পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ર૭ ঞ্জিক দণ্ড কি, জিজ্ঞাসা করিয়া তাহা গ্রহণ কর, ইহাই আমার পরামর্শ।” । চৌধুরী মহাশয় বলিলেন, “আপনার সাধুপুরুষ, মুক্তাত্মা, দেবতাবিশেষ—আপনারা সমাজকে ভয় করেন না, কিন্তু আমরা সমাজের দাস। শাস্ত্রোক্ত প্রায়শ্চিত্ত করিলেও সমাজ আমাকে সহজে ক্ষমা করিবে না। যাহা হউক, এক্ষণে আপনার আদেশমত সমস্ত প্রতিপালিত হইবে।” সন্ন্যাসী বলিলেন, “এই বৃদ্ধ চৰ্ম্ম কারকে পুরস্কার দেওয়া উচিত। কারণ এ-ই আপনাকে অজ্ঞানকৃত পাপ ধরাইয়া দিয়া অধিক পাপানুষ্ঠান হইতে বিরত করিয়াছে।” সন্ন্যাসীর কথায় চৌধুরী মহাশয় গুইরামকে সমতিবর্ণহারে লইয়া গিয়া তাহাকে একশত মুদ্রা প্রদান করিলেন। গুইরাম আনন্দে উন্মত্ত হইয়া চৌধুরী মহাশরকে বলিল, “বাবা, আপুনি ছেরজীবী হও, অtজা হও, নক্ষ্মীশ্বর হও । তুমি বামুন, আমি , উইদাস, তোমাকে আমি কি বলে আশীববাদ করবে। আজ আপুনি যেমন আমাকে চরণে থান দিলে, এমনি ষত গরিবদুঃখী লোক যেন তোমাকে চরণে অাকে ।” বৃদ্ধের আশীৰ্ব্বাদ শুনিয়া এত বিষাদেও চৌধুরী মহাশয় হাসিয় তাহাকে বিদার দিলেন। বৃদ্ধ আর স্বগ্রামে গেল না। বরাবর বির ভেড়িতে ভাগিনেয়ের নিকট চলিয়া গেল। হরি-কামারণী ওরফে পদ্মমুখী ওরফে পদী-মুচিনী কোথায় গেল এবং গুইরাম ভাগিনেয়ের পরামর্শে আর বিবাহ করিয়াছিল কি না, ভাহার প্রামাণিক ইতিহাসসংগ্রহে প্রত্নতত্ত্ববিদগণ উদালীন আছেন। বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, অগ্রহায়ণ । - 8 r g ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী যথারীতি প্রায়শ্চিত্ত করিলেন । র্তাহার অমুচরগণও সকলেই প্রায়শ্চিত্তের খরচ লইল এবং কেহ কেহ প্রায়শ্চিত্ত ও করিল। এই প্রায়শ্চিত্তব্যাপারে সহস্ৰ সহস্র মুদ্রা ব্যয়িত হইল । আবার তাহার অতিথিশালায় প্রত্যহ অতিথি আসিতে লাগিল। কিন্তু ইহাতে চৌধুরী মহাশয় নিস্কৃতি পাইলেন না। শাস্ত্রসম্মত প্রায়শ্চিত্ত করিয়াও সমাজকে সহজে সন্মত করাইতে পারিলেন না। ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর বহুকাল পূৰ্ব্ব হইতে চন্দননগরের গেদলপাড়ার হালদারমহাশয়রা বিশেষ ধনবান, ক্ষমতাশালী ও সমাজপতি বলিয়। থ্যাতি-প্রতিপত্তি লাভ করিয়া আসিতেছিলেন। ইন্দ্রনারায়ণের অভু্যদয়ের কিছু পূৰ্ব্ব হইতে এই হালদারদিগের অবস্থা হীন হইতে হীনতর হইয়া পড়িতেছিল। প্রকাও অট্টালিকা এবং প্রকাও স্থলোদর সত্বেও গ্রামের লোকে বলবেলি করিত—“হালদার-মহাশয়দিগের আর তেমন বোলবোলাও নাই, ভাঙা পড়িরা আসিতেছেন।” এমন-সময় একজন দরিদ্র ব্রাহ্মণবালক নিজ অসাধারণ প্রতিভায় ও তীক্ষবুদ্ধিতে ফরাসী গভমেন্টের দেওয়ানপদে উন্নীত হইলেন। ইনিই প্রাতঃস্মরণীয় ইন্দ্রনারীরণ চৌধুরী । রাজারাম নামে ইন্দ্রনারায়ণের এক অগ্রজ সহোদর ছিলেন, তিনিও পরে মুরশিদাবাদে নবাবসরকারে একটি ভাল পদে প্রতিষ্ঠিত হন । উভয় ভ্ৰাতায় একত্র থাকিয়া যথেষ্ট ধনোপার্জন করিতে লাগিলেন এবং