পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\වA8 করিয়া দিলেন । লোকে এখন তাহার মতামতের সহিত অন্তান্ত মতামত তুলনায় সমালোচনা করিয়া সহজে তথ্যনির্ণর করিতে সক্ষম হইবে। চরিতাথ্যারক এবং ইতিহাসলেখকের কাৰ্য্যপদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য আছে। চরিতাধ্যায়ক দেশের দিক্ দিয়া না দেখিয়া ব্যক্তিবিশেষের দিক দিয়া ঘটনাবিচার করিতে পারেন ; কিন্তু ইতিহাসলেখককে প্রধানত দেশের দিক্ দিয়া দেখিয়াই ঘটনাবিচার করিতে হর। কোন ঐতিহাসিক পাত্র কিরূপ অবস্থাচক্রে পতিত হইয়া কোন ঘটনায় লিপ্ত হইয়াছিলেন, তাহার আলোচনার ভার চরিতাধ্যায়কের উপর রাধিয়া দিয়া, কাহার কার্য্যে দেশের কিরূপ উন্নতিঅবনতির স্বত্রপাত হইয়াছিল, কেবল তাহারই আলোচনা করিলে, নবাবী আমলের ইতিহাস এত জটিল ও বৃহদায়তন হইত না । নবাবী আমলের কার্য্যকলাপের মধ্যেই মোসলমানশাসনের ধ্বংসবীজ নিহিত ছিল ; তাহী ক্রমে অঙ্কুরিত হইয়া বিষবৃক্ষে পরিণত হয়। র্যাহারা সযত্নসিঞ্চিত বারিধারায় সেই বিষবৃক্ষের উন্নতিসাধন করেন, র্তাহারা মোসলমানশাসন উৎখাত করিবার উদ্দেহে কদাপি চেষ্টা করেন নাই ; —র্তাহীদের কৰ্ম্মফলে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঘটনাচক্রের আবর্তনে নবাবীশাসন উৎখাত হইয়। গিয়াছে। ইহাদের কার্য্যকলাপ যে সৰ্ব্বথা নিন্দনীয়, তাহ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় নিজেও স্পষ্টাক্ষরে উল্লেখ করিতে বাধ্য হইয়াছেন ; অথচ ইহাদের কার্য্যকলাপের জন্ত ইহাদের বিশেষ অপরাধ ছিল না, এই यत्रालॉन । [ অগ্রহায়ণ ভাব পরিস্ফুট করিতে গিয়া অনেক কষ্টকল্পনার আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছেন । সে চেষ্টা সফল হর নাই ; বরং উদ্ধত প্রমাণাবলী তাহ সম্পূর্ণ বিফল করিরা দিয়াছে ! এ পর্য্যন্ত নবাবী আমলের ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর যে সকল প্রমাণ ক্রমশ লোকসমাজে প্রচারিত হইয়াছে, তাহার প্রতিকুল প্রমাণ আবিষ্কৃত না করিয়া, কেবল প্রতিকুল মতামত লিপিবদ্ধ করিয়া, বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় বুঝাইবার চেষ্টা করিয়াছেন যে,--এ পয্যন্ত অন্তান্ত লেখক এ সম্বন্ধে যাহ। লিথিয়া গিয়াছেন, তাহা ভ্রমসফুল ; এক্ষণে যাহা লিখিত হইতেছে, তাহাই যথার্থ ইতিহাস । এই ভাব, গ্রন্থের আদ্যন্ত সংগোপনের চেষ্ট৷ থাকিতেও, পরিস্ফুট হইয়া পড়িয়াছে ! এরূপ সভয়ে সমালোচনা না করিয়া, অকুতোভয়ে পুৰ্ব্বপ্রকাশিত মতামত উদ্ধত করিয়া, তাহার অসারত্ব প্রতিপাদন করিতে পারিলে ভাল হইত ; ভ্রান্ত মত সংশোধনের উপায় হইত। নিতান্ত নগণ্য ঘটনার বিস্তৃত আলোচনায় পুৰ্ব্ববৰ্ত্তা লেখকগণের ভুলভ্রান্তি ইঙ্গিতে প্রদর্শিত করিয়া বিশেষ ফল হয় নাই। মূল সিদ্ধান্তগুলি তদ্বারা নিরাকৃত হয় না ; মনের সন্দেহ তদ্বারা বিদূরিত হয় না ; নবাবী আমলের নবপ্রকাশিত ইতিহাসের সিদ্ধান্তই যে সৰ্ব্বত্র সমীচীন, তাহাও তদ্বারা সংস্থাপিত হয় না ! নবাববিশেষের ব্যক্তিগত চরিত্রহীনতা নবাবীশাসন তিরোহিত হইবার মুখ্যকারণ বলিয়া বোধ হয় না ;–দেশের রাজপুরুষবর্গের সাধারণ চরিত্রহীনতাই প্রকৃত কারণ। নবাবী আমল উৎখাত হইয়া