পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२* *६५It } একটা বিশৃঙ্খগ উপস্থিত এবং দেশের রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে অনর্থক কতকগুলি জটিল সমস্তার স্বঠ হইবে। আর এই জন্যই এই উদাম সংস্কারচেষ্টাকে সৰ্ব্বপ্রযত্নে সংযত করা আবণ্ঠক। আমাদের সমাজের প্রকৃতির ভিতরে ও বর্তমান সামাজিক অবস্থা হইতে, বিলাতের মতন জোর করিয়া দেশের সকল বালকবালিকাকে স্কুলে পাঠাইবার যে কোনো অপরিহার্য্য প্রয়োজন এখনে উপস্থিত হয় নাই, এ কথা এই সংস্কারের প্রবর্তক ও পরিপোষকগণও বোধ হয় অস্বীকার করিতে পরিবেন না । ফলতঃ র্যাহার এই বিলাতী আইন আমাদের দেশের গরিব লোকদের স্বন্ধে চাপাইবার জন্য এতটা ব্যস্ত হইয়া পড়িয়াছেন, তাহারাও এ পর্য্যন্ত এরূপ কোনো বিশেষ সামাজি ক প্রয়োজন দেখাইতে পারেন নাই । লেখাপড়া শিখিলে সাধারণভাবে মানুষের কি কি উপকার হইয়া থাকে, এ সকল কথাই সৰ্ব্বদ। শুনিয়! থাকি। এ সকল কথা তে। কেহ অস্বীকারও করে না। কিন্তু শুদ্ধ এই সকল সাধারণী যুক্তির বলেই বিলাতে বা অন্ত কোনো দেশে জোর করিয়া দেশের সকল লোককে লেখাপড়া শিখাইবার বিধান প্রচলিত হয় নাই। পাণ্ডা-পাদ্রিদের এ’সকল অভ্যস্ত বুলী বক্তৃতার বকুনীরূপেই বিশেষ কাজে আসে ; এ সকলের জোরে কোনো বিরাট-সমাজ আপনার স্বাভাবিক গতিবেগকে বাড়াইয়াও দেয় না, চাপিয়াও রাখে না। ফলতঃ বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ডের কোথাও কোনে জীব আপনার আভ্যন্তরীণ বিলাতে সাৰ্ব্বজনীন সাধারণশিক্ষা 為? প্রয়োজনের প্রেরণ ব্যতীত, কেবল একটা বড় উপদেশ গুনিয়া বা অতি উচ্চ আদর্শ দেখিয়া, কোনো বিষয়ে আপনার শক্তি প্রয়োগ করে না। যতক্ষণ না জীবনসংগ্রামে জয় লাভ করিয়া আত্মরক্ষার জন্ত কোনো কিছু গ্রহণ করা অপরিহার্য্য হইয়৷ উঠে, কোনো জীব ততক্ষণ সে বিষয়ে চেষ্টিত হয় না। এইরূপ সমাজ-জীবও অপরিহার্ঘ্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো বিষয়ে আপনার শক্তি প্রয়োগ করিতে চাহে না । কোনো বিশেষ সাধন আয়ত্ত করা, কোনো বিশেষ ব্যবস্থা প্রবর্হিত করা, কোনো প্রাচীন প্রতিষ্ঠানকে পরিহার করিয়া নুতন প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলা, এ সকল যতক্ষণ কোনো সমাজের পক্ষে জীবন-মরণের কথা ন হইয়া দাড়ায়, ততক্ষণ সে সমাজ কখনো সে সকল বিধিব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া, আপনার দেহের বোঝা ও কৰ্ম্মের দায় খামাক বাড়াইয়া তোলে না। নরবলি, সতীদাহ, গঙ্গাসাগরে সন্তানবিসর্জন, রাজপুতদিগের কন্যাহত্য প্রভৃতি মধ্যযুগের হিন্দুয়ানীর ক ওকগুলি প্রথ। ইংরেজ সরকার জোর করিয়াই তুলিয়া দিয়াছেন ; দেশের লোকের মত গ্রহণ করিয়া এ সকল নিষেধ প্রতিষ্ঠিত হয় নাই, হইতেই পারিত না । অতএব জোর করিয়া এখন যদি সকলকে স্কুলে পাঠানোই হয়, কিছু দিন পরে, লোকমতে ও সমাজের অভ্যালেতে এই ব্যবস্থাটী যখন স্থায়িত্ব লাভ করিবে, তখন জবরদস্তির দরুণ যে অসুবিধা ও অষঙ্গলটুকু আপাতত হইতেও বা পারে, তাহার আর কোনে