পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

.সপ্তম সংখ্যা । ] পূজার পোষাক |

টাটুম্বোচ্চাতে এখন কে চড়ে ? খানিক , পরে নরেন্দ্রনাথ কহিলেন, “মনোরম যে বড় চুপ কোরে রয়েচ ? তোমার কিছু জিজ্ঞাসা করবার নেই ?” মনোরম হাসিল, কহিল, “আছে বই কি ! আমি যে সেই তুলসীগাছটি পুতিয়াছিলাম, সেটি অাছে ত ?” “বিলক্ষণ ! আছে না ত কি ? তুলসীগাছের যত্ন সকলেই করে, কাউকে কিছু বলতে হর না ।” রাত্রে আর কোন কথা হইল না । পরদিবস প্রভাতে অভ্যাসমত নরেন্দ্রনাথ হাটিয়া একটু বেড়াইয়া আসিলেন । বাড়ীতে ফিরিয়া যখন চ৷ থাইতে বসিলেন, আবার সকলে তাহাকে ঘিরিল । চা খাইয়া, নরেন্দ্রনাথ আলবোলার নল মুখে লইয়া বসিলেন, কছিলেন, “এইবার পূজার জিনিয। কাপড়চোপড় কই সব দেখি ?” মনোরম ছেলেদের কাপড়, জুতা, মেয়েদের শাড়ী, জ্যাকেট সমস্ত লইয় আদিল । স্বলোচনা তাহাকে যে গরদ দিয়া ছিলেন, সেখানিও লইয়া আসিল, কহিল, “ৰউ আমাকে এখানি দিয়াছেন।” স্বলোঁচন লজ্জিতভাবে মৃত্যুছ কহিলেন, “ও বুঝি আবার দেখাতে হয় ?” নরেন্দ্রনাথ কহিলেন, “ক্লেন দেখাবে না ? ঠিক দেখান হয়েচে। তুমি ওকে পুজার জিনিষ দিয়েচ, ও দেখাবে না ?” সকলের সামগ্ৰী আসিল, তখন ਜਯੋনাথ স্বলোচনাকে কহিলেন, “তোমার জিনিষ क्लहे - o স্থলোচল° ধীরে ধীরে আপনার ঘরে প্রবেশ করিলেন। দেখিয়া মনোরম নীরব বিশ্বয়ের ইঙ্গুিত করিয়া নরেন্দ্রনাথের দিকে চাহিল । তিনি সে ইঙ্গিত বুঝিয়া ੋਸ਼ হাসিলেন । .. 齡 সুলোচনা ফিরিয়৷ আসিলে সকলে দেখিল, তাহার হাতে শাড়ী কি হার কিছু নাই, আছে সিমলার একখানি কোচান উৎকৃষ্ট ধুতি, আর একখানি সেইরকম কোচান চাদর। সেই ধুতিচাদর স্বামীর পদতলে রাধিয়া, গলায় বস্ত্রাঞ্চল দিয়া, স্বামীর পাদপদ্মরেণু মস্তকে ধারণ করিলেন । আবার যখন মুলোচনা উঠিয়া দাড়াইলেন, তখন তাহার সে সঙ্কোচলজ্জা যেন দূর হইয়া গেল, রূপলাবণ্য-মুখসৌভাগ্যের স্থির দেবীমূৰ্ত্তির দ্যায় দাড়াইলেন । স্বলোচনা যখন তাহার পদানত, সেইসময় নরেন্দ্রনাথ একবার মনোরমার দিকে কটাক্ষপাত করিলেন, ইঙ্গিতে কহিলেন, “এ কথা ত তুমি আমায় বল নাই!” তাহার পর তাহার গম্ভীর মুখের দৃষ্টি বড় গভারকোমল হইল। পত্নী প্রদত্ত পূজার উপহারস্বরূপ ধুতিচাদর তুলিয়া লইলেন। তাহার পর স্বলোচনার মুখের দিকে না চাহিয়৷ কহিলেন, “তোমার শাড়ী অার হার কোথায় ?” “তৈয়ারি হয় নাই ।” “কেন ?” . “আমার স্টার-বছরের কাপড় বেশ আছে, বছর বছর শাড়ীর কি আবশুক ? হার গড়ন হয় নি।” মলোচন, স্থিরদৃষ্টিতে, স্বামীর মুখের দিকে চুহিয়া ছিলেন। তাহার পরে যে কথা হইল, নরেন্দ্রনাথের যেন একটু ৰাধবাধ ঠেকিতে লাগিল,