পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম সংখ্যা । ] ব্রাহ্মণ ॥৭ '8రి যেমন বাঙালীজন্ম বিফল ভাৰিয়া উবন্ধনে মুক্তিলাভের চেষ্টা করা মস্তিষ্কবিকারের প্রমাণরূপে উল্লিখিত হইতে পারে, প্রাচ্য প্রতীচ্য নহে বলিয়া হাহাকার করাও সেইরূপ । প্রাচ্য ও প্রতীচ্য সভ্যতার মুলহুত্রেই প্রবল পার্থক্য। প্রাচ্যসভ্যতা সংযমকেই মানবজীবনের চরম উৎকর্ষ বলিয়া ঘোষণা করিয়া আসিরাছে ; প্রতীচ্যসভ্যতা সম্ভোগকে তাহারও উদ্ধে আসন প্রদান করিয়া থাকে। প্রতীচ্য কাড়িয়া খায় ; প্রাচ্য বিলাইয়া দিয়াই আপনাকে কৃতকৃতাৰ্থ জ্ঞান করে । আমাদের *প্রতীচ্যশিক্ষা অমাদিগকে কাড়িয় খাইবার লালসা দান করিয়া অশান্ত করিতেছে ; কাড়িয়া খাইবার মত বাহুবল ও স্বাধীনতা দিলে, আমিরাও এতদিনে দানব হইয়া উঠিতাম । অামাদিগের ধৰ্ম্ম মানবধৰ্ম্ম, মানবের ক্রমোন্নতিলাভেই তাহা আত্মতৃপ্ত হইয়া সংক্রলালাভ করে । সে ধৰ্ম্মের অনুশীলন করিতে হইলে, পরকে আপন করিতে হয় ; ভেদবুদ্ধি, বিসর্জন দিতে হয়; নরনারীর কল্যাণকৃামনায় আপনার ক্ষুদ্র স্বাৰ্থ বিস্কৃত হইতে হয় । বাহুবলে প্রাচ্যসভ্যতা বিস্তৃত হইতে পারে না । তাহ পাশবধৰ্ম্ম বলিয়াই পরিচিত। ব্রাহ্মণ মামৰধৰ্ম্ম বিস্তার করিবার জন্স সৰ্ব্বভূতের কল্যাণকামনার দীর্ঘতপস্তায় নিযুক্ত হইয়াছিলেন । তপঃসিদ্ধ ব্রাহ্মণ যখন উদারনীতির উপদেশ বিতরণ করিতেন, তখন জনসমাজ তাহার মর্য্যাদারক্ষণ করিতে পার্কুিল, ভারতবর্ষের ইতিহাস অঙ্গু ভাৰে লিখিত হইতে পারিত। এখনও We ব্রাহ্মণকে সমাজপতি করিলে, তাহার শাসন জনসমাজের পক্ষে অসহ হইয়া উঠিবে। , তাহার পূৰ্ব্বে জনসমাজকে প্রাচ্যসভ্যতার মুলতৰ নুতন করিয়া বুঝাইয় দেওয়া আবশুক । ব্রাহ্মণকে আহবান করিলেই সকল কর্তব্যের শেষ হইল না । ব্রাহ্মণের বাক্যপালনের জষ্ঠ জনসমাজকে সুশিক্ষিত করাও আবশুক। ব্রাহ্মণ পাদ্য-অৰ্ঘ্য গ্রহণ করিয়া আসনে মুখোপবিষ্ট হইবামাত্রই তারারবে শ্রতিপাঠ করিয়া কহিবেন—“তপসা ব্ৰহ্ম বিজিজ্ঞাসস্ব” ; জনসমাজ তাহাতে কিছুমাত্র উপকার লাভ করিবে না । কৌতুহলবশত একবার ব্রাহ্মণের মুথের দিকে চাহিয়া দেখিবে, পরক্ষণেই তাহার উপদেশবাক্য নিতান্ত অর্থহীন বলিক্ষ্মা সমালোচনা করিতে করিতে গৃহকোটরে প্রত্যাবর্তন করিবে। সাধুজীবন লাভ করিবার লালসা স্বাভাবিক হইলেs, সাধুজীবন লাভ করা আয়াসসাধ্য ব্যাপার । তাহারই নাম তপস্ত। তাছার আরম্ভেই বিধিনিষেধের তীব্রতাড়না, তাহারই নাম ংযম । জনসমাজ কি সে তাড়না সহ্য করিযার যোগ্য হইয়া উঠিয়াছে ? ভারতবর্ষের বর্তমান জনসমাজ নিতান্ত অচেতন অবস্থায় দিনপাত করিতেছে। চেতনা থাকিলে, ধিক্কারেই তাহাকে স্বদেশের দিকে আকর্ষণ করিতে পারিত। স্বদেশপ্রেমিক হওরা দূরে থাকুক, আমরা সকলেই অল্পাধিকমাত্রায় স্বদেশদ্রোহী। ধাহাতে তারতবর্ষের কল্যাণ, তাহা আমাদিগের দ্বার অনুষ্ঠিত হয় না ; যাহাতে তাহার সমূহ অকলু্যাণ, তাহাই নিয়ত অনুষ্ঠিত ईश्ङएइ !