পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

983' ষে পরমরহস্তময় আছেন, তাহাকে অব্যবহিতভাবে সৰ্ব্বত্র উপলব্ধি করিব । দেখুন না কেন, আমরা সচরাচর যে ভাষায় কথা কহিয়া থাকি, কাব্য তাছারই.চরমোৎকর্ষ, সেই উৎকর্ষ তাহাকে এমন শক্তিদান করে, যাহাতে সে বর্ণনাতীত সৌন্দৰ্য্যকে প্রকাশ করিতে পারে । আমরা সচরাচর কথাবাৰ্ত্তার মধ্যেই ভাবপ্রকাশের সুবিধার জন্য যে মুরের আভাস লাগাইয়া থাকি, তাহারই চরমোৎকর্ষ সঙ্গীত—সেই উৎকৰ্ষ লাভ করিয়া সঙ্গীত অনিৰ্ব্বচনীয়কে আমাদের চিত্তের মধ্যে সঞ্চার করিয়া দেয়। তেম্নি আমরা নিশ্বাসপ্রশ্বাস, দর্শনম্পর্শ প্রভৃতির দ্বারা সাধারণভাবে নিয়তই বিশ্বকে উপলব্ধি করিতেছি—কিন্তু সেই ক্রিয়াগুলির বিশেষভাবে যদি উৎকর্ষসাধন করিয়া তুলি, তবে নিখিল ব্যাপ্ত করিয়া যে অনিৰ্ব্বচনীয় আছেন, তাহাকে আমাদের অন্তরের অস্তরে একান্তভাবে গ্রহণ করিতে পারি। আমি মনে করি, ইছাই প্রত্যক্ষলাভ। যে বাণী জলে-স্থলে-আকাশে, অগ্নিতে-বায়ুতে, খাদ্যে-পানীয়ে আছে, আমি আমার চক্ষু-কর্ণ নাসিক-রসন-ত্বকৃকে, আমার বুদ্ধিকে সৰ্ব্বাঙ্গেমনে সেই বাণী, সেই মন্ত্র গ্রহণে নিযুক্ত করিস্বাছি—ইহাতে র্যাহারা দলের লোককে হারাইলেন বলিয়া ক্ষুঃ হইতেছেন, তাহাদিগকে আমি এই কথা বলিতে চাই ষে,— সকলকেই লাভ করিব, এই আমার সাধন ; কাংকেই হারাইব, এমন আমার অভিপ্রার নহে । হেমনলিনী একাগ্রমনে ৰলিনাক্ষের কথা শুনিতেছিল। নলিনাক্ষ চুপ করিবামাক্স সে অর্লঙ্কোচে জিজ্ঞাসা করিল- “আপনার বঙ্গদর্শন । , { ৪র্থ বর্ষ, কাক্টিক । বিশেষ ক্ষমতা থাকিতে পারে, কিন্তু বিশ্বের এই বাণী কি সকলেই শুনিতে পারিবে ?” নলিনাক্ষ কহিল—“দেখুন, আমরা সকলে অত্যন্ত বেশি শিক্ষিত হইয়াছি— এটা মাটি, ওটা জল, এটা তুচ্ছ, ওটা নিজীৰ, এই বলিয়া প্রায় সমস্ত বিশ্বকেই আমরা দুরে ফেলিয়াছি । তাই এই প্রত্যক্ষ বিশ্বের উপর চিত্তকে যথার্থভাবে প্ররোগ করিয়া ইহা হইতে যাহা গ্রহণ করিবার, তাহা গ্রহণ করিতে পারি না—তাই একমাত্র মামুষের বাক্যের দাস হইয়া পড়িয়াছি। এ কথা ভাবি না, বাক) ত একটা প্রতিফলিত পদার্থমাত্ৰ-সেই বাক্য সত্য ও হইতে পারে, মিথ্যাও হইতে পারে –কিন্তু যে বিশ্ব সত্যেরই নিঝরধারা, একেবারে সেই বিশ্বের মধ্যেই করপুট ডুবাইবা অমৃতরস গ্রহণ করিলে প্রবঞ্চিত হইব না। আমরা যে শৈশব হইতে কেবল মামুষের স্বাক্য শোনাকেই শিক্ষা মনে করিতে অভ্যাস করিয়াছি— ঈশ্বরের পাঠশালায়, এই মুৰিপুল জল-স্থলআকাশের কাছে অকৃত্রিম শ্রদ্ধার সহিত যাই না, ইছাতেই আমাদিগকে অন্ধ ও বধির করিয়াছে।” so হেমনলিন জিজ্ঞাসা করিল, “এই পুৰ্ব্বশিক্ষার বন্ধন হইতে নিজেকে মুক্ত করা কি কঠিন " " C. নলিনাক্ষ । কঠিন বটে। প্রকৃতিভেদে । কুণহারে কাছে বেশি কঠিন, কাছারে। কাছে অল্প কঠিন। বাক্যের খাচায় যে মাহুৰপক্ষী আবদ্ধ থাকির পরের দত্ত খাপ্ত ঋইয়। বঁচির আছে, বিশ্বের আলোকধৌত জাকাশে উড়িয়া নিজের থাপ্ত জানন্দে