঙালীসমাজে আহারবিহারে, আচার-অনুষ্ঠানে সংযম-সহিষ্ণুতাশীলতার অভাব ক্রমেই সুস্পষ্টরূপে পরিলক্ষিত হইতেছে । তাহার পরিবর্তে সমাজে এক উদ্ধাম-উন্মুক্ত স্বেচ্ছাচারিতা ও উচ্ছ,স্বলতার রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হইতেছে। তাই এখন বাঙালীর মধ্যে পূর্বের স্তায় ক্ষণজন্ম পুরুষের সংখ্যা দিনদিনই বিরল হইতেছে । বাঙালীসমাজ এখন ক্রমেইসিস্তেজ ও অবসন্স হইয়া পড়িতেছে । - ঐযতীন্দ্রমোহন সিংহ ।