পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 o আলোচনা করেন, তাহারা অনেক সময়ে ষ্টেডের বুদ্ধির স্থিরতা ও তাহার মতামতের মধ্যে কোনো প্রকারের সঙ্গতি ও সামঞ্জস্য নাই বলিয়া প্রায়ই র্তাহার মন্তব্যকে উপেক্ষ করিতেও চেষ্টা করিতেন। যে মানুষ নিজের নিকটে সৰ্ব্বদা খাট হইতে চাহে, লোকচক্ষে তাহার বুদ্ধির স্থিরতা প্রমাণিত করা অসম্ভব । মানুষ সৰ্ব্বজ্ঞ নহে। সত্যের সকল দিকটা সৰ্ব্বদা একই সঙ্গে তাহার চক্ষুগোচর হয় না। আমাদের সকল সিদ্ধান্তেই অন্ধের-হস্তিদর্শন-ন্যায়ট প্রায় সৰ্ব্বদাই প্রযুক্ত হইতে পারে। এবং তারই জন্য জ্ঞানের ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সৰ্ব্বপ্রকারের সিদ্ধান্তই উত্তরোত্তর পূর্ণতর হইতে যাইয়াই পরিবর্তিত হয়। লোকে যাহাকে সচরাচর স্থিরমতি বলে তাহ অনেক সময়েই কেবল রুদ্ধগতির লক্ষণ । ইংরেজী বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় এই #Hofst est arrested development বলে। কিন্তু ষ্টেডের মনের গতি আমরণ কখনও রুদ্ধ হয় নাই। বয়স তাহার বাড়িয়াছিল, কিন্তু শৈশবের সারল্য, যৌবনের উদ্যম, জ্ঞানের পিপাসা, উন্নতির আকাঙ্ক্ষা, কৰ্ম্মের চেষ্টা, এ সকলের কিছুই বিন্দু পরিমাণ কমে নাই। জগতের অনেক লোক প্রকৃত পক্ষে ত্রিশ চল্লিশ বৎসর হইতে না হইতেই মরিয়া যায়। নূতন অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিসাধন করিয়া নূতন শক্তি সংগ্রহ ও নূতন চেষ্টার প্রকাশ, নিত্য নূতন জ্ঞান বা নিত্য নূতন রস আস্বাদন, নিত্য নূতন কৰ্ম্মের আয়োজন এ সকলই তো প্রকৃত জীবনের লক্ষণ । বঙ্গদর্শন ১২শ বধ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৯ কিন্তু জগতের অধিকাংশ • লোক জীবিত থাকিয়াও জীবনের এ সকল লক্ষণ প্রকাশ করিতে পারে না। আর এই সকল লোকের বিষয়েই সচরাচর আমরা জীবন্তমৃত্যুর স্থবিরতার মধ্যে, তাহীদের রুদ্ধবুদ্ধির স্থিরতাও প্রত্যক্ষ করিয়া থাকি। মৃত্যুর মুহূৰ্ত্ত পৰ্য্যন্ত ষ্টেড প্রকৃত অর্থে জীবিত ছিলেন বলিয়া তাহার বুদ্ধি যে প্রাকৃতজনসুলভ স্থিরত্ব লাভ করে নাই ইহা আশ্চৰ্য্য নহে। কিন্তু তাহার মতামতের মধ্যে ষে সঙ্গতির অভাব দৃষ্ট হইত তাহ কেবল বাহিরেরই কথা, ভিতরের কথা নহে। ষ্টেড ও রুশ সম্রাট ষ্টেঢ় আজীবন প্রজাতন্ত্রের পক্ষপাতী ছিলেন । যখন যেখানে প্রজামণ্ডলী আপনাদের স্বত্বস্বাধীনতা-লাভের চেষ্টা করিয়াছে, ষ্টেড, তখনই তাহীদের পক্ষ সমর্থন করিয়াছেন। এই জন্যই তিনি বুয়র যুদ্ধের সময় নিজেদের গভর্ণমেণ্টের সমর্থন না করিয়া বুয়র-নেতৃবর্গের পক্ষই সমর্থন করিয়াছিলেন। আর এই কারণে সেই সময়ে তিনি অতিমাত্রায় সাধারণ ইংরেজমণ্ডলীর বিরাগভাজনও হইয়াছিলেন। অথচ যে সিসিল Câlû (Cecil Rhodes) of পক্ষে চক্রান্ত করিয়া ব্রিটিশগভর্ণমেণ্টকে এই সংগ্রামে প্রবৃত্ত করেন, ষ্টেড, সৰ্ব্বদাই সেই সিসিল রোডসের স্তুতিবাদে নিযুক্ত হইয় তাহার পক্ষ সমর্থন করিতেন। সাধারণ লোকে ষ্টেডের এই দুই কার্যের মধ্যে কোনো প্রকারের সঙ্গতি প্রতিষ্ঠা করিতে পারে নাই। ষ্টেড একদিকে যেমন জগতের সৰ্ব্বত্র প্রজামণ্ডলীর স্বত্ব