পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সঙ্কর সংখ্যা । ] তাহা স্কন্ধর করিয়া আঁকিতে প্রবুদ্ধ হইত। কল্পনা ও ভাবের রাজ্যে সকল কথা ব্যক্ত করিয়া ফেলিলে দর্শক কি শ্রোতার মনের চক্ষু ও মনের কর্ণের জন্য আর কি রাখা হইল । সহস্ৰ চেষ্টায় বৈকুণ্ঠধামকে দৃগুপটে আঁকিতে চেষ্টা করিলেও দশকের চক্ষে আদর্শ খৰ্ব্ব হইয়! যাইবে, কিন্তু দশককে কথার ইঙ্গিত দিয়া যদি র্তাহার কল্পনাকে সজাগ করিয়া দেওয়া হয়, তবে কল্পনাদেবী যাহা অাকিবেন, হটালীর চিত্র করও তাহা কখনই পরিবে না । যাত্রার গানগুলি শ্রোতার মনের ভিতর দিয়া নবস্থষ্ট নানা বিচিত্রছন্দ ও রাগিণীতে চিত্ত ভরিয়া ফেলিত । গানটি যেমন স্মৃতিতে গাথিয়া-অনিয়া কল্পনার দ্বারা তাহ পল্পবিত করা যায়, কথাগুলিকে সেরূপ করা যায় না । রঙ্গালয়ে গান না আছে, তাহা নহে - কিন্তু গান সেস্থানে কথার আড়ালে পড়ে । আমি অপ্রেরর_কথা বলিতেছি না, আমাদের রঙ্গালুয়ে অপেয়া এখনও সেরূপ প্রাধান্তলাভ করে নাই । এই যাত্রাপ্রসঙ্গে প্রভাসমিলনের সেই দ্বারীর নিকট রাণীর অনুনয়ের দৃপ্ত মনে পড়ে কোথায় দ্বার, কোথায় দ্বারা, কোথায় মথুরা ! কোন দৃপ্ত নাই, রাণী বালকবৃন্দের সঙ্গে একত্রে মিলিয়া গাম গাছিতৈছেন, কিন্তু শ্রোতা সেই যাত্রার বাহ দৃশুপটাদির অভাবের সকল কথা ভুলিয়া গিয়াছেন, গানের করুণ, ছন তাহাকে সত্যসত্যই মথুরাপুরীতে লইয়া, গিয়া দুঃখিনী যশোদাকে জীবস্ত করিয়া যাত্রা ও থিয়েটার । ৩৫১ সরাইয়া. দিতেছে, সমস্ত মাতৃহৃদয় ব্যাকুলভাবে লুটাইয় পণ্ডিতেছে, তখন যজ্ঞস্থলে শ্ৰীকৃষ্ণের সহসা মাতাকৈ মনে পড়িল— বোধ হয়, মাতৃহৃদয়ের এই ঘোর দুঃখ কোন অলক্ষিত তন্ত্রীস্পর্শে মাতার শোকমুহমান চিত্রটি মনে জাগাইয়াছিল যজ্ঞস্থলে আর এক দৃশু উপস্থিত হইল ; মথুরার মহারাজের হস্ত হইতে যজ্ঞের বারিপূর্ণ ভৃঙ্গারটি খসিয়া পড়িয়াছে, তিনি র্কাদিয়া বলরামের হাত ধরিয়া গাহিতে লাগিলেন, “দাদ। বল বল, আমার ছখিনা মা কোথায় রেল” সেই মনোহর রাগিণীর সকরুণ আৰ্ত্তিময় উচ্ছাসে শ্ৰোতৃকুল আকুল ইহঁতেন ; অভিনেতা, দশক, একসঙ্গে চক্ষুজলে সকলের মুখ ভাসিয়া যাহত- বাৎসল্য সজাগ হইয়া উঠিত ; পদার অস্তরালে স্ত্রালোকগণের হৃদয়ে শিশুর জন্ত করুণ ব্যথা উথলিয়া উঠিত ; মৃত মাতদিগকে মনে করিয়া যুবকগণের মুখ জলভরা মেঘের মত হুইত ; যাত্রাভঙ্গের বহুদিন, বহু বৎসর পরেও শ্রোতা স্মরণ করিত—“আমার ছখিনা মা কোথায় গেল ?” কই, সেরূপ ভাব ত থিয়েটারে হয় না। থিয়েটার নিষ্ঠুরতা ব! বৰ্ব্বরতার চিত্র দেখাইয়৷ ক্ষণিক উত্তেজনার উদ্রেক করে, কিন্তু পবিত্র করুণাকে এরূপ মুক্তি মতী করিতে পারে না । দেশের খাটিভাবের প্রতি লক্ষ্য না রাখিয়৷ কৃত্রিম আকাজক ও মনোভাবের বাইল্যের স্বষ্টি করিয়া আমাদের রঙ্গভূমিগুলি আত্মবঞ্চনা করিয়া থাকুে । যাত্রার এখন আর সে সরলতাৱ নাই —স্বদেশহিতৈষামূলক বক্তৃতা এখন যাত্রায় ঢুকিয়াছে, দেখাইতেছে। সেই বিলাপ,"সেই আমি • গার্হস্থ্য মুখদুঃখের চিত্র জীবন্ত কৱ! এখন উত্তরে যখন দ্বfরী কঠোর ভাষায় তাহাকে তাহার হেয় মনে করে ;–ভারত-ইতিহাসের