পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

అర్చి • বঙ্গদর্শন। [ ৪র্থ বর্ষ, আশ্বিন । । দিনাত্তের শেষ আলোটুকু যখন অবসর হইয় গেল, তখন সেই অন্ধকারে হঠাৎ পশ্চাতে পদশব্দ গুনিলা হেমনলিনী চকিত হইয় পশ্চাতে ফিরিয়া দাড়াইল। অন্নদাবাৰু কছিলেন, “ম, তুমি একলা ছাদে আসিয়াছ ? আজ আমার কেমন-একটু তন্দ্র আসিয়াছিল, কিছু টের পাই নাই।” প্রত্যহই যে র্তাহার তন্দ্র আসে, প্রত্যক্ষপ্রমাণের বিরুদ্ধেও তাহ অন্নদাবাবু অস্বীকার করিতে চেষ্টা করেন— হেমনলিনীও এমন চুপ করিয়া থাকে, যেন সে র্তাহার ঘুম লক্ষ্যই करब्र नांहे । অন্নদাবাবুকে দেখিয়া হেম আজ অত্যন্ত লজ্জিত হইল । অন্নদাবাবুরও মনের মধ্যে একটা ঘা লাগিল। রমেশের ব্যাপারটা ক্রমে হেমনলিনীর জীবন হইতে দুরে সরিয়া যাইতেছে, এই আশা করিয়া কয়দিন তাহার হৃদয়টা লঘু হইয়া আসিয়াছিল—আজ সন্ধ্যার অন্ধকারে হেমকে একলা ছাদের উপর দেখিয়া जांवांब्र उँांशंद्र भन श्रांभकांब्र भूर्ण रुहेब्र। উঠিল । একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিলেন। হেম তাহা শুনিতে পাইল। সেই দীর্ঘনিশ্বাসের মধ্যে এই বৃদ্ধের ষে একটি ক্লাস্তি ও পরাভবের নৈরাপ্ত বাজিয়া উঠিল, তাহ সেই মুহূর্তেই হেমনলিনীর নয়নপল্লব আৰ্দ্ৰ করিয়া দিল । তৎক্ষণাৎ সে পিতার কাছে আসিয়া কছিল, “বাবা, চল আমাদের বসিবার ঘরে বাই—এখানে ছিম পড়িতেছে।” , জন্মদাবাবু কোনো কথা না ঘলিয়া আস্তে জান্তে নীচে নামিয়া আসিলেন ও চুপ করিয়া অত্যন্ত কেদারাটির উপরে বসিলেন। হেম নলিনী তাছার পাশে একটি চৌকি টানিয়া আনিয়া বসিল ও তাড়াতাড়ি একটা ধোনে কথোপকথনের প্রসঙ্গ তুলিবার জন্ত বলিল— “বাবা, নলিনাক্ষবাবু কেমন চমৎকার লোক !” নলিনাক্ষবাবুকে হেমনলিনীর ঠিক এতটা চমৎকার ঠেকে নাই—কিন্তু নিজের মনের বিষণ্ণতা অপ্রমাণ করিৰার জন্ত কথাটাতে কিছু অতিরিক্ত উদ্যম প্রয়োগ করিয়া বসিল । এ কথা যেন কেহ না বলে যে, পৃথিবীতে সকল লোক এবং সকল জিনিষের উপরেই হেমনলিনীর ঔদাসীন্ত জন্মিয়া গেছে । অন্নদাবাৰুও উৎফুল্ল হইয়া উঠিলেন। তিনি কহিলেন, “ছেলেটিকে আমারও বড় ভাল লাগিয়াছে । বয়সে বোধ কলি আমার যোগেনেরই সমান হইবে, কিন্তু মু• দেখিলে যেন বালক বোধ হয় । অথচ চোখস্থটো দেখিয়াছ হেম ! আমি ত এমন চোখ দেখি নাই । তাহার চোখে তাকাইয়া আমার কি-একটা মনে হইতে লাগিল বলিতে পারি না। তুমি লক্ষ্য কর নাই ?” হেম কহিল—“না বাবা, আমি ঠিক ತೆತ್ತ চোখের দিকে তেমন করিয়া চাহি নাই, কিন্তু তাহার হাসিটি বড় প্রসন্ন।” অন্নদা। ঠিক বলিয়াছ, তাহার হাসির একটা বিশেষত্ব অাছে বটে ! মনে হয় যেন, যাহা-কিছু দেখিতেছেন, সকল হইতেই একটা প্রসন্নতা প্রতিফলিত হইয়া তাহার মুখের উপরে অসিয়া পড়িতেছে । হেম কিছু আশ্চৰ্য্য হইয়া গেল। ইহার পুৰ্ব্বে কোনো লোকেরই সম্বন্ধে অন্নদীখাৰু এপরিমাণ উৎসাহ ও আনন্দ প্রকাশ করেন নাই।