পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৫১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা ] প্রবণে চণ্ডীদাসের শ্রীরাধিকার পুর্বরাগের সঞ্চার হইয়াছে— সই ! কেৰা শুনাইল শুমি নাম । কাণের ভিতর দিয়া, মরমে:পশিল গো ! আকুল করিল মোর প্রাণ । ন জানি কতেক মধু শুাম নামে আছে গো ! ৰদন ছাড়িতে নাহি পারে। জপিতে জপিতে নাম, অবশ করিল গো ! কেমনে পাইব সই, তারে ? অন্যদিকে বিদ্যাপতির স্ত্রীরাধিকার পুর্বরাগ মুখ্যভাবে শ্রীকৃষ্ণের সাক্ষাৎদর্শন হইতেই সঞ্জাত হয়— নাহি উঠল তীরে, রাই কমলমুখী সমুখে হেরল বর কান। গুরুজন সঙ্গে, লাজে ধনী নতমুখী কৈছনে হেরয় বস্থান । সখিহে, অপরূপ চাতুরী গোরী ! সব জন তেজিয়া, আগুপরি ফুকরই আড় বদন তঁহি ফেরি । তহি পুন মোতি হার টুটি ফেলল, কহত হার টুটি গেল । সব জন এক এক চুনি সঞ্চরু শু্যাম দরশ ধনী কেল । নয়ন চকোর, কামুমুখ শশিবর করল অমিয় রসপান । জুহু দোহঁ। দরশনে, রসহ পসারল বিদ্যাপতি ভাল জান ॥ প্রথমে তার নামগুণ শুনিয়া চণ্ডীদাসের ঐরাধিক কৃঞ্চামুরাগিণী হইয়াছেন, তারপর চিত্রপটে কৃষ্ণ- প্রতিকৃতি দেখিয়া, সে অমুরাগ বাড়িয়া যায় ; এবং সৰ্ব্বশেষে সাক্ষাদর্শন লাভ করিয়া, লে রূপসীয়রে কুলশীলমান ধরম পুর্বরাগ WՆՏ(է করম সকল বিসর্জন দিবার জন্ত ব্যাকুল হইয়া উঠেন । ফলতঃ দর্শন ও শ্রবণ দু’ই পুর্বরাগের সমান বাহন । তবে উভয়ের মধ্যে বিস্তর প্রভেদও আছে। বিদ্যাপতির শ্রীরাধিক। ঐ প্রথম দৰ্শন-লাভের পরেই সর্থীকে কহিতেছেন ঃ-- কি কহব রে সখি কামুক রূপ কো পতিয়tয়ব স্বপন-স্বরূপ । কিন্তু চণ্ডীদাসের শ্রীরাধিকাকে কৃষ্ণরূপে যেমন পাগল করিয়া তুলিয়াছে, বিদ্যাপতির হীরাধিকাকে তেমন করিতে পারে নাই । ইহার প্রধান কারণ বোধ হয় এই যে, সাক্ষাৎদর্শনের পূৰ্ব্বে চণ্ডীদাসের শ্রীরাধিকার মতন, বিদ্যাপতির শ্রীরাধিক সে রূপকে এমন করিয়া আপনার ধ্যানের বিষয় করেন নাই । চণ্ডীদাসের শ্রীমতী প্রথমে শ্ৰীকৃষ্ণের নাম গুণ শুনিয়া মুগ্ধ হন । এই নাম-গুণই র্তার অনুরাগের প্রথম আশ্রয় ও উপজীব্য হর । কিন্তু নাম শুনিয়া তিন কেবল নাম লইরাই পড়িয়া রহেন নাই—কেহই পড়িয়া রহে না । তিনি সেই নামকে আপনার জপমালা করিলেও, আপনার অন্তরে ষে সহজ শ্রেষ্ঠতম রূপের আদশ ঘুমাইরা ছিল, তাস্থাকে জগাইয়া, সেই নামের উপরে আপনার নবীন অসুরাগের তুলিক লইয়। সে নবীন রূপকে অঞ্চিয়া নামের সঙ্গে তারও ধ্যান আরম্ভ করিলেন । মানুষের প্রাণ, জগতের সকল রূপের সার ছানিয়া, আপনার মনেস মাঝে তার নিজের সৌন্দর্য্যের আদর্শকে ফুটাইয়া তোলে ও জাগাইয়া রাখে । তার চক্ষে এ রূপের তুলন। জগতে মিলে না। আর আপনার অস্তরের এই অতুলনীয় রূপ