পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খাদশ সংখ্য। ] দার্শমিক তত্বের কাচ সোণার উপরে কেন এ দৌরাত্ম্য। ভূয়োদর্শনের লৌহপিণ্ডের উপরে অম্বুমালু-হাতুড়ির এক খা প্রয়োগ করিয়া জগৎজোড়া বিশাল তত্বসকল উদ্ভাবন করুনৃ-তাহাতে বারণ নাই। পরস্তু দার্শমিক তত্বের হার গীখিতে হইলে সুক্ষ্ম খুঞ্চিস্থত্রের—(অতএব-পরম্পরা’র) সঞ্চালন ব্যতিরেকে আর-কোনো উপায়ে ১ তাহ সম্ভাবনীয় নহে--ইহা জানা উচিত। কথাটা হ’চ্চে এই – “আমি চিন্তা করিতেছি” বলিলে যেমন বুঝায় যে, আমিই চিন্তা করিতেছি সুতরাং আমি আছি, “ আমি কাৰ্য্য করিতেছি” বলিলেও তেমনি বুঝায় যে, আমিই কাৰ্য্য করিতেছি সুতরাং আমি আছি , তা যদি বুঝায়—তবে কেন দে-কৰ্ত্ত *কাৰ্য্য করিতেছি অতএব আছি” না বলিয়া “ চিস্তা করিতেছি অতএব আছি” বলিলেম । আমি যে-কোনো কাৰ্য্য করি, তাহাতেই যদি আমার অস্তিত্ব যথেষ্ট সপ্রমাণ হয়, তবে আমার আর-আর কার্য্যের মধ্য হইতে চিন্ত-কাৰ্য্যটিকে বাছিয়া লইয়া সেই কাৰ্য্যটিকেই কেবল আমার অস্তিশ্বের একমাত্র প্রমাণ বলিয়া ধাৰ্য্য করিবার তাৎপৰ্য্য কি ? তাহার বিশেষ একটি তাৎপৰ্য্য আছে; তাহা এই – আমার সকল কাৰ্য্য শুদ্ধ যে কেবল আমার নিজের শক্তিতে কৃত হয়, তাহা নহে। মনে কর, আমি চন্ত্রোদয় দেখিতেছি । চন্দ্রের প্রতি তাকাইয়া চন্দ্রের প্রকাশ চক্ষুরিঞ্জিয়ে অস্থঙৰ হতেছি। চক্রের প্রকাশ একপ্রকার প্রভাব, আর আমার চক্ষুব্লিজিয়ে প্রকাশের সেই ধে খুচুভূতি, তাহ সার সত্যের আলোচন । అt. সেই এভাবেরই অনুভাব। প্রতিঙ্গনি যেমন ধ্বনির অক্সক্রিয়া, অমুভাব তেমনি প্রভাবেরই অনুক্ৰিয়া। তবেই হইতেছে যে, চঞ্জেরই শক্তিপ্রভাবে আমি চন্দ্রদর্শন করি তেছি-আমার নিজের শক্তিপ্রভাবে নহে। তাহার পরে, মনে কর, আমি বিছামায় পড়িয়া গুয়ে-গুয়ে চন্দ্ৰ ভাবিতেছি। এখন আর চঞ্জের প্রভাব আমার চক্ষুর উপরে কার্ষ্য করিতেছে না ; এখন আমি তাই স্বচ্ছদে বলিতে পারি যে, আমি আমার নিজের ধীশক্তির প্রভাবে চন্দ্র ধ্যান করিতেছি । অমুভাবের গোড়ায় যে অনু রহিয়াছে, তাহাকে চেন’ নাই—সেটি সহজ পাত্র নহে । সেই অনুটাই ইঙ্গিতুচ্ছলে জ্ঞাপন করিতেছে যে, অনুভাব তোমার আপন শক্তির প্রভাব মহে, তাহা অপর-কোনো বস্তুর প্রভাবের অমুক্রিয়া । কিন্তু এক্ষণে যখন আমি বিছানায় গুইয়া চন্দ্র ভাবিতেছি, তখন, অমুভাবনার অমু ঘুচিয়া গিয়াছে, আর, সেই-গতিকে আমার এক্ষণকার জ্ঞানক্রিয়া নিখুঁত ভাবনীমূৰ্ত্তি ধারণ করিয়াছে। এখন আমি অসঙ্কোচে বলিতে পারি যে, এ-যে আমার ভাবনা—এ ভাবনা অনুভাবনা নহে, এ ভাবনা প্রভাবনা ; ইহা আমার নিজের ধীশক্তির প্রভাব-স্ফূৰ্ত্তি। এই যে একটি কথা যে, “ভাবনা-কার্য্যে আমাদের নিজের ধীশক্তির প্রভাবমূৰ্ত্তি পায়, অতৃএব ভাবন আমাদের নিজের অস্তিত্বের পরিচায়ক”—এ কথাটি দে-কত্ত্ব যদি-চ বলেন নাই—আমরাই কেবল বলিতেছি ; কিন্তু ভাবে বুঝিতে পারা যাইতেছে যে, আমাদের ঐ কথাটি দে-কর্তার মনোমধ্যে বিলক্ষণই আধিপত্য করিয়াছিল;