পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্যা । ] উপকৃতের কৃতজ্ঞতা ও সদ্ভাবে লোকাতীত আনন্দরলে ভাসমান इन ।” যাহা লোকাতীত, তাহা লোকের আয়ত্ত হইতে পারে • কেমন করিয়া ?-ভাসমান’ হওয়া ত পরের কথা । ইহা যেন সম্প্রদায়বিশেষের পেশাদারি বক্তৃতার বাধা বুলির পুনরাবৃত্তি, নিজের মনের ভাকের অভিব্যক্তি নহে। ইহা সৰ্ব্বথা পরিহার্য্য । প্রথমে যাহা বলিয়াছি, শেষেও তাহা বলিতেছি—পুস্তকখানি বিদ্যালয়ের পাঠ্য হইবার বিশেষ উপযোগী। উল্লিখিত ক্রটিগুলি সংশোধিত হইলে ইহা সৰ্ব্বাঙ্গ সুন্দর হইবে । সঙ্গিনী । খ্রীস্বরমাসুন্দরা প্রণীত। মূল্য একটাক মাত্র । এথানি গীতি-কবিতার পুস্তক । পুস্তকখানি পড়িয়া বড়ই প্রাত হইলাম । এই সকল কবিতার প্রধান গুণ—কোমলতা, সরলত, আন্তরিকতা ও উন্মুক্ত সহৃদয়ত । পুস্তকের মলাটে রচয়িত্রীর নাম লেখা না থাকিলেও আমরা বুঝিতে পারিতাম যে, ইহা স্ত্র,লোকের—বঙ্গীয় হিন্দুললনার— লেখা। কবিতার নূতনত্ব নাই থাকৃ, মনোহারিত্ব আছে। -একটা কবিতার কিয়দংশ উদ্ধৃত করিতেছি— “লালসার জলহীন নিৰ্ম্মল নিষ্কাম, প্রেম আত্মশুদ্ধি, তৃপ্তি, চিত্তের বিশ্রাম । ভালবাস৷ রাসনার নহে উদ্বোধন ; • শুধু আত্মবলিদান, শুধু বি জ্জিনু।” ঘোষ ভাব অতি মুন্দর ; কিন্তু নুতুন নহে। সমালোচনা ! &న বলিরার ভঙ্গীও সুন্দর ; কিন্তু তাহাও নুতন নহে। এ কথা বলায় গ্রন্থকত্রীর দুঃখিত হইবার কোন কারণ নাই, কেন না, পৃথিবীতে কয়টা ভাব নুতন পাওয়া যায় ? এই কবিতাপুস্তকে আগাগোড়া কেমনএকটা অতৃপ্তি, বিষাদ, কাতরতা ও নৈরাশু্যের স্রোত অন্তঃসলিলরূপে প্রবাহিত আছে, যাহা বাস্তবিকই মৰ্ম্মস্পর্শী । ভরসা করা যাউক যে, ইহা কল্পনাস্বঃ, হৃদয়সস্তুত নহে। দুঃখের সহিত একটা কথা বলিতে হইতেছে। এই পুস্তকে এমন দুই-চারিট কবিতা দেখিলাম, যাহা এই পুস্তকের অন্তনিবিষ্ট না করিলেই বোধ হয় ভাল হইত। সেগুলি বাদ দিলে পুস্তকের উপাদেয়ত বাড়িত বৈ কমিত না । বঙ্গমঙ্গল । মূল্য V হই আনা। গ্রন্থকারের নাম প্রকাশ নাই। কিন্তু – “হা ঈশ্বর !—অশ্রীবন্ত মানে না বারণ।” ইহাতেই বুঝিলাম যে, গ্রন্থকার অল্পবয়স্ক । সেইজন্তই বোধ হয় এই কবিতাপুস্তকে স্থানে স্থানে সংযমের অভাব পরিলক্ষিত হয়। তথাপি, এই নবীন কবিতা-লেখকের শব্দযোজনায় নিপুণতা আছে, ভাবে বেগ আছে, উচ্ছ, সে সরসতা ও অকৃত্রিম ব্যগ্রত আছে । কিন্তু ইহার পরিণাম কি ? হায় ! আমাদের নুতন যৌবনের স্বদেশপ্রীতি কেবলমাত্র হুজুগে ও বাক্যস্ত,পে না হইয়া যদি আমাদিগকে কৰ্ম্মশীল করিতে পারিত ! এই মহা-প্রণোদনে আমরা যদি বাক্যবাগীশমাত্র না হইয়া ব্ৰতধারী হইতে পারিতাম,তাহ হইলে কত না মুখের বিষয় হইত—কত না আশার স্থল হইত ! কিন্তু এ অরণ্যে রোদন