পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম সংখ্যা । ] তৈলবট। 8N)〉 f - সামাজিকু উন্নতির উপায় তাহার গৃহেই বর্তমান, অথচ এতদিন তিনি তাহা দেখিতে পান নাই ! রাজার এই যুক্তিপূর্ণ ব্যবস্থা পাইয়া তিনি কৃতাৰ্থ হইলেন । q পরদিনই চৌধুরী মহাশয়ের অনুমতি পাইয়া চারিদিকে ঘটক ছুটিল এবং অল্পকালমধ্যেই রূপে, গুণে ও কুলে, সৰ্ব্বাংশেই মঞ্চনামত পাত্র প্রাপ্ত হইলেন । ফুলিয়া, খড়দহ, বল্লভী ও সৰ্ব্বাননী, কুলীনদিগের এই চারি শ্রেষ্ঠ মেলের চারিটি পাত্র আনাইয়। তিনি একদিনে আপনার কন্যাচতুষ্টয়কে সম্প্রদান করিলেন। পাত্ৰগণের সহিত র্তfহাদের আত্মীয়-জ্ঞাতিকুটুম্বগণও সমাগত হইলেন । চারি স্থানের চারিটি বর বরযাত্রী সহ একত্র সমাগত হওয়াতে চৌধুরী মহাশয়ের বাটী লোকে লোকারণ্য হইল। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র সমস্ত নবদ্বীপসমাজের প্রভিভূ হইয়৷ উপস্থিত হইলেন। নবদ্বীপ হইতে অসংখ্য পণ্ডিত এবং রাজকৰ্ম্মচারী মহারাজার সহিত উপস্থিত হইলেন। চৌধুরী মহাশয় স্বগ্রামস্থ সমস্ত ব্ৰাহ্মণকেই নিমন্ত্রণ করিলেন এবং বাটতে পদরেণু দিবার জন্য বিশেষ আগ্ৰহপ্রকাশও করিলেন । হালদার-মহাশয়গণও নিমন্ত্রণে বাদ পড়িলেন না, কিন্তু তাহার এই সমারোহব্যাপারে যোগদান করিলেন না। সুতরাং তাহীদের আত্মীয়কুটুম্বগণও কেহ আসিলেন না । কিন্তু তাহারা না আসিলেও নিমন্ত্রিতের অভাব হইল না । , যথারীতি বিবাহ সমাধা হইল। অনুন তিনসহস্ৰ ব্ৰাহ্মণসন্তান সে রাত্রে চৌধুরী বাটীতে জলপান করিলেন। রাজার ব্যবস্থাগুণে ইঞ্জনারায়ণ আবার নুতন দল বাধিবার স্বত্র খুজিয়া পাইলেন। পরদিন প্রাতঃকালে ভাট, ভিখারী, রারোয়ারীর পাণ্ড ইত্যাদি সকলে চৌধুরী মহাশয়ের নিকট নিজ নিজ প্রাপ্য অংশ আদায় করিতে আসিয়া সকলেই মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিয়া প্রস্থান করিল। চৌধুরী মহাশয় প্রত্যেক জামাতাকেই স্বীয় আবাসবাটীর সন্নিকটে এক একখানি বাট এবং বাগান যৌতুক দিয়া তাহাতে বাস করিতে অমুরোধ করিলেন । ভাট-ভিখারী বিদায় হইলে মহারাজ সহাস্তে চৌধুরী মহাশয়কে বলিলেন –“মহাশয়, আমার ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া আপনার মনস্কাম পূর্ণ হইয়াছে, এক্ষণে আমাকে তৈলবট প্রদান করিয়৷ অঋণী হউন ।” “মহারাজ, আপনাকে আমার আদেয় কি আছে ? কি আজ্ঞা হয়, বলুন।” রাজা তখন মহাকবি ভারতচন্দ্রের হস্তধারণ করিয়া বলিলেন—“অনেকদিন হইতে নবরত্নে সভা সাজাইব বাঞ্ছা ছিল, কিন্তু কালিদাসের অভাবে আমার অভীষ্ট পূর্ণ হয় নাই। এক্ষণে এই কবিরত্ন ভারতচন্দ্রকে আমায় অর্পণ করুন, আমি ইহাকে নবদ্বীপে লইয়া গিয়া আমার সভা ও নবদ্বীপের মুখ উজ্জল করি।” e চৌধুরী মহাশয় বলিলেন- “কবিবর আমার আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছেন, সুতরাং আমি উহাকে ধৰ্ম্মত পরিত্যাগ করিতে পারি না। তবে উহার উপর আমার কোনও অধিকার নাই, যদি কবি স্বেচ্ছায়