পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

હી ટુ છ. -— তথাগতের বুদ্ধত্বলাভের বিংশতিবর্ষ পরে জাৰক বৌদ্ধধৰ্ম্মে দীক্ষিত হন। তিনি বুদ্ধকে প্রত্যহ তিনবার দেখিতে পাইবেন, এই অঁাশয়ে রাজগৃঞ্জনগরে নিজের উস্তানভূমিতে একটি বিহার নিৰ্ম্মাণ করেন। ঐ ৰিহার তিনি বুদ্ধকে প্রদান করিয়াছিলেন । বিম্বিলারের মৃত্যুর পর জীবক অজাতশত্রুর গৃহচিকিৎসক হন। তিনি বালচিকিৎসায় নিপুণ ছিলেন ৰলিয়। তাহাকে “জীবক কোমারভচ্ছ” বলিত । জীবকের কথা অনুসারে একদিন অজাতশত্রু বুদ্ধদেবের উপদেশ শুনিবার জন্ত উৎসুক হন । তিনি জীবকের বিহারে গমন করিয়া বুদ্ধের উপদেশ শ্রবণপূৰ্ব্বক বৌদ্ধধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইয়াছিলেন। মগধে একসময়ে কুষ্ঠ, শোধ, ধবল, ধৰ্ম্ম ও অপস্মার, এই পঞ্চবিধ রোগের উপদ্রব হইয়াছিল । ঐ সকল রোগে আক্রাস্ত ব্যক্তিগণ জীবকের নিকটে গিয়া বলিয়াছিল— “মহাশয়, আমাদিগকে রোগমুক্ত করুন।” জীবক উত্তর দেন–“মহাশয়গণ, আমাকে অনেক কায্য করিতে হয় । আমি রাজা বিম্বিলারের চিকিৎসক । রাজার অন্তঃপুরে আমি চিকিৎসা করি। বুদ্ধপ্রমুখ ভিক্ষুসংঘেরও চিকিৎসক আমি । আমার সময় নাই, আমি আপনাদের চিকিৎসা করিতে পারিব না।” রোগাক্রান্ত ব্যক্তিগুণ জাবককে পুনরায় বলিল-“মহাশয়, আমাদের যাহকিছু সম্পত্তি আছে, আপনাকে . দিতেছি ; আমরা চিরকাল আপনার দাস হইয়৷ থাকিব; আমাদের সামুনয় প্রার্থন, স্বাপনি মামাদিগকে রোগমুক্ত করুন।” জাৰক পুনরায় .বঙ্গদর্শন। ৪র্থ বর্ষ, আশ্বিন। উত্তর করিলেন—“মহাশয়গণ, অামার অনেক কাৰ্য্য আছে, আমি আপনাদের 'চিকিৎসা করিতে পারিব না .” তখন রোগাক্রান্ত লোকেরা মনে করিল—“বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ মুখে বাস, সুখে ভোজন, স্বথে শয়ন করেন । আমরাও বৌদ্ধধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইয়। ভিক্ষুশ্রেণীমধ্যে প্রবেশ করি। তাহা হইলে ভিক্ষুগণ আমাদের শুশ্রুষা এবং জীবক আমাদের চিকিৎসা করিবেন।” এইরূপ স্থির করিয়া ঐ সকল লোক ভিক্ষুসংঘের নিকটে গিয়া প্ৰব্ৰজ্য ও উপসম্পদ। ওহণ করিল। ভিক্ষুগণ উহাদের পরিচর্য্যা করিতে লাগিলেন । জীবকও চিকিৎসাদ্বারা উহাদের রোগবিমুক্তি করিলেন । কিন্তু উহারা রোগ হইতে মুক্ত হইয়া ভিক্ষুধৰ্ম্ম পরিত্যাগপুৰ্ব্বক পুনরায় সংসারাশ্রমে প্রবিষ্ট হইল । জীবক উহা দের অবস্থা স্তর দেখি ধু জিজ্ঞাসা করিলেন —“আপনারা ধৰ্ম্মজীবন ত্যাগ করিলেন কেন ?" উহার উত্তর করিল—“আমরা এক্ষণে রোগমুক্ত হইয়াছি, আর আমাদের ধন্মের প্ররোজন নাই ।” জাবক এক্ট কথা শুনিয়া মায়াহত হইলেন এবং তথাগতের সমাপে গমন করিয়া সমস্ত বৃত্তাস্ত নিবেদন করিলেন । তথাগত ভিক্ষুসংঘকে আহবান করিয়া বণিলেন—“হে ভক্ষুগণ, আপনারা কুষ্ঠ, শোষ, ধবল, যক্ষ্মী ও অপস্মার, এই সকল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিগণকে । বৌদ্ধধৰ্ম্মে দীক্ষিত করিতে পারেন, কিন্তু কখনও উহাদিগকে প্ৰব্ৰজ বা উপসম্পদ৷ প্রদান করিবেন না, অর্থাং ভিক্ষুসম্প্রদায়ে প্রবেশ করাইবেন না ।” - ঐসতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণ ।