পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৪১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$o 8 . এবং বর্তমান ঐতিহাসিক গবেষণার ভাবজ্ঞ ও রসজ্ঞ লোক হওয়া চাই। ইছারা প্রত্যেক পাইবৎসর অন্তর আপনাদের গবেষণার ফল পুস্তকাকায়ে প্রকাশ করিবেন। আশা হয়, পচিশ-ত্রিশ বৎসর এইরূপ কাৰ্য্য করিলে ভারতের প্রাচীন ইতিবৃত্ত অনেক পরিমাণে সংগৃহীত হইতে পারে। আমরা সচরাচর এই বলিয়। দুঃখ করি যে, এদেশে বিশ্বাসযোগ্য ইতিবৃত্ত নাই । অলৌকিক ঘটনাপূর্ণ পুরাণসকল ইতিবৃত্তের স্থান অধিকার করিয়া রহিয়াছে । সে সকল গ্রন্থে সত্য ও কল্পনা এরূপ প্রচুরমাত্রায় মিশ্রিত যে, সেই সকল বর্ণনাস্তুপের মধ্য হইতে সত্য উদ্ধার করা, নদীস্রোতধেীত বালুকায়াশির মধ্য হইতে স্বর্ণরেখুসংগ্ৰহ অপেক্ষীও ক্লেশ কয়। এই এক মহাপ্রশ্ন পুরাতত্ত্বানুসন্ধায়ী ব্যক্তিমাত্রেরই মনে উদিত হয়, এই প্রাচ্যদেশবাসী আর্য্যসস্তানগণ পুরাবৃত্তরচনায় বিমুখ ছিলেন কেন ? যাহার রামায়ণ-মহাভারতের স্তায় বৃহৎকায় গ্রন্থ রচনা করিতে পারিয়াছিলেন, বিবিধ শাস্ত্র প্রণয়নে যাহাঁদের কিছুমাত্র আলস্ত ছিল না, এক এক শাখাপ্রশাখাসমন্বিত দর্শনের জটিল সমস্ত সকলের মধ্যে প্রবেশের ধৈর্য্য যাহাদের ছিল, সেই প্রাচীন হিন্দুগণ কেন আপনাদের দেশের ইতিবৃত্ত্বরচনায় বিমুখ ছিলেন । ইহাদের আচরণের সহিত পাশ্চাত্য জাতৃিসকলের আচরণের কি পার্থক্য লক্ষিত হয়! তৎঠদেশে সহস্ৰ সহস্ৰ বৎসরের পূর্বকার ঘটনাসকল কেমন যথাযথক্সপে, ৰর্ণিত রহিস্থাছে। সে সকল ৰণনার উপরে কেমন অগন্ধোচে নির্ভর করিতে পারা যায়। এরূপ [ ৪র্থ বর্ষ, অগ্রহায়ণ । ইতিবৃত্তরচনাপ্রবৃত্তি কেন আমাদের দেশে লক্ষিত হয় নাই ? ইহার কায়ণ বোধ হয় জাতীয় প্রকৃতির মধ্যে অন্বেষণ করিতে হুইবে । ভারতবাসী আর্য্যদিগের প্রকৃতিতে এমন কিছু আছে, যাহা ইতিবৃত্তরচনার অমুকুল নহে । তাহা ন হইলে এখানকার সাহিত্যে ইতিবৃত্ত দেথা দিতই দিত । অপর দিকে ইউরোপবাসীদের প্রকৃতিতে এমন কিছু অাছে, যাহা ইতিবৃত্তরচনার অমুকুল । এই প্রশ্ন হৃদয়ে লইয়। উভয় দেশের জাতীয় প্রকৃতির অস্থশীলনে প্রবৃত্ত হইলে দেখা যায় যে, অস্তুমুখীনতা বা ধ্যাননিষ্ঠতা ভারতীয়দিগের । জাতীয় প্রকৃতি । বাহ বস্তর প্রতি অনাস্থা আমাদের প্রকৃতি ও শিক্ষাগ উসংস্কার বলিলে অতু্যক্তি হয় না । তৎপরে এখানে অতি প্রাচীনতম কাল হইতে অনাসক্তিধৰ্ম্মের প্রচার হইয়া আসিতেছে। এখানকার জ্ঞানিগণ ও ধৰ্ম্মার্থিগণ চিরদিন বাfছরের জগৎকে ভুলিয়া ভিতরেই শ্রেয়েঃ পথ অন্বেষণ করিয়াছেন । আমাদের অস্থিমজ্জাতে এই কথা আছে যে, জ্ঞানরাজ্যই সত্য রাজ্য, জ্ঞানই শ্রেষ্ঠ, বহির্বিষয় ক্ষণিক ছায়ামাত্র । এর্থভাবাপন্ন ব্যক্তিগণ স্বভাবত ৰহির্জগতের প্রতি উদাসীন হইয়া থাকেন। জগতের ধনধান্য কে,কি পরিমাণে অধিকার করিল ? হিন্দু রাজা কি যবননরপতি কে রাজসিংহা সনে বসিলেন, তাহাতে কি আসে-যায় ? জ্ঞানরাজ্যে প্রবেশ করিয়া আমি যtছ। দেখিতেছি, তাহ কে কাড়িয়া লইতে পারে ? তাহ যতক্ষণ আছে, ততন ੰਭ বিষয় থাকিল ৰ ন থাকিল, তাহাতে কি ?--