পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম সংখ্যা । ] বপন করিয়া রাখে, এবং পরে বন্ত ছাড়িয়া • গেলে সেই বীজোৎপন্ন অঙ্কুর তাহার সমস্ত ক্ষেত্রে লাগাইয়া দেয়। আজ যখন সমগ্র পৃথিবী মুসভ্যজাতিগণের আস্থরিক-বলপ্রসূত ভীষণ বিদ্বেষ, জিঘাংসা, স্বার্থপরতা ও শোণিতপিপাসার বহি-ত সমাবৃত হইয়া পড়িয়াছে, তখন কে জানে, বিধাতার মঙ্গল” বিধানে এই ক্ষুদ্রদেশে, হিন্দুজাতির মধ্যে, প্রাচীনসভ্যতাপ্রস্থত শাস্তি, প্রীতি, পবিত্রতা প্রভৃতি গুণনিচয়ের বীজ জগতের ভাবী মঙ্গলের জন্ত রক্ষিত হইতেছে না ? কে জানে, এই সকল ছদ্ধর্ষজাতি যখন • পরস্পরের সহিত যুদ্ধবিগ্রহদ্বারা ক্লান্ত হইয়া পড়িবে, যখন অৰিরত ভোগলালসার চল্পিতার্থতাদ্বারা তাহাদের হৃদয়ে অবসাদ আসিয়া উপস্থিত হইবে, তখন তাহারা এই ঋষি প্রষৰ্ত্তিত প্রাচীনসভ্যতার শান্তিপ্রাতিপবিত্রতাময়ী সুধা পানের জন্ত কাতরকণ্ঠে লালায়িত না হইবে ? . তাই আমার মনে হয়, আমাদের জাতীয়জীবনের এই মহাপরিবর্তনসময়ে, - transiperioda-stai ista stazi আমাদের প্রাচীন সভ্যতা ও পাশ্চাত্য সভ্য tion • সংযুম। • ৩৭১ তার মধ্যস্থলে,- ভোগসংযম ও ভোগপিপাসার সঙ্গমস্থলে-নিবৃত্তিমাৰ্গ ও প্রযুক্তি মার্গের সন্ধিস্থলে—দড়ছিয়া কিংকৰ্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া ভাবিক্রেছি, তখন আমাদের জাতীয় ইতিহাস রামায়ণরূপ অভ্রভেদী শৈলশিখরে, সেই আদর্শব্ৰাহ্মণ, সাবিত্রীমন্ত্রের দ্রষ্ট, শ্রীরামচন্দ্রের শিক্ষাগুরু ঋষিশ্রেষ্ঠ বিশ্বামিত্র দাড়াইয়া আমাদিগকে ইঙ্গিত করিয়া বলিতেছেন— "হে আৰ্য্যবংশধরগণ, তোমরা কালের স্রোতে ভাসিয়া যাইও না, আমারই মত সংষমমার্গের অমুসরণ কর। দেখ, আমি ষে তপস্তাবলে ক্ষত্ৰিয়ত্ব হইতে রাজুধিত্বে, রাজর্ষিত্ব হইতে ঋষিত্বে, ঋষিত্ব হইতে মহৰ্ষিত্বে, মহর্ধিত্ব হইতে ব্রহ্মধিত্বে উন্নীত হইয়াছি, তোমরাও সেই তপস্তার আশ্রয় কর । আমি যেরূপ দুর্জয় সাহস, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং অপ্রতিহত অধ্যক সায়কে আশ্রয় করিয়া পুরুষকারের শাণিত কৃপাণে দৈবের বন্ধন ছিন্ন করিয়াছিলাম, তোমরাও সেই দুজ্জয় সাহস, দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ও অপ্রতিহত অধ্যবসায়কে আশ্রয় কর । আমি ভগবানের নিকট প্রার্থনা করি, তোমরা বর্তমান ভীষণ জীবনসংগ্রামে জয়ী হইয়া এই সিদ্ধর্ষিসেবিত পুণ্যভূমির মুখোজ্জল কর।” শ্ৰযতীন্দ্রমোহন সিংহ ।