లక్షిణ বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, কাস্তিক । স্থপ্রকারের পার্থক্য অবলম্বন করে । আমরা -সাংরৎসরিক প্রয়োজনের জন্তই ধান-যব-থম প্রভৃতি ওষধির বীজ বপন করিয়া থাকি, কিন্তু অরণ্যের প্রতিষ্ঠা করিতে চাই যদি, তবে -বনস্পতির বীজ সংগ্ৰহ করিতে হয় । সাহিত্যে সেই চিরস্থায়িত্বের চেষ্টাই মামুষের প্রিয় চেষ্টা । সেইজন্ত দেশহিতৈষী সমালোচকেরা যতই উত্তেজনা করেন যে, সারবান সাহিত্যের অভাব হইতেছে—কেবল নাটক-নভেল-কাব্যে দেশ ছাইয়া যাইতেছে, তবু লেখকদের হস্ হয় না । কারণ, সারবান সাহিত্যে উপস্থিত প্রয়োজন মিটে, কিন্তু অপ্রয়োজনীর সাহিত্যে স্থায়িত্বের সম্ভাবন। বেশি । কণরণ, যাহা জ্ঞানের কথা, তাহ প্রচার হইয়া গেলেই তাহার উদ্দেশু সফল হইয়া শেষ হইয়া যায়। মামুষের জ্ঞানসম্বন্ধে নুতন আবিষ্কারের দ্বারা পুরাতন আবিষ্কার আচ্ছন্ন হইয়া যাইতেছে । কাল যাহা পণ্ডিতের অগম্য ছিল, আজ তাহ অৰ্ব্বাচীন বালকের কাছেও -লুতন নহে। যে সত্য নুতন বেশে বিপ্লব श्वॆनङ्गेन করে, সেই সত্য পুরাতন বেশে বিস্ময়মাত্র উদ্রেক করে না। আজ যে সকল তত্ত্ব মুঢ়ের নিকটে পরিচিত, কোনকালে যে তাহা পণ্ডিতের নিকটে ও বিস্তর বাধা প্রাপ্ত হইয়াছিল, ইহাই লোকের কাছে আশ্চৰ্য্য বলিয়া মনে হয় । কিন্তু হৃদয়ভাবের কথা, প্রচারের দ্বারা পুরাতন হয় না। জ্ঞানের কথা একবার জানিলে আর জানিতে হয় না ; অtগুন গরম, স্বৰ্য্য গোল, জল তরল, ইহা একবার জানিলেই চুকিয়া যায়—দ্বিতীয়বার কেহ যদি তাহা আমাদের নূতন শিক্ষার মত জানাইতে আসে, তবে ধৈর্য্যরক্ষা করা কঠিন হয় । কিন্তু ভাবের কথা বারবার অনুভব করিয়া শ্রান্তিবোধ হয় না । স্বৰ্য্য যে পুৰ্ব্বদিকে ওঠে, এ কথা আর আমাদের মনোযোগ আকৰণ করে না—কিন্তু স্বৰ্য্যোদয়ের যে সৌন্দৰ্য্য ও আনন্দ, তাহা জীবস্থষ্টির পর হইতে আজ পর্য্যন্তু আমাদের কাছে অম্লান আগছে । এমন কি, অনুভূতি যত প্রাচীন কাল হইতে যত লোকপরম্পরার উপর দিয়া প্রবাহিত হইয়া আসে, ততই তাহার গভীরতাবৃদ্ধি হয়—ততই তাহা অামাদিগকে সহজে আবিষ্ট করিতে পারে । অতএব চিরকাল যদি মানুষ আপনার কোন জিনিষ মানুষের কাছে উজ্জল নবীনভাবে অমর করিয়া রাখিতে চায়, তবে তাহাকে ভাবের কথাই আশ্রয় করিতে হয় । এইজন্ত সাহিত্যের প্রধান অবলম্বন জ্ঞানের বিষয় নহে, ভাবের বিষয় । তাহা ছাড়া যাহা জ্ঞানের জিনিষ, তাহা এক ভাষা হইতে আর এক ভাবায় স্থানান্তর করা চলে । মূল রচনা হইতে তাহাকে উদ্ধার করিয়া অন্ত রচনার মধ্যে নিবিষ্ট করিলে অনেকসময় তাহার উজ্জ্বলতাবৃদ্ধি হয় । তাহার বিষয়টি লইয়। নানা লোকে নানা ভাষায় নানা রকম করিয়া প্রচার করিতে পারে—এইরূপেই তাহার উদেণ্ড যথার্থভাবে সফল হইয়া থাকে । কিন্তু ভাবের বিষয়সম্বন্ধে এ কথা থাটে না । তাহ যে মুর্ভিকে আশ্রয় করে, তাহ হইতে আর বিচ্ছিল্প হইতে পারে না । জ্ঞানের কথাকে প্রমাণ করিতে হয়,
