পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় চতুর্থ খণ্ড.djvu/৬৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ সংখ্যা । ] দিনের, জন্তও উৎসাহ হয় না। জীবনের প্রদীপটিতে যদি আলোক জালাইতে হয়, তবে সে কি এমন এলোমেলে। হাওয়ার মুখে চলে ? অামাদের দেশে এখন নিভৃতে চিন্তা ও নিঃশবো কাজ করিবার দিন- ক্ষণে ক্ষণে বারংবার নিজের শক্তির অপব্যয় এবং চিত্তের বিক্ষেপ ঘটাইবার এখন সময় নহে । ষে অবিচলিত অবকাশ এবং অক্ষুব্ধ শাস্তির মধ্যে বীজ ধীরে ধীরে অস্কুরে ও অস্কুর দিনে দিনে বৃক্ষে পরিণত হয়, তাহ সম্প্রতি আমাদের দেশে দুর্লভ হইয়া উঠিতেছে। ছোট ছোট আঘাত নানাদিক্ হইতে আসিয়া পড়ে— হাতে-হাতে প্রতিশোধ বা উপস্থিত প্রতিকারের জন্ত দেশের মধ্যে ব্যস্ততা জন্মে, সেই চতুর্দিকের ব্যস্ততার চাঞ্চল্য হইতে নিজেকে রক্ষা করা কঠিন । রোগের সময় যখন হঠাৎ এখানে বেদনা, ওখানে দাহ উপস্থিত হইতে থাকে, তখন তখনি তখনি সেটা নিবারণের জন্ত রোগী অস্থির না হইয়া থাকিতে পারে না । যদিও জানে অস্থিরতা বৃথা, জানে এই সমস্ত স্থানিক ও সামরিক জালাযন্ত্রণার মূল ঘুে ব্যাধি আছে, তাহার ঔষধ চাই এবং তাহার উপশম হইতে সময়ের প্রয়োজন, তৰু চঞ্চল হইয়া উঠে । আমরাও তেমনি প্রত্যেক তাড়নার জন্ত স্বতন্ত্রভাবে অস্থির কুইয়া মূলগত প্রতিক্লারের প্রতি অমনোযোগী হই ।” সেই অস্থিরতায় আজ আমাকে এখানে আকর্ষণ করে নাই-কর্তৃপূক্ষের বর্তমান প্রস্তাবকে অযৌক্তিক প্রতিম্পন্ন করিয়া আমাদেয় যে ক্ষণিক বৃথাতৃপ্তি, তাছাই, ভোগ করিবার জন্ত আমি এখানে উপস্থিত হই নাই, আমি দুটো-একটা গোঁড়ার সফলতার সদুপায়। ఆరీ কথা স্বদেশীলোকের কাছে উখাপন করিয়ার হুযোগ ’পুইয়া এই সভায় আমন্ত্রণ গ্রহণ করিয়াছি। য়ে জাতীয় কথাটা লইয়া बाभ्रদৈর সম্প্রতি ক্ষোভ উপস্থিত হইয়াছে এবং মাঝে মাঝে বারংবার ক্ষোভ উপস্থিত হয়, তাহাকে তাহার পশ্চাদ্বত্তী বৃহৎ আশ্রয়ভূমির সহিত সংযুক্ত করিয়া না দেখিলে আমাদের সামঞ্জস্তবোধ পীড়িত হুইবে । প্রাথমিকশিক্ষাবিধিঘটিত আক্ষেপটাকে আমি সামান্ত উপলক্ষ্যস্বরূপ করিয়া তাহার বিপুল আধারক্ষেত্রটাকে আমি প্রধানভাবে লক্ষ্যগোচর করিবার যদি চেষ্টা করি, তবে দয়া করিয়া আমার প্রতি সকলে অসহিষ্ণু হইয়া উঠিবেন না । আমি নিজের সম্বন্ধে একটা কথা কবুল করিতে চাই । কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতি কোনদিন কিরূপ ব্যবস্থা করিলেন, তাহ লইয়া আমি নিজেকে অতিমাত্র ক্ষুব্ধ হইতে দিই না। আমি জানি, প্রত্যেকবার মেঘ ডাকিলেই বঞ্জ পড়িবার ভয়ে অস্থির হইয়া বেড়াইলে কোনো লাভ নাই। প্রথমত বঙ্গ পড়িতেও পারে, না-ও পড়িতে পারে ; দ্বিতীয়ত ৰেখানে বজ্রপড়ার আরোজন হইতেছে, সেখানে আমার গতিবিধি নাই, আমার পরামর্শ, প্রতিবাদ বা প্রার্থন। সেখানে স্থান পায় না ; তৃতীয়ত বুজপাতের হাত হইতে নিজেকে রক্ষা করিবার যদি কোনো উপায় থাকে, তবে সে উপায় ক্ষীণকণ্ঠে বজ্রের পাণ্ট জবাব দেওয়া নহে, সে উপায় বিজ্ঞানসস্থত চেষ্টার দ্বারাই লভ্য ; যেখান হইতে বঙ্গ পড়ে, সেই খান হইতে সঙ্গে সঙ্গে বজ্রনিবারণের তাম্রদওটাও নামিয়া আসে না, সেটা শাস্তভাৱে,