পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

85 রছিয়াছে—কিন্তু সেই দীন তাপসীমূৰ্ত্তিতে অপূৰ্ব্ব ধৈৰ্য্য স্বচিত । , "নাত্যৰ গুহ্যতে দেৰী গঙ্গেৰ জলদীগমে।" ‘জলুদাগমে গঙ্গার দ্যায় ইনি ক্ষোভ রহিত ।” যখন রাক্ষসীর অসিয়া কেহ শূল দ্বারা তাহার প্লীহা উৎপাটন করিতে চাহিল,—হরিজটা, বিকটা,বিনতা প্রভৃতি বিরূপ চেড়ীবৃন্দের মধ্যে কেৰু বা র্তাহাকে “মুষ্টিমুদ্যম্য তর্জতি”, কেহ বা “ত্রাময়তি মহৎ শূলং”—কেহ কেহ বা মাংসলোলুপ স্তেনপক্ষীর স্তয়ে তাহার প্রতি উন্মুখ হইয়া তাওবলীলা প্রকট করিতে লাগিল, তখন একবার সীতার সেই সুগম্ভীর ধৈৰ্য্যের বঁধে টুটিয়া গিয়াছিল,—তিনি “ধৈর্য্যমুৎস্বজা স্লোদিতি,”—ধৈর্য্যত্যাগ করিয়া কঁাদিতে লাগিলেন। আবার যখন রাবণ নানাপ্রকার লোভপ্রদর্শনেও তাহাকে বশীভূত করিতে অসমর্থ হইয়া মুষ্টিপ্রহার করিতে অগ্রসর হইল— ধান্তমালিনী আসিয়া রাবণকে ফিরাইয়া লইয়া যাইতে চেষ্টা করিল--তখনও সীতার ধৈর্য্য অপগত হইল, রক্ষেণহস্তে অপমানিত সীত ধুলিলুষ্ঠিত হইরা কাদিতে লাগিলেন। কিন্তু এই উৎকট ৰিপদরাশির মধ্যেও তিনি পবিত্র ধজ্ঞাপ্পির কায় স্বীয় পুণ্যপ্রভায় দীপ্ত ছিলেন, প্তাহার অশ্রুসিক্ত মুখে স্বর্গের তেজ ফুরিত হইতেছিল। হনুমান এই বিপন্ন সাধবীর প্রতি পূজকের স্থার তক্তির চক্ষে দৃষ্টিপাত করিতে লাগিলেন, তাহার দুই চক্ষু অশ্রুপূর্ণ হইয়। উঠিল। . ধম্মান শিংশপাৰ্বক্ষারূঢ় ছিলেন, কি উপায়ে গীতার সহিত কথাবার্তা কহিবেন, প্রথমত তাহা ভাবিয়া স্থির করিতে পারিলেন না। হঠাৎ উপস্থিত হইলে সীতা তাহাকে দেখিয়ু बजनर्मि। [ ৪র্থ বর্ষ, বৈশাখ ভীত হইবেন, রাক্ষসগণ র্তাহাকে ধরিয়া ফেলিবে—র্তাহার সীতার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের পূৰ্ব্বেই সমূহ গোলযোগ উৎপন্ন হইবে। চেড়ীগণ যখন ত্ৰিজটার স্বপ্নবৃত্তান্ত শুনিবার জন্ত সীতাকে ছাড়িয়া একটু দূরে গিয়াছে, শুেধ রজনীতে বিনিদ্র সীতা অশোকতরুর শাখা অবলম্বন করিয়া দাড়াইয়া আছেন, মুকেশীর বক্র কেশগুচ্ছ র্তাহার কর্ণাস্তভাগে বিলম্বিত হইয়া পড়িয়াছে, তখন হম্মান শিংশপাবৃক্ষ হইতে মৃদুস্বরে রামের ইতিহাস কীৰ্ত্তন করিতে লাগিলেন ; সহসা অনিদিষ্ট স্থান হইতে আশাতীতরূপে প্রিয় রামকথা শুনিয়া সীতার গও বাহিয়া অবিরলধারে জল পড়িতে লাগিল । তিনি স্বীয় সুন্দর মুখমণ্ডল ঈষৎ উন্নমিত করিয়া অশ্রুপূর্ণচক্ষে শিংশপাৰ্বক্ষের উৰ্দ্ধদিকে দৃষ্টি করিলেন—তাহার কৃষ্ণ ও বক্ৰ কেশান্ত নিবিড়ভাবে তাছার মুখপদ্ম ঘিরিয়া পড়িল । হনুমান এই সুযোগে করজোড়ে বলিতে লাগিলেন— “ক নু পদ্মপলাশক্ষি ক্লিক্সকে শেয়বাসিনি । দ্রুমস্ত শাখামালম্ব্য তিষ্ঠসি ত্বমনিন্দিত্তে । কিমৰ্থং তব নেত্রাভ্যং বারি প্রবতি শোকজৰ্ম্ম । পুণ্ডরীকপলাশাভ্যাং বিপ্রকীর্ণমিবেদকমু " 'হে 'পদ্মপলাশাক্ষি, কিন্নকোষেয়বাসিনি, অনিন্দিতে, আপনি কে, অশোকের শাখা ধরিয়া দাড়াইয়া আছেন ? পদ্মপলাশদলের স্থায়, আপনার দুইটি মুন্দর চক্ষু অশ্রুবর্ষণ করিতেছে কেন ?” _. সীতা নিজের পরিচয় দিয়া হনুমানকে নিয়ে অবতরণক্ষরিতে ইক্ষিত করিলে, হকুমান তাহার দৈত্যের কথা সীতাকে জ্ঞাপন করিলেন ।