পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

XRze दछलअिनि ! [ ৩য় বর্ষ, শ্রাবণ । পতনের অবিরাম শব্দ শুনিতেছিল । তাহার কানে বাজিতেছিল— বায়ু বই পুরবৈঞ, নীদ লহী বিন সৈঞ । পরদিন প্রাতে রমেশ দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া ভাবিল, “আমি যদি কেবল গান গাহিতে পরিতাম, তবে তাহার বদলে আমার অন্ত অনেক বিদ্যা দান করিতে কুষ্ঠিত হইতাম না । গানের যেটুকু সফলতা, সেটুকু ত অন্তের মারফৎ আদায় করিয়া লইয়াছিল, তবু গান গাহিবার যেটুকু পরিতৃপ্তি, সেটুকুর লোভও ছাড়া যায় না । মনে মনে সে বলিতেছিল, “অক্ষয়, তুমি ধন্ত, তুমি গান গাহিতে পার ” অক্ষয় যদি বিবেচনা করিয়া দেখিত, তবে বলিত, “রমেশ, তুমিই ধন্ত । গান শুনিবার স্বথ তোমারই!” কিন্তু কোন উপায়ে এবং কোন কালেই সে যে গান গাহিতে পারিবে, এ ভরসা রমেশের ছিল না ! সে স্থির করিল, “আমি বাজাইতে শিখিব।” ইতিপূৰ্ব্বে একদিন নির্জন অবকাশে সে অন্নদাবাবুর ঘরে বেহালাখানা লইয়। ছড়ির টান দিয়াছিল—সেই ছড়ির একটিমাত্র অপঘাতে সঙ্গীতের সরস্বর্তী এমুনি আৰ্ত্তনাদ করিয়া উঠিয়াছিলেন যে, তাহার পক্ষে বেহালার চর্চা নিতান্ত নিষ্ঠুরত হইবে বলিয়া সে আশা সে পরিত্যাগ করে। আজ সে ছোট দেখিয়া একটা হাৰ্ম্মোনিয়ম কিনিয়া আনিল । ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করিয়া অতি সাবধানে অঙ্গুলিচালনা করিয়া শ্লেষ্টুকু বুঝিল যে, আর যাই হোক, এ যন্ত্রের সহিষ্ণুতা বেহালার চেয়ে বেশি । , পরদিনে অন্নদীবাবুর বাড়ী যাইতেই হেমনলিনী রমেশকে কহিল, “আপনার ঘর হইতে কাল যে হাৰ্ম্মোনিয়মের শব্দ পাওয়৷ যাইতেছিল !” রমেশ ভাবিয়াছিল, দরজা বন্ধ থাকিলেই ধরা পড়িবার আশঙ্কা নাই । কিন্তু এমন কান আছে, যেখানে রমেশের অবরুদ্ধ ঘরের শব্দও সংবাদ লইয়া আসে । রমেশকে একটুকু লজ্জিত হইয়া কবুল করিতে হইল যে, সে একটা হাৰ্ম্মোনিয়ম কিনিয়া আনিয়াছে এবং বাজাইতে শেখে, ইহাই তাহার ইচ্ছ। হৃদয়ের কোন বেদনার মধ্যে এই ইচ্ছার মুল কারণটি, হেমনলিনীর তাহ অগোচর ছিল না । হেমনলিনী কহিল—“ঘরে দরজা বন্ধ করিয়া নিজে নিজে কেন মিথ্য চেষ্ট। করিবেন । তাহার চেয়ে আপনি আমাদের এখানে অভ্যাস করুন—আমি যতটুকু জানি, সাহায্য করিতে পারিব।” রমেশ কহিল, “আমি কিন্তু নিতান্ত আনাড়ি, আমাকে লইয়। আপনার অনেক দুঃখভোগ করিতে হইবে।” হেমনলিনী কহিল, “আমার যেটুকু বিস্তা, তাহাতে আনাড়িকে শেখানই কোন মতে চলে ॥* ক্রমশই প্রমাণ হইতে লাগিল, রমেশ ৰে নিজেকে আনাড়ি বলিয়া পরিচয় দিয়াছিল, তাহা নিতাস্ত বিনয় নহে। এমন শিক্ষকের এত অযাচিত সহায়তাসত্ত্বে স্বরের জ্ঞান রমেশের মগজের মধ্যে প্রবেশ করিবার কোন সন্ধি খুজিয়া পাইল না। সস্তরণমূঢ় জলের মধ্যে পড়িয়া যেমন উন্মত্তের মত হাতপা ছুড়িতে থাকে, রমেশ সঙ্গীতের হাটুজলে তেমনিতর ব্যবহার করিতে লাগিল। তাহার কোন