পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

من ج (نقلا কলেণের সময়ে আদিযুগের, কিংবদন্তিমাত্রই প্রচলিত ছিল, কোন বিশ্বাসযোগ্য ইতিহাস বর্তমান ছিল না । মধ্যযুগের কিছু-কিছু জনশ্রুতি ও লিখিত বিবরণ প্রচলিত ছিল ; শেষ যুগের অনেক ঘটনা কবির জীবনকালেই সংঘটিত হইয়াছিল । সুতরাং কবিতানিবদ্ধ হইলেও, রাজতরঙ্গিণীর কোন কোন অংশ সবিশেষ বিশ্বাসযোগ্য । কহলণ গ্ৰন্থরচনায় হস্তক্ষেপ করিবার পূৰ্ব্বে পুরাতন শিল ও তাম্রলিপি লিখিত বিবরণ সঙ্কলন عة إيه ও সমালোচনা করিয়াছিলেন । সন্ধানের অনুরাগেই তিনি এই শ্রমসাধ্য ব্যাপারে লিপ্ত হইয়াছিলেন । ইহাতে রাজতরঙ্গিণীর গৌরব সমধিক বৰ্দ্ধিত হইয়াছে। বিচারপতির ন্যায় নিয়ত সত্যোদঘাটনের চেষ্টাই যে ইতিহাসলেখকের প্রধান কৰ্ত্তব্য, তদ্বিযয়ে কবি কহলণ নিজেই গ্রন্থমধ্যে মতপ্রকাশ করিয়া লিখিয়া গিয়াছেন ঃ– অন্সাত তথ্যাক্ট প্লাঘা: স এব গুণবান রাগদ্বেষবহিঞ্চত । ভূতাৰ্থকথনে যস্য স্তেয়স্যের সরস্বত ; তিনি গ্রন্থসঙ্কলনে প্রবৃত্ত হইয়। নীলমতপুরাণ ও একাদশখানি পূৰ্ব্বলিখিত ইতিহাস আলোচনা করিয়া পুরাতত্ত্ব সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন । র্ত হার জীবনকালে যে সকল ফলকলিপি ও রাজশাসনলিপি বর্তমান ছিল, তাহা ও যথাযোগ্য আগ্রহে অধীত ও ব্যবহৃত হইয়াছিল। যথা :– "প্তৈশ্চ পূৰ্ব্বভুভত্ত্বপ্রতিষ্ঠাবস্তুশাসনৈ: | প্রশস্তিপট্টৈঃ শাস্ত্রৈ-চ শাস্তোগুশেষভ্রমকুমঃ ॥”১ ১৫ পূৰ্ব্ব নরপালবর্গের যে সকল বিবরণ লোকসমাজে বা লিখিত ইতিহাসে পরিচিত ছিল, বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, আশ্বিন তাহার সত্যাসত্যবিচারের জঢ় কবি কহুলণ পুরাতন শাসনলিপির সহায়তা গ্রহণ করিয়া নানা প্রচলিত ভ্রম সংশোধন করিয়াছিলেন । অধ্যাপক छैन् ভারতবর্ষীয় প্রাচীন লেখকের এই তথ্যাবিষ্কারের অনুরাগ লক্ষা করিয়া মুক্তকণ্ঠে সাধুবাদ প্রদান করিয়াছেন । কহলণ যে সকল জনশ্রুতি লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন, তাহ লোক ব্যবহারের নানা তথ্য প্রকাশিত করিয়া, তাহার গ্রন্থকে সমধিক মূল্যবান করিয়াছে । এই সকল জনশ্রুতির ঐতিহাসিক মূল অধিক সi হইলেও, লোকব্যবহারের ইতিহাস সঙ্কলনের পক্ষে ইহা বহুমূল্য । শেষাংশের অনেক ঘটনা কহলণের সমক্ষেই সংঘটিত হইয়াছিল ; তাহার বিস্তৃত বর্ণন। ইতিহাসের পক্ষে সবিশেষ উপকারজনক । ইতিহাস লিখিবার যে সকল যোগ্যতা থাক। আবশ্যক, কবি কহলণ তাহাতে দরিদ্র ছিলেন বলিয়া বোধ হয় না। র্তাহার শিক্ষাকে তৎকালোচিত উচ্চশিক্ষা বলিয়৷ স্বীকার করা যায় । তিনি গ্রন্থমধ্যে নানা শাস্ত্রজ্ঞানের পরিচয় প্রদান করিয়া গিয়াছেন। তাহার সত্যানুসন্ধানের অনুরাগ প্রবল ছিল, অনুসন্ধান করিবার নানা সুবিধাও বর্তমান ছিল । তিনি রাজমন্ত্রী চম্পকের পুত্র বলিয়। অন্ত লোকের অজ্ঞাত অনেক তথ্য সহজে সঙ্কলন করিতে সক্ষম হইয়াছিলেন । তজ্জন্ত র্তাহার সমসাময়িক ও অল্পকালপূৰ্ব্ববৰ্ত্তা ঘটনাবলা যথাবথরূপেই লিপিবদ্ধ হওয়৷ সম্ভব । পুরাতন কাহিনী জনশ্রুতিমূলক,— তৰ্জ্জন্ত রাজতরঙ্গিণীর প্রথমাংশ সেরূপ বিশ্বাসযোগ্য বলিয়। স্বীকার করা যায় না।