পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম-সংখ্যা । ] বর্ণেল যাহা বলিয়াছেন, আমরা তাহ। অনেকট সমীচীন মনে করি। র্তাহার মতে ইন্দ্রনামক কোন বৈয়াকরণ কোনদিন ছিলেন ন! * । পাণিনির পূৰ্ব্বে কেবল দুই এক জন ব্যতীত যিনি যে ব্যাকরণ রচনা করিতেন, তাহায়ই নাম ইন্দ্র ব্যাকরণ রাখিতেন । যেমন কথাসরিৎসাগরে কাত্যায়ন বলিতেছেন, “তেন প্রনষ্টমৈন্দ্রং তদস্ম ব্যাকরণং ভূবি “ নিরুক্তবৃত্তিতে “যথাৰ্থং পদমৈন্দ্রাশাম্‌” ইত্যাদি। ইতিপূৰ্ব্বেষ্ট বলা হইয়াছে, ষোড়শ শতাব্দীতে তিব্বত প্রদেশে কলাপব্যাকরণকে ইন্দ্রব্যাকরণ বলিত । ডাক্তার wtfo cztergrotfetzat (Tolkappiyam)নামক তামিল ব্যাকব কাতন্ত্র-ব্যাক রণ ও কা ত্যায়নের পা, ম্যাকরণের গঠনপ্রণালী ও বিষয়নিৰ্ব্বাচন যে একই-প্রকার, তাহা সুন্দর রূপে প্রদর্শন করিয়াছেন । এই বৈরাকরণত্রয় স্ব স্ব ব্যাকরণের বিষয় ও গঠনপ্রণালী নিৰ্ব্বাচনে পাণিনির অমুসরণ না করিয়া তাহার পূর্ববৰ্ত্তিগণের অমুসয়ণ করিয়াছিলেন । ( কাহার ও কাহারও মতে পালি-ব্যাকরণ-প্রণেতা কাত্যায়ন পাণিনির পূৰ্ব্বে প্রাদুর্ভূত হইয়াছিলেন। ) প্রাতিশাথ্যের পদবিভাগ ও উক্ত ব্যাকরণত্রয়ের পদবি ভাগে অনেক সামঞ্জস্ত পয়িলক্ষিত হয় । সুতরাং ইহারা সকলেই যে ইন্দ্র-ব্যাকরণের অনুসরণ করেন নাই, তাহা কে বলিতে পারে ? অতএব ইন্দ্র

  • আমরা বলিব, ইন্দ্রনামক একজন আদি-বৈয়াকরণ ছিলেন।

ংস্কৃত-ব্যাকরণের ইতিবৃত্ত । ৩৬৩ ব্যাকরণের অনুযায়ী বলিয়াই বোধ হয় বোপদেব ঐ সকল বৈয়াকরণ অথবা শাব্দিকের নাম উল্লেখ করেন নাই । অধ্যাপক মোক্ষমূলর পাণিনির আবির্তাবকাল-সম্বন্ধে যাহা বলেন, তাহার সংক্ষিপ্ত মৰ্ম্ম এইরূপ—খ্ৰীষ্টীয় দ্বাদশ শতাবীতে কাশ্মীরের সোমদেব ভট্ট কথাসরিৎসাগয়-নামক গ্ৰন্স প্রণয়ন করেন। তাহাতে লিখিত আছে, কাত্যায়ন-বররুচি বৎসদেশের রাজধানী কৌশাম্বীনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অতি বুদ্ধিমান ছিলেন ও র্তাহার অসাধারণ স্মরণশক্তি ছিল । তিনি মহর্ষি বর্ষের শিষ্যত্ব স্বীকার করিয়া সমগ্র বেদশাস্ত্রে ব্যুৎপন্ন হষ্টয়া ব্যাকরণসম্বন্ধীয় তর্কযুদ্ধে পাণিনিকে পরাস্ত করেন। পাণিনি মহাদেবের আরাধনা করিয়া তাহার বর লাভে অবশেষে কাত্যায়নকে পরাস্ত,করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন । কাত্যায়ন নিজে পাণিনির ছাত্রত্ন স্বীকার করিয়া তাহার ব্যাকরণ সম্পূর্ণ ও সংশোধন করিয়া দিয়াছিলেন। অবশেষে তিনি পাটলিপুত্রে নৃপতি নন্দের মন্ত্রী হন। নন্দ ষে খৃঃ পূঃ চতুর্থ শতাব্দীতে রাজত্ব করিয়াছিলেন, মোক্ষমূলর তাহ প্রদর্শন করিয়াছেন। সুতরাং কথাসরিৎসাগর হইতে ( যদিও ইহা উপাখ্যানমাত্র ) আমরা জানিতে পারি যে, কাত্যায়ন-বররুচি ও পাণিনি খৃঃ পূঃ চতুর্থ শতাব্দীতে বিদ্যমান ছিলেন । কিন্তু মোক্ষ পাণিনির পূর্বে অনেকেই সেই ব্যাকরণের পদ্ধতি অবলম্বন করিয়া স্ব স্ব ব্যাকরণ রচনা করিতেন ও ইন্দ্রের অনুযায়ী বলিয়া কেহ কেহ তাহাকে ঐক্স ব্যাকরণ নামে অভিহিত করিতেন। আমরা ইতিপূৰ্ব্বে যে সমস্ত প্রমাণ পাইয়াছি, তাহাতে ইত্রের অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায় না।